নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মোতাবেক দেশের ব্যাংকিং সেক্টরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কিছুটা কমেছে। ইতিপূর্বে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। বর্তমানে তা ১ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকায় নেমে এসেছে। ব্যাংকিং সেক্টরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ হ্রাসের এই প্রবণতা অবশ্যই উল্লেখের দাবি রাখে। কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে এটা খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র নয়। কারণ এর সঙ্গে মামলাধীন প্রকল্প সমূহের নিকট পাওনা ঋণ, অবলোপনকৃত ঋণ, পুনঃতফসিলিকৃত ঋণ এবং পুনর্গঠিত ঋণাঙ্ক যোগ করলে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ কোটি টাকা অতিক্রম করে যেতে পারে বলে অনেকেই মনে করেন। মোট খেলাপি ঋণের মধ্যে ৯৪ শতাংশই মন্দ ঋণে পরিণত হয়েছে। অর্থাৎ এই ঋণাঙ্ক আর কখনোই আদায় হবার সম্ভাবনা নেই। ব্যাংক এগুলোকে লোকসান হিসেবে গণ্য করে থাকে। যদিও মন্দ ঋণ আদায়ের জন্য ব্যাংক তার চেষ্টা অব্যাহত রাখে। এদিকে দেশের ৮টি ব্যাংক বর্তমানে প্রভিশন ঘাটতিতে পড়েছে। এই ব্যাংকগুলো প্রয়োজনীয় প্রভিশন সংরক্ষণ করতে পারছে না। ফলে এসব ব্যাংক আমানতকারীদের রাখা অর্থের নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। উল্লেখ্য, ব্যাংক নিজের টাকায় ব্যবসায় করে না। ব্যাংক সাধারণ মানুষের নিকট থেকে তাদের উদ্বৃত্ত অর্থ নির্দিষ্ট হারে সুদ প্রদানের শর্তে গ্রহণ করে। সেই অর্থ উদ্যোক্তা এবং ঋণ গ্রহীতাদের নিকট বিনিয়োগ করে মুনাফা অর্জন করে। সেই মুনাফা থেকে আমানতকারীদের নির্দিষ্ট হারে সুদ প্রদান করে। সাধারণ মানুষের আমানতকৃত অর্থের নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয় সে জন্য ব্যাংক প্রত্যেক শ্রেণির খেলাপি ঋণের বিপরীতে নির্দিষ্ট হারে প্রভিশন সংরক্ষণ করে থাকে। যেমন স্ট্যান্ডার্ড ঋণের ক্ষেত্রে ১ শতাংশ প্রভিশন রাখতে হয়। স্পেশাল মেনশন অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ, সাব-স্ট্যান্ডার্ড ঋণের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ, সন্দেহজনক ঋণের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ এবং মন্দ ঋণের জন্য ১০০ ভাগ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হয়। কোনো ব্যাংক গ্রাহকের আমানত বিনিয়োগ করার পর সেই অর্থ যদি নির্দিষ্ট সময়ে আদায় করতে না পারে তাহলেও যেনো আমানতকারীর অর্থ ফেরত দিতে অসুবিধা না হয় সেই লক্ষ্যেই প্রভিশন সংরক্ষণ করা হয়। কোনো ব্যাংক যদি প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থ হয় তাহলে সেই ব্যাংকের উপর থেকে মানুষের আস্থা কমে যেতে পারে। তাই যেসব ব্যাংক প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে তাদের জরুরি ভিত্তিতে নির্দিষ্ট হারে প্রভিশন সংরক্ষণের নির্দেশনা দেয়া যেতে পারে।
Posted ৮:০৯ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
desharthonity.com | Rina Sristy