নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট
প্রযুক্তি খাতে চলছে কর্মী ছাঁটাইয়ের মচ্ছব—এবার সে তালিকায় নাম লেখাল সুইডেনভিত্তিক টেলিকম যন্ত্রাংশ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান এরিকসন। ব্যয় সংকোচনের অংশ হিসেবে বহুজাতিক এ কোম্পানি সারা বিশ্বে সাড়ে আট হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সিএনএনের সংবাদে বলা হয়েছে, চলতি বছরের শেষ নাগাদ এরিকসন ৮৫ কোটি ৯০ লাখ ডলার ব্যয় কমাতে চায়। তার অংশ হিসেবে এই কর্মী ছাঁটাই করা হবে। সাড়ে আট হাজার কর্মীর মধ্যে সুইডেনেই ছাঁটাই করা হবে ১ হাজার ৪০০ কর্মী।
২০২২ সালের শেষ নাগাদ এরিকসনে কর্মীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৫ হাজার ৫২৯। এর মধ্যে উত্তর আমেরিকাতে ছিল ১১ হাজার ৯৯৪ জন। শুরুতে জানা যায়, ৮ শতাংশ কর্মী ছাঁটাই করতে পারে তারা। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, সাড়ে আট হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। চলতি বছরের প্রথমার্ধেই সিংহভাগ ছাঁটাই হবে। তবে এ প্রক্রিয়া ২০২৪ সাল পর্যন্ত চলতে পারে।
বিশ্বের অন্যান্য প্রযুক্তি কোম্পানির মতো এরিকসনও গত বছর খারাপ করেছে। গত বছর তাদের নিট মুনাফা কমে ১৭ শতাংশ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সারা বিশ্বেই অর্থনীতির ধীরগতি এবং ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির চাপে বিভিন্ন খাতে খরচ কমাতে বাধ্য হচ্ছে এরিকসন।
এরিকসনের মুখপাত্র জেনি হেডেলিন বলেন, ‘অবকাঠামো খাতের খরচ আরও কমাতে চাই আমরা। পাশাপাশি পরিষেবা সরবরাহ, রিয়েল এস্টেট ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতেও কাজ করছি আমরা। এসব বাস্তবায়ন করতে গিয়ে দুঃখজনকভাবে অনেক কর্মীকে বিদায় বলতে হবে। ধারণা করছি, এতে সাড়ে আট হাজার কর্মী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’
এক বিবৃতিতে তাঁরা আরও জানিয়েছেন, কর্মী ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশের নিয়মনীতি মেনে চলা হবে। সে অনুযায়ী বাজারভেদে একেক দেশে একেক পরিমাণ কর্মী কমানো হবে। আর পুরো বিষয়টি করা হবে অত্যন্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে, যথাযথ সম্মান ও পেশাদারি বজায় রেখে। স্থানীয় শ্রম আইন অনুসারে তা বাস্তবায়ন করা হবে। কর্মীরাই সবার আগে এ প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানবেন।
ফাইভজি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের যন্ত্রাংশ নির্মাণে এরিকসনের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ফিনল্যান্ডের নকিয়া ও চীনের হুয়াওয়ে। ছাঁটাইয়ের ঘোষণার পর গত শুক্রবার পর্যন্ত এরিকসনের শেয়ারের দর স্থিতিশীল ছিল।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গত বছর বিশ্বের প্রযুক্তি খাতে দেড় লাখ মানুষের চাকরি গেছে।
ছাঁটাইয়ের কারণ হিসেবে বিশ্লেষকেরা দুটি বিষয় চিহ্নিত করেন। এক. ২০২০ সালে প্রযুক্তি ব্যবহারের চাহিদা বেড়ে গেলে কোম্পানিগুলো বিপুল নিয়োগ দেয়। কিন্তু এখন সশরীর কাজের ধারা আবার চালু হওয়ায় প্রযুক্তির চাহিদা কমেছে। দুই. প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতে পাল্লা দিয়ে বিনিয়োগ করছে। সে জন্য কর্মী ছাঁটাই করে ব্যয় সাশ্রয় করছে তারা।
তবে এরিকসন সফটওয়্যার–নির্ভর প্রযুক্তি কোম্পানি নয়। তারা মূলত যন্ত্রাংশ প্রস্তুত করে। গত বছর মূল্যস্ফীতি ও অর্থনৈতিক শ্লথগতির চাপে সারা বিশ্বেই চাহিদা কমেছে। তার প্রভাবেই মুনাফা কমেছে এরিকসনের।
Posted ১০:৪৪ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
desharthonity.com | Rina Sristy