নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩ | প্রিন্ট
বিগত ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য গত ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাত্র ১৩ দশমিক ৭৩ শতাংশ কোম্পানি আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছে। বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রিটার্ন দাখিলের জন্য আরও সময় চেয়ে এনবিআরে আবেদন করেছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ তথ্য জানিয়েছে। এনবিআরের তথ্য মতে, দেশে এক লাখ ৬৭ হাজার ১৩৫ জন করপোরেট টিআইএনধারীর মধ্যে ২২ হাজার ৯৪৮ জন রিটার্ন জমা দিয়েছেন। আর তাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) করপোরেট আয়কর বাবদ পেয়েছে দুই হাজার ৩৭৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।
রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসের কার্যালয়ের তথ্য মতে, গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট দুই লাখ ৮০ হাজার পাবলিক অ্যান্ড প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি নিবন্ধন পেয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান করদাতা শনাক্তকরণ (টিআইএন) নম্বর ছাড়াই দেশে ব্যবসা করছে।
এনবিআরের কর মনিটরিং অ্যান্ড কো-অর্ডিনেশন বিভাগের এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, গত ১৫ জানুয়ারির মধ্যে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারেনি। এ বছর এনবিআর রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা বাড়ায়নি, তবে করদাতাদের কাছ থেকে সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন পাওয়া যাচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, করপোরেট ট্যাক্স রিটার্ন পরিশোধের নিয়ম নিয়ে কর কর্মকর্তাদের আরও উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত। মোট প্রত্যক্ষ করের প্রায় ১৭ শতাংশ আসে করপোরেট করদাতাদের কাছ থেকে। করপোরেট ট্যাক্স রিটার্ন কমপ্লায়েন্স দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে উদ্বেগজনক।
করপোরেট কোম্পানিগুলো কেন সময়মতো রিটার্ন দাখিল করতে ব্যর্থ হয়েছে, তা নিয়ে এনবিআরের গবেষণা করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
মুহাম্মদ আবদুল মজিদ জাগো নিউজকে বলেন, রাজস্ব বোর্ডকে এগুলো মেনে চলার জন্য বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করতে হবে। রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়া অটোমেশন এবং নিবন্ধিত কোম্পানিগুলোর ফলোআপের পাশাপাশি করপোরেট ট্যাক্স কমপ্লায়েন্সের উচ্চ ব্যয় কমানো জরুরি।
কোম্পানি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করপোরেট করদাতাদের রিটার্ন দাখিলের প্রক্রিয়া আরও সহজ করতে ডিজিটাল ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করা দরকার। বর্তমানে করপোরেট করদাতাদের এক বছরের মধ্যে ২৬ ধরনের নথি জমা দিতে হয়। যা অনেক জটিল এবং সময় সাপেক্ষ।
বর্তমানে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ২০ শতাংশ, তালিকা বহির্ভূত কোম্পানি ২৭ দশমিক ৫০ শতাংশ, তালিকাভুক্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ৩৭ দশমিক ৫০ শতাংশ, তালিকা বহির্ভূত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ৪০ শতাংশ, মার্চেন্ট ব্যাংক ৩৭ দশমিক ৫০ শতাংশ, সিগারেট কোম্পানি ৪৫ শতাংশ, মোবাইল অপারেটর কোম্পানির যথাক্রমে ৪০ শতাংশ ও ৪৫ শতাংশ করপোরেট কর বিদ্যমান আছে।
রাজস্ব বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রায় ২৭ হাজার ২৮৬টি, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রায় ২৭ হাজার ৬৮০টি, ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রায় ২৫ হাজার ২৫০টি, ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রায় ২৯ হাজার ৭৮৫টি এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রায় ৩০ হাজার ১০০টি কোম্পানি আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছে।
Posted ৩:১০ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩
desharthonity.com | Rina Sristy