নিজস্ব প্রতিবেদক | বুধবার, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | প্রিন্ট
দ্রুত ও সহজে টাকা তোলার সুবিধার জন্য আধুনিক ইলেকট্রনিক ব্যাংকিংয়ের সবচেয়ে পরিচিত মাধ্যম ছিলো অটোমেটেড টেলার মেশিন (এটিএম)। ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ, ব্যালেন্স দেখাসহ অন্যান্য ব্যাংকিং সেবার জন্য এক সময় এটিএমের জনপ্রিয়তা ছিলো সবচেয়ে বেশি। এটিএমের পাশাপাশি ২০১০ সালের দিকে ব্যাংকগুলো ক্যাশ ডিপোজিট মেশিন (সিডিএম) অর্থাৎ টাকা জমা দেওয়ার মেশিনও বসানো শুরু করে।
সবশেষে টাকা জমা দেওয়া ও উত্তোলনের সুবিধা দিতে ৭ বছর আগে দেশের ব্যাংকগুলো ক্যাশ রিসাইক্লিং মেশিনের (সিআরএম) দিকে ঝুঁকতে শুরু করে। এই মেশিনের মাধ্যমে গ্রাহকরা টাকা জমা ও তোলার সুবিধা পাচ্ছেন। তাছাড়া টাকা জমা করতে এখন আর ব্যাংকিং সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। রাত-দিন যেকোনো সময়ই লেনদেন করা যাচ্ছে। এতে গ্রাহকের একদিকে সময় বাঁচছে অন্যদিকে ভোগান্তি কমছে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, এটিএমে টাকা শেষ হয়ে গেলে আবার নগদ টাকা রাখতে হয়। এতে জনবল দরকার হয়। সিআরএমে টাকা জমা ও উত্তলনের সুবিধা থাকায় আলাদাভাবে নগদ টাকা রাখার ঝামেলা নেই। এতে পরিচালন ব্যয়ও কমে। তাই ব্যাংকগুলো সিআরএমে বেশি বিনিয়োগ করছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে দেখা গেছে, ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে এটিএম ছিলো ১৩ হাজার ৪৩৪টি। ২০২৩ সালের নভেম্বরে এটিএমের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজাট ৪৩৭টিতে। অর্থাৎ ব্যাংকগুলো এটিএমে আর বিনিয়োগ বাড়ায়নি। শুধু এটিএম নয়, সিডিএমেও বাড়েনি বিনিয়োগ। উল্টো এ খাতে উল্লেখযোগ্য হারে বিনিয়োগ কমেছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে দেশে সিডিএম ছিলো এক হাজার ৯৪টি। ২০২৩ সালের নভেম্বরে এসে সিডিএমের সংখ্যা নেমেছে ২৬০টিতে।
এই সময়ে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সিআরএম। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে সিআরএম ছিলো ২ হাজার ৪৮৯টি। এরমধ্যে শহরে ছিলো এক হাজার ৯৫৯টি আর গ্রামে ৫৩০টি। এক বছর পর ২০২৩ সালের নভেম্বর সিআরএমের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৮৯৭টিতে। এরমধ্যে শহরে ২ হাজার ৮৫৪টি আর গ্রামে এক হাজার ৪৩টি।
সিআরএম স্থাপনে শীর্ষ ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক। বর্তমানে ব্যাংকটির সিআরএম রয়েছে ৮০০টি। প্রতিমাসেই দেশের কোনো না কোনো স্থানে সিআরএম বসাচ্ছে ব্যাংকটি।
জানতে চাইলে ইসলামী ব্যাংকের ব্র্যান্ড অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নজরুল ইসলাম বলেন, ইসলামী ব্যাংক সব সময় সবার আগে গ্রাহক সেবাকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। সিআরএমে যেহেতু টাকা জমা দেওয়ার পাশাপাশি যেকোনো সময় উত্তলনের সুবিধা পাওয়া যায়, এতে গ্রাহকের সময় বাঁচে। তাই আমরাও এ খাতে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি। বেসরকারি একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, গ্রাহকরা একটি জায়গা থেকেই তাৎক্ষণিকভাবে টাকা জমা দিতে বা তুলতে পারেন বলে সিআরএম বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। এছাড়া পরিচালন ব্যয়ও কমে। এ জন্য আমরা এই প্রযুক্তিতে ঝুঁকছি।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও রিটেইল ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান মো. শাফকাত হোসেন বলেন, টাকা জমা দেওয়া ও উত্তোলন উভয় সুবিধা থাকায় সিআরএমের সংখ্যা সামনে আরও বাড়বে।
দেশে ১৯৯২ সালে প্রথম এটিএম বুথ স্থাপন করে এএনজেড গ্রিন্ডলেজ (বর্তমানে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংক। আর ২০১০ সালের দিকে ব্যাংকগুলো সিডিএম বসানো শুরু করে। ২০১৭ সালে এসে শুরু হয় সিআরএম যন্ত্র স্থাপন।
Posted ২:১৫ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
desharthonity.com | Rina Sristy