নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট
একজন করদাতার বার্ষিক আয়, ব্যয় ও সম্পদের তথ্য নির্ধারিত ফরমে উপস্থাপন করার মাধ্যম হচ্ছে আয়কর রিটার্ন। আয়কর আইন অনুযায়ী নভেম্বরের ৩০ তারিখ রিটার্ন দাখিল করার শেষ দিন।
সে হিসাবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের রিটার্ন দাখিল করার সময় আছে মাত্র দুইদিন। তাই করদাতাদের সময় থাকতে রিটার্ন দাখিল করার পরামর্শ দিয়েছেন এনবিআরের আয়কর বিভাগ সংশ্লিষ্টরা। যদিও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ও কর সমিতিসহ বিভিন্ন ফোরাম থেকে সময় বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছে।
সময় বৃদ্ধির আশায় না থেকে শেষ সময়ে করদাতারা কর অফিসগুলোতে রিটার্ন জমা দেওয়ার জন্য এসেছেন। ফলে কর অফিসের সামনে স্থাপিত বিশেষ বুথে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
করদাতাদের সুবিধার্থে নভেম্বরের পুরো মাসজুড়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের ৩১টি কর অঞ্চলের ৬৪৯টি সার্কেলে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত অফিস চলাকালীন সময়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে মেলার পরিবেশে করসেবা দিয়ে যাচ্ছে। যেখানে রয়েছে হেল্প ডেস্ক, রিটার্ন গ্রহণ বুথ, ই-টিআইএন, ই-রিটার্ন ও এ-চালানের আলাদা বুথ।
কর অঞ্চল-৮ এর আওতায় ৮০ হাজারের বেশি করদাতা ই-টিআইএন নিবন্ধন নিয়েছেন। যার মধ্যে প্রায় ৫০ হাজারের মতো ব্যক্তি নিয়মিত রিটার্ন দাখিল করে থাকেন। সর্বশেষ পাওয়া তথ্যানুসারে এখন পর্যন্ত ১৯ হাজার ব্যক্তি আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
জানতে চাইলে কর অঞ্চল-৮ এর কর কমিশনার মোহাম্মদ আবুল মনসুর বলেন, আশা করছি রাষ্ট্রের উন্নয়নে অংশীদার হতে করদাতারা ৩০ নভেম্বরের মধ্যে আয়কর রিটার্ন জমা দেবেন। এরপরেও রিটার্ন জমা দেওয়া গেলেও কর অব্যাহতিসহ বিভিন্ন কর সুবিধা মিলবে না। বরং জরিমানাসহ বাড়তি কর দিতে হবে। আমাদের কর অঞ্চলের এখন রিটার্ন দাখিল ও রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি সন্তোষজনক।
এনবিআরের তথ্যানুযায়ী, দেশে বর্তমানে ৯৫ লাখের বেশি করদাতা ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশন নিলেও এখনো কাঙ্ক্ষিত রিটার্ন দাখিল হয়নি বলে জানা গেছে। গত ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে দেশের ৩১ কর অঞ্চলে প্রায় ৩২ লাখ রিটার্ন দাখিল হয়েছিল। যদিও প্রত্যাশা অনুযায়ী এখনো অনেক পিছিয়ে আছে প্রতিষ্ঠানটি। চলতি বছরে অন্তত ৪০ লাখ রিটার্ন দাখিলের প্রত্যাশা করছে এনবিআর।
এনবিআরের একাধিক কর কমিশনার বলেন,যত সময় যাচ্ছে করদাতাদের চাপ তত বাড়ছে। আশা করছি আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। তবে আমাদের কাছেও সময় বৃদ্ধির বিষয়টি শেয়ার করছেন। এটা এনবিআর সিদ্ধান্ত নিবে, আমাদের কাজ করে যাচ্ছে।
রিটার্ন দাখিলের শেষ সপ্তাহে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে এসেছে বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত শাহজাহান
বলেন, আসলে অফিসে কাজের চাপ ও রাজনৈতিক কর্মসূচির মধ্যে কর অফিসে আসা হয়নি। ভেবেছিলাম সময় বৃদ্ধি করবে। তবে সেই ঘোষণা না পেয়ে ঝুঁকি নেইনি। আজ চলে এলাম জমা দেওয়ার জন্য।
সাধারণত কোনো ব্যক্তি-করদাতার আয় যদি বছরে সাড়ে তিন লাখ টাকার বেশি হয়, তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তি, নারী ও ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সের করদাতার আয় যদি বছরে চার লাখ টাকার বেশি হয়, গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা করদাতার আয় যদি বছরে পাঁচ লাখ টাকার বেশি হয় এবং প্রতিবন্ধী করদাতার আয় সাড়ে চার লাখ ৭৫ হাজার টাকার বেশি হলে তার রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক।
এছাড়া আরও অনেক কারণে ব্যক্তিকে আবশ্যিকভাবে রিটার্ন দাখিল করতে হয়। চলতি অর্থবছর থেকে শুধু রিটার্ন দাখিল করলেই হবে না, বিভিন্ন সরকারি সেবা পেতে হলে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্রও দেখাতে হবে। আয়কর নির্দেশিকা ২০২৩-২০২৪ অনুযায়ী ৪৪ ধরনের সেবায় রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ দেখানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যে কারণে রিটার্ন দাখিলের বিকল্প নেই ই-টিআইএনধারীদের।
Posted ২:৪৭ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৩
desharthonity.com | Rina Sristy