নিজস্ব প্রতিবেদক | বুধবার, ২২ নভেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট
উন্মুক্ত হলো বেসরকারি খাতে রিফাইনারি স্থাপনের পথ। এ লক্ষ্যে নীতিমালা প্রণয়ন করেছে সরকার। এই নীতিমালার আলোকে বেসরকারি পর্যায়ে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি, পরিশোধন ও বিক্রির সুযোগ তৈরি হয়েছে। সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে ‘বেসরকারি পর্যায়ে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানিপূর্বক মজুত, প্রক্রিয়াকরণ, পরিবহন ও বিপণন নীতিমালা-২০২৩ চূড়ান্ত করেছে।
সোমবার (২০ নভেম্বর) এ নীতিমালার গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
পরিবহন, সেচ, কৃষি, বিদ্যুৎ, শিল্প প্রতিষ্ঠান, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এবং গৃহস্থালি খাতে জ্বালানি তেল দেশের কাঙ্ক্ষিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে উল্লেখ করে নীতিমালায় বলা হয়েছে— অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির কারণে জ্বালানি তেলের চাহিদা, ব্যবহার, মজুত সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পাবে। সরকারের রূপকল্প-২০৪১ এবং এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও জিডিপি প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে জ্বালানি তেলের চাহিদাপূরণের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সরকার জি-টু-জি ও টেন্ডার ভিত্তিতে বিভিন্ন দেশ হতে জ্বালানি তেল আমদানিপূর্বক সরবরাহের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।
দেশে ইতোমধ্যে বেসরকারি উদ্যোগে স্থাপিত Catalytic Reforming Unit (CRU), Non-Catalytic Reforming Unit (Non-CRU) ও বিটুমিন প্ল্যান্ট, পেট্রোক্যামিকাল প্ল্যান্টে স্থানীয়/ আমদানি করা কনডেনসেট/ ন্যাফথা/ ক্রুড অয়েল ইত্যাদি ব্যবহার করে পরিশোধিত জ্বালানি তেল উৎপাদন করছে। বেসরকারি পর্যায়ে অধিক সংখ্যক রিফাইনিং প্ল্যান্ট স্থাপিত হলে দেশের রিফাইনিং ক্ষমতা ও জ্বালানি মজুত সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়সহ নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। দেশে পেট্রোলিয়াম পণ্যের স্থানীয় উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, মজুত সক্ষমতা ও সরবরাহ কার্যক্রমে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণকেও উৎসাহিত করা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি, প্রক্রিয়াকরণ এবং বিপণন কার্যক্রমে বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করার জন্য নীতিমালা প্রণয়ন আবশ্যক।
নীতিমালার উদ্দেশ্য হলো— দেশে জ্বালানি তেলের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল প্রক্রিয়াকরণের জন্য রিফাইনারি স্থাপন এবং উৎপাদিত পণ্য বিপণনে সম্পৃক্তকরণ এবং জ্বালানি খাতে দেশীয় সক্ষমতা বৃদ্ধি, যুগোপযোগী প্রযুক্তির ব্যবহার ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি।
বর্তমানে শুধু বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) অপরিশোধিত তেল আমদানি করে। সেই তেল ইস্টার্ন রিফাইনারিতে পরিশোধিত হয়ে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলসহ সরকারি বিপণন কোম্পানির মাধ্যমে সারা দেশে সরবরাহ করা হয়। এর বাইরে সরকারি খাতের তিনটি ও বেসরকারি খাতের ১৩টি রিফাইনারি (কনডেনসেট ফ্র্যাকশনেশন প্ল্যান্ট) পেট্রোবাংলার কাছ থেকে কনডেনসেট গ্রহণের পর প্রক্রিয়াজাত করে পেট্রোল, অকটেন, ডিজেল, সলভেন্ট, মোটর স্প্রিট, কেরোসিন সুপিরিয়র অয়েল, মিনারেল তারপেনটাইনসহ বিভিন্ন পেট্রোলিয়াম পণ্য উৎপাদন করে। এছাড়া বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো শর্তসাপেক্ষে ডিজেল ও ফার্নেস অয়েল আমদানি করতে পারে।
জানা গেছে, সরকারের কাছে ইতোমধ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বেসরকারি খাতে রিফাইনারি স্থাপনে সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে।
Posted ৩:২৯ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২২ নভেম্বর ২০২৩
desharthonity.com | Rina Sristy