নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ০২ মার্চ ২০২৩ | প্রিন্ট
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মচারীকে কারণ দর্শানো ছাড়া যে কোন সময় চাকরি থেকে অপসারণ সংক্রান্ত ৫৪(২) বিধি বলে চাকরিচ্যুতি ক্ষমতা রয়েছে কর্তৃপক্ষের। এই ক্ষমতা বাতিল করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দুদকের করা আপিলের শুনানি শেষ হলেও আদেশ জারি করেনি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তবে এই বিষয়ে আগামী ১৬ মার্চ আদেশ জারির দিন ধার্য করেছেন দেশের সবোর্চ্চ আদালত।
বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ৭ বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত আপিল বিভাগের ফুলবেঞ্চে উক্ত মামলাটির চূড়ান্ত শুনানি গ্রহণ করা হয়েছে। আদালত ১৬ মার্চ রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ করেন। এই রায়ের ওপর নির্ভর করছে বহুল আলোচিত দুদকের উপ পরিচালক আহসান আলী ও উপ সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিনের চাকরিচ্যুতি বিষয়টি। তারা আবার দুদকের কর্মকর্তা হিসেবে বহাল হবেন অথবা কর্তৃপক্ষের চাকরিচ্যূতির আদেশই সঠিক, তা পরিস্কার হয়ে যাবে।
আদালতে শরীফের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. সালাহ উদ্দিন দোলন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মিয়া মোহাম্মদ ইশতিয়াক। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। ২০০৮ সালের দুদক (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালার ৫৪ (২) বিধিতে বলা হয়েছে, ‘এই বিধিমালায় ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ না দর্শাইয়া কোনো কর্মচারীকে ৯০ দিনের নোটিশ দিয়ে অথবা ৯০ দিনের বেতন নগদ পরিশোধ করিয়া তাহাকে চাকরি হইতে অপসারণ করিতে পারবে। ’
পরে সালাহউদ্দিন দোলন বলেন, আত্মপক্ষ সমর্থন ছাড়া এভাবে কর্মচারী অপসারণ সংবিধানের ২৭,২৯,৩১ ও ১৩৫ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন। তাই এটা থাকতে পারে না। হাইকোর্ট এটা বাতিল করেছিলেন। পরে দুদক লিভ টু আপিলের পর আপিল বিভাগ খারিজ করে দিয়েছিলেন। এরপর রিভিউ করে আপিলের সুযোগ পায় দুদক।
২০০৮ সালের দুদক (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালার ৫৪ (২) বিধি অনুসারে মো. আহসান আলী নামে দুদকের এক কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছিল। তিনি ৫৪ (২) বিধির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেছিলেন। সে রিটে হাইকোর্ট ২০১১ সালের ২৭ অক্টোবর এ বিধি বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।
হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে দুদক লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে, যা ২০১৬ সালের নভেম্বরে খারিজ করেন আপিল বিভাগ। এর বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে দুদক পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেন। পরে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর দুদককে আপিল করার অনুমতি দেন। আর এ আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়। পরে দুদক আপিল করে।
এদিকে দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক পদ থেকে চাকরিচ্যুত মো. শরীফ উদ্দিনকে ২০২২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি অপসারণ করলে তিনিও দুদক কর্মচারী বিধিমালার ৫৪ (২) বিধি ও চাকরিচ্যুতির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন। পরে ১১ এপ্রিল তা শুনানির জন্য ওঠে। কিন্তু তখন পর্যন্ত মো. আহসান আলীর মামলায় দুদকের রিভিউ আবেদনের নিষ্পত্তি না হওয়ায় শরীফের রিটের শুনানি মুলতবি করে আদেশ দেন হাইকোর্ট। পরে এ মুলতবি আদেশের বিরুদ্ধে ২০২২ ১৬ জুন আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন শরীফ। পরে গত ৩ জানুয়ারি শরীফের সেই লিভ টু আপিল ও দুদকের আপিল শুনানির জন্য একসঙ্গে আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় উঠে। এরপর একসঙ্গে দুই আবেদনের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার রায়ের জন্য ১৬ মার্চ (বৃহস্পতিবার) দিন ঠিক করেন আপিল বিভাগ।
Posted ২:০০ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০২ মার্চ ২০২৩
desharthonity.com | Rina Sristy