নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট
গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে বেশ কমেছে ডিমের দাম। প্রতিটি ফার্মের মুরগির ডিমের দাম প্রায় এক টাকা কমেছে। অর্থাৎ প্রতি ১০০ ডিম বিক্রি হচ্ছে আগের থেকে ৯০-১০০ টাকা কমে। পাইকারিতে কমলেও খুচরায় দাম কমার কোনো লক্ষণই নেই। ফলে বাড়তি দামেই ডিম খেতে হচ্ছে ভোক্তাদের।
রাজধানীর তেজগাঁও ডিমের পাইকারি আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি ১০০ পিস ফার্মের বাদামি ডিম এক হাজার ৫০ থেকে এক হাজার ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ছিল এক হাজার ১৪০ থেকে এক হাজার ১৬০ টাকা। এছাড়া প্রায় ৩০-৫০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ফার্মের সাদা ডিম।
অর্থাৎ পাইকারিতে বাদামি একটি ফার্মের ডিমের দাম পড়ছে ১০ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৬০ পয়সা। যা খুচরা বাজারে এসে ১২ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে।
সোমবার রামপুরা, হাজীপাড়া ও মালিবাগ এলাকার বাজার এবং পাড়া-মহল্লার দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে ফার্মের মুরগির ডিম। প্রতি হালি ৫০ টাকা। আবার কোনো কোনো দোকানে ৫২ টাকা দরেও বিক্রি করতে দেখা গেছে। আর ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৫৫ টাকা দরে।
পাইকারি বাজারে ডিমের দাম কমলেও খুচরায় কেন কমিয়ে বিক্রি করছেন না- এমন প্রশ্নের জবাবে বিক্রেতারা নানা অজুহাত দেখাচ্ছেন।
হাজিপাড়ার বউবাজারে সবুজ ইসলাম নামের এক ডিম বিক্রেতা বলেন, আড়ত থেকে ১০০ ডিম কিনেছি এক হাজার ৬০ টাকা দরে। তার সঙ্গে ভাঙা ডিম, পরিবহনসহ অন্যান্য খরচ মিলে ১০০ ডিমের দাম গিয়ে দাঁড়ায় এক হাজার ২০০ টাকায়। তার মানে একেকটা ডিমের দাম ১২ টাকা। সে হিসাবে ৪৮ টাকা দাম হয়, তবে ভাঙতির সমস্যায় ৫০ টাকা রাখা হচ্ছে।
খলিল আহমেদ নামের এক বিক্রেতা বলেন, আমরা ডিম পাইকারি বাজার থেকে কিনি না। দোকানে এসে দিয়ে যায়। তারা যেভাবে দাম দেয়, সেভাবেই কিছুটা লাভ ধরে বিক্রি করি।
এদিকে দেড় মাস আগে বাজারে প্রতি পিস ডিমের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১২ টাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। বাস্তবে যা এখনো কার্যকর হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে বাজার নিয়ন্ত্রণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে কয়েক দফায় ১৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেয়। এরমধ্যে রোববার যশোরের বেনাপোল দিয়ে প্রথম দফায় ভারত থেকে ৬১ হাজার ৯৫০ পিস ডিম আমদানি হয়।
ওইদিন সন্ধ্যায় ভারতের পেট্রাপোল বন্দর থেকে ডিমের চালান নিয়ে একটি গাড়ি বন্দরে প্রবেশ করে। পর্যায়ক্রমে এ পথে আরও ডিম আসবে বলে জানান আমদানিকারকের প্রতিনিধিরা। প্রথম দফায় ডিমের আমদানিকারক ঢাকার রামপুরার বিডিএস করপোরেশন। রপ্তানিকারক হলো ভারতের ত্রিপুরার কানুপ নামের একটি প্রতিষ্ঠান।
জানা যায়, বেনাপোল দিয়ে আসা প্রতিটি ডিমের আমদানি মূল্য দেখানো হয়েছে ৫ টাকা ৪৩ পয়সা। এর ওপর সরকারি শুল্ক এক টাকা ৮০ পয়সা। এলসি খরচ, রপ্তানি খরচ, পোর্ট চার্জ, সিঅ্যান্ডএফ চার্জ, পরিবহন খরচ ধরলে ৯ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১০ টাকার মধ্যে থাকবে। এসব ডিম বাজারে বিক্রি হবে ১২ টাকা পিস হিসাবে।
এদিকে এর আগে ২০১২ সালের জুনে ডিমের হালি ৪০ টাকায় উঠেছিল। তখন সরকার কিছু ডিম আমদানি করে। তাতেই দাম কমে যায়। এবারও যথাযথভাবে ডিম আমদানি হলে দাম আরও নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
Posted ১:৫৫ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৩
desharthonity.com | Rina Sristy