নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৩ | প্রিন্ট
টানা পতনের পর মালয়েশিয়ায় পাম ওয়েলের সাপ্তাহিক দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহে ফিউচার মার্কেটে পণ্যটির দাম বেড়েছে ২ দশমিক ৩১ শতাংশ। যদিও সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসেও নিম্নমুখী ছিল পাম অয়েলের দাম। খবর বিজনেস রেকর্ডার।
৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারতের মুম্বাইতে অনুষ্ঠিত বৈশ্বিক ভোজ্যতেল ও কৃষি-বাণিজ্যবিষয়ক ‘গ্লোবঅয়েল সম্মেলনের’ কারণে সপ্তাহিক দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস নিম্নমুখী প্রবণতায় শেষ হয়। এদিন বুরসা মালয়েশিয়া ডেরিভেটিভস এক্সচেঞ্জে ডিসেম্বরে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টনে দাম কমেছে ৫ রিঙ্গিত বা দশমিক ১৩ শতাংশ। টনপ্রতি দর নেমেছে মালয়েশিয়ান মুদ্রায় ৩ হাজার ৭৬৬ রিঙ্গিতে বা ৮০২ ডলার ৩৯ সেন্টে।
একই দিন বন্ধ ছিল চীনের ডালিয়ান কমোডিটি এক্সচেঞ্জের লেনদেন। গত ২৯ সেপ্টেম্বর দেশটিতে মধ্য শরৎ উৎসব ও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী সরকারি ছুটি শুরু হয়েছে। উৎসব উপলক্ষে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত ফিউচার মার্কেটের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। প্রতিদ্বন্দ্বী উদ্ভিজ্জ তেলের দাম কমায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে আন্তর্জাতিক বাজারে পাম অয়েলের দর কমেছে।
তথ্য বলছে, বিশ্বের বৃহত্তম পাম অয়েল উৎপাদনকারী ইন্দোনেশিয়া। জুলাইয়ে দেশটির পরিশোধিতসহ মোট ভোজ্যতেল রফতানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫ লাখ ২০ হাজার টনে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় রফতানি বেড়েছে ২১ দশমিক ৮ শতাংশ।
ইন্দোনেশিয়ায় অক্টোবরে অপরিশোধিত পাম অয়েলের রেফারেন্স মূল্য বাড়ানো হয়েছে ২৮ ডলার ৫৪ সেন্ট। সেপ্টেম্বরের শেষার্ধে (১৫-৩০) দেশটির অপরিশোধিত পাম অয়েলের টনপ্রতি দর ছিল ৭৯৮ ডলার ৮৩ সেন্ট। ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত পণ্যটির রেফারেন্স দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৮২৭ ডলার ৩৭ সেন্ট।
এদিকে পর্যাপ্ত মজুদ নিয়ে ভারত ২০২৩-২৪ মৌসুম শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তথ্য বলছে, দেশটি ২০২২-২৩ বিপণন বছরে ব্যাপক হারে ভোজ্যতেল আমদানি বাড়িয়েছে। জুলাই থেকে অব্যাহতভাবে মজুদ বাড়িয়েছে নয়াদিল্লি। রয়টার্সের তথ্যমতে, দুর্গা পূজা সামনে রেখে ভারতীয় পরিশোধনকারীরা জুলাইয়ে ১২ লাখ ৫ হাজার ও আগস্টে ১৩ লাখ ৭৫ হাজার টন পাম অয়েল আমদানি করে।
পাশাপাশি আগস্টে এক শতাব্দীর মধ্যে রেকর্ড শুষ্ক মৌসুম পার করায় দেশটিতে সয়াবিন ও চীনা বাদামের ফলন কমে গেছে। এ কারণেও রিফাইনারিরা আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আমদানি করে মজুদ বাড়িয়েছেন। তবে আগামী বছর বৈরী আবহাওয়ায় ফসল ক্ষতিগ্রস্ত না হলে অভ্যন্তরীণ তেলবীজ উৎপাদনও বাড়বে। এতে আমদানি চাহিদা কমতে পারে। নভেম্বরে আসন্ন ২০২৩-২৪ বিপণন বছরে দেশটিতে ভোজ্যতেলের আমদানি নিম্নমুখী হওয়ার খবর জানিয়ে সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছে, দেশটিতে ভোজ্যতেল আমদানির পরিমাণ ৬ শতাংশ কমতে পারে। মুম্বাইভিত্তিক উদ্ভিজ্জ তেলের ব্রোকারেজ ও পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান সানভিন গ্রুপের প্রাক্কলন অনুযায়ী, ৩১ অক্টোবর শেষ হতে যাওয়া ২০২২-২৩ বিপণন বছরে ভোজ্যতেল আমদানির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ১ কোটি ৬৬ লাখ টনে। এর মধ্যে এক কোটি টনই পাম অয়েল। বিপুল মজুদের ফলে ২০২৩-২৪ বিপণন বছরে আমদানির পরিমাণ ১০ লাখ টন কমতে পারে।
অন্যদিকে, আবহাওয়ায় এল নিনোর প্রভাবে পাম অয়েলের শীর্ষ উৎপাদক দেশ ইন্দোনেশিয়ায় ফলন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তেলবীজটির উৎপাদন কমে গেলে সরবরাহ ঘাটতিতে পড়তে পারে ভোজ্যতেলের আন্তর্জাতিক বাজার। এতে দাম বাড়ার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। ২০২৪ সালে অপরিশোধিত পাম অয়েলের দাম চলতি বছরের চেয়ে গড়ে ১১ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে।
Posted ১:২৮ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৩
desharthonity.com | munny akter