নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট
মিউচুয়াল ফান্ড খাত ভালো করছে এবং ভবিষ্যতে আরও ভালো করবে এমন মন্তব্য করে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্টের মাধ্যমে জাতীয় স্বার্থে এ খাতের উন্নয়ন এখন সময়ের দাবি।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ‘ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক কনফারেন্স প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বিএসইসি এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ কনফারেন্সটি কক্সবাজারে অবস্থিত সী পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা লিমিটেড হোটেলে অনুষ্ঠানটি হয়।
অধ্যাপক শিবলী বলেন, বর্তমান চ্যালেঞ্জিং সময়ে বিনিয়োগকারীরা বেশি মুনাফা লাভ করতে না পারলেও যেন কোনোভাবেই ক্ষতির সম্মুখীন না হোন তার জন্য কাজ করছে বিএসইসি।
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতির বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের শিল্পায়ন এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবহার হচ্ছে, যা অদূর ভবিষ্যতে আমাদের জন্য সুফল বয়ে আনবে। অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় আগামী ৫ বছর হবে বাংলাদেশের জন্য সোনালি সময়।
তিনি বলেন, মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাত ভালো করছে এবং ভবিষ্যতে আরও ভালো করবে। দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্টের মাধ্যমে জাতীয় স্বার্থে এ খাতের উন্নয়ন এখন সময়ের দাবি। সামনের দিনগুলোতেও বাংলাদেশ উন্নয়নের ধারা ধরে রাখবে বলে আশা করছি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ এবং মো. আবদুল হালিম। এছাড়া বক্তব্য দেন বিএসইসির কমিশনার ড. মিজানুর রহমান, অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিজ অ্যান্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ডের (এএএমসিএমএফ) সভাপতি হাসান ইমাম, ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান মজুমদার প্রমুখ।
বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, মিউচুয়াল ফান্ডকে জনপ্রিয় করতে এ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর সুনাম অর্জন প্রয়োজন এবং এ খাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা দরকার। মিউচুয়াল ফান্ড খাতকে আরও বিকশিত করতে এ খাত সম্পর্কে সবাইকে আরও প্রচার প্রয়োজন।
তিনি বলেন, আধুনিক প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার করে বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনায় ব্যয় সংকোচনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের অধিক রিটার্ন দেওয়ার সুযোগ-সম্ভবনাকে কাজে লাগনো উচিত। মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতকে বিকশিত করতে দেশের পুঁজিবাজারের ইক্যুইটি মার্কেটেরও উন্নয়ন প্রয়োজন এবং তার জন্য দেশের পুঁজিবাজারের ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তি প্রয়োজন।
মো. আবদুল হালিম বলেন, আমাদের জাতীয় অর্থনীতির তুলনায় দেশের পুঁজিবাজার এখনও অনেক পিছিয়ে রয়েছে। আমরা দেশের পুঁজিবাজারকে উন্নত ও স্মার্ট পুঁজিবাজারে পরিণত করতে কাজ করছি।
তিনি অংশীজনদের নিয়ে সম্মিলিতভাবে এ খাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার কথা বলেন। অর্থনৈতিক সব সূচকে বাংলাদেশ শক্ত অবস্থানে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের মিউচুয়াল ফান্ড খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী করতে হবে।
ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, মিউচুয়াল ফান্ডের বিস্তার ঘটানোর মাধ্যমে পুঁজিবাজারকে বিকশিত করার সুযোগ রয়েছে। দেশের বিনিয়োগকারীদের কাছে মিউচুয়াল ফান্ডকে জনপ্রিয় করতে ডিএসই কাজ করছে।
অনুষ্ঠানে মিউচুয়াল ফান্ডের বর্তমান ও ভবিষ্যত নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসইসি’র কমিশনার ড. মিজানুর রহমান। তিনি এশিয়া ও পার্শ্ববর্তী অন্যান্য দেশের সঙ্গে দেশের মিউচুয়াল ফান্ড খাতের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরেন। পাশাপাশি বাংলাদেশে মিউচুয়াল ফান্ড খাতের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেন এবং সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে কিভাবে দেশে এই খাতকে আরও বর্ধিত করা যায় সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিজ অ্যান্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ডের (এএএমসিএমএফ) সভাপতি হাসান ইমাম বলেন, বিশ্বে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৩০০ বছরের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে। অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিরা একই সঙ্গে দেশের পুঁজিবাজারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারী এবং পুঁজিবাজারের সবচেয়ে বৃহৎ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী। তিনি সবাইকে মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতের বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলোর উত্তরণে কাজ করার অনুরোধ জানান।
অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্য দেন বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম। অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশে মিউচুয়াল ফান্ড খাতের ব্যাপ্তি আরও বাড়বে এবং দেশের পুঁজিবাজার ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
Posted ১২:৩৭ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
desharthonity.com | Rina Sristy