সোমবার ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশকে ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত করার স্বপ্ন দেখি: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বৃহস্পতিবার, ২৪ আগস্ট ২০২৩ | প্রিন্ট

বাংলাদেশকে ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত করার স্বপ্ন দেখি: প্রধানমন্ত্রী

দক্ষিণ আফ্রিকার বিনিয়োগকারীদের বিশেষ করে আইসিটি, অবকাঠামো, টেক্সটাইল এবং পর্যটন খাতে ব্যাপক বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, তাঁর স্বপ্ন বাংলাদেশকে একটি ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত করা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার একটি স্বপ্ন আছে, যা বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষেরও স্বপ্ন। আর তা হলো ২০৪১ সালের মধ্যে একটি ট্রিলিয়ন-ডলারের অর্থনীতি এবং একটি সম্পূর্ণ উন্নত স্মার্ট জাতিতে পরিণত করা।’

স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির জন্য দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য নির্ধারণে একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রচেষ্টা শুরু করেছেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

বুধবার দক্ষিণ আফ্রিকার রেডিসন হোটেল অ্যান্ড কনভেনশন সেন্টারে ‘দ্য রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার: ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড বিজনেস সামিট’ শীর্ষক একটি রোড শো’র অনুষ্ঠানে তাঁর বাসস্থান থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করে।

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার আমন্ত্রণে ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাণিজ্য, ব্যবসা ও বিনিয়োগের জন্য আরও বেশি বন্ধুত্বপূর্ণ লক্ষ্য নির্ধারণে বাংলাদেশ তাঁর বাণিজ্যিক পরিস্থিতিকে দৃঢ়তার সঙ্গে শক্তিশালী করে চলেছে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস আমাদের প্রচেষ্টা শুধুমাত্র আমাদের জন্য সুবিধাই দেবে না বরং যারা আমাদের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিতে বিনিয়োগ করতে পছন্দ করে তাদের জন্যও লাভজনক প্রমাণিত হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিনিয়োগের অনেক সম্ভাবনা খুঁজে নিতে তারা বিশ্বব্যাপী বিশেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকার বিনিয়োগকারীদের স্বাগত জানিয়েছেন। কারণ, এটি বাংলাদেশের প্রস্তাবগুলোর সাথে নিজেকে পরিচিত করার উপযুক্ত সময়।

তিনি বলেন, ‘এটিই সময় বাংলাদেশকে আরও ভালোভাবে জানার এবং এর ভবিষ্যতে এখানে বিনিয়োগ করার আমরা আইসিটি, ইলেকট্রনিক্স, অবকাঠামো, টেক্সটাইল, পর্যটন, ভারী শিল্প এবং ছোট শিল্পের মতো খাতগুলোতে নানা সুযোগ সুবিধার প্রস্তাব করেছি। আমাদের সরকার সুন্দরভাবে ব্যবসা পরিচালনার সুযোগ দেয়ার ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

বাংলাদেশ সম্ভাব্য দক্ষিণ আফ্রিকার বিনিয়োগকারীদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ যেমন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন সর্বোত্তম আয়ের জন্য বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সব ধরনের সহযোগিতা দেবে।

‘বাংলাদেশ সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা চাই আপনারা আমাদের উন্নয়ন যাত্রায় অংশ নিন। বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুন; আমরা আস্থাশীল যে আপনাদের বিনিয়োগ সাফল্যের জন্য প্রাধান্য পাবে এবং আমরা একটি টেকসই অংশীদারিত্বের জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত।’

দক্ষিণ আফ্রিকায় উল্লেখযোগ্য বাংলাদেশি নাগরিক একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতিতে অবদান রাখার জন্য প্রবাসীদের ধন্যবাদ। আমরা আপনাকে আমাদের প্রবৃদ্ধিতে আরও বিনিয়োগ করার আহ্বান জানাই।’

বাংলাদেশে বিনিয়োগের যৌক্তিকতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আসলে, আমাদের দেশে আপনার বিনিয়োগ সুরক্ষিত রয়েছে অব্যাহত হাই রিটান্স ইনভেস্টমেন্টের(আরওআই) কারণে। এছাড়া, আমাদের সরকার ব্যবসা-বান্ধব এবং স্থিতিশীল পরিবেশ নিশ্চিত করে যা আপনার বিনিয়োগের সফলতার নিশ্চয়তা দেয়।’

সরকারপ্রধান আরও বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি নিরাপদ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা দেয় এবং বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের রয়েছে সবচেয়ে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ নীতি। এর মধ্যে রয়েছে একটি উদারীকৃত শিল্প নীতি, ওয়ান-স্টপ সার্ভিস, ১০০% বিদেশী মালিকানার ভাতা, একটি সহজ প্রস্থান নীতি, ১৫-বছরের কর ছাড় নীতি, আমদানি করা যন্ত্রপাতির জন্য ভ্যাট ছাড়, সুবিন্যস্ত পরিষেবা এবং আরও অনেক কিছু।

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিতে, আমরা টেকসই দীর্ঘ-মেয়াদী অর্থায়নের জন্য প্রস্তুত আছি। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব, এআই ও ভেঞ্চার ক্যাপিটালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী ‘আর্থিক সংযোগ’ অনুসরণ করছে। বাংলাদেশ ট্রেডিশনাল কাস্টমার ব্যাংকিংয়ের চেয়ে বিনিয়োগ ব্যাংকিংকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।’

বাংলাদেশ কেন ‘লুক আফ্রিকা পলিসি’ গ্রহণ করেছে সে সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, আফ্রিকার জনসংখ্যা ১.৫ বিলিয়ন ছাড়িয়েছে এবং বর্তমানে দ্রুত নগরায়ণ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সম্মুখীন হচ্ছে- যা বাংলাদেশের জন্য, বিশেষত টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাক, ফার্মাসিউটিক্যালস ও কৃষি পণ্যের মতো খাতে রপ্তানি সম্প্রসারনের জন্য অনুকূল সুযোগ প্রদান করছে। গত এক দশকে বাংলাদেশ আফ্রিকার নতুন বাজারের দিকে মনোযোগ দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী নেতা উভয়েই আফ্রিকার অর্থনীতির সম্ভাবনা ও শক্তিশালী বাণিজ্যিক সম্পর্কের সুবিধার কথা স্বীকার করে। আফ্রিকায় ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত শ্রেণি, দ্রুত বর্ধিত জনসংখ্যা ও ভোক্তা চাহিদার কারণে অঞ্চলটি বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির একটি আকর্ষণীয় বাজারে পরিণত হয়েছে।’

তিনি বলেন, একই সঙ্গে বাংলাদেশ সক্রিয়ভাবে আফ্রিকান দেশগুলো থেকে প্রয়োজনীয় প্রাকৃতিক সম্পদ ও কাঁচামাল সংগ্রহের উপায় খুঁজছে। এই অন্বেষণের মধ্যে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান শিল্প, খনিজ, পেট্রোলিয়াম পণ্য, তুলা, কৃষিপণ্য ও আরো অনেক কিছুর জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালও অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।

গত পাঁচ দশকে, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে পারস্পারিক শ্রদ্ধা, অভীন্ন মূল্যবোধ ও বিশ্বাস এবং সংস্কৃতিক বন্ধনের ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে- উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এই বন্ধন ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যিক সংযোগের মাধ্যমে আরো সুদৃঢ় হয়েছে। উভয় দেশই উন্নয়নের একই পথে আছে- যা পারস্পারিক সহযোগিতার মাধ্যমে উন্নয়নকে সম্ভবপর করে তোলে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও গত বছর বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল মাত্র ৩১৬.৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার- যা উভয় দেশের রপ্তানি ও আমদানির পূর্ণ সম্ভাবনার তুলনায় কম। উভয় দেশের জন্য আমদানি-রপ্তানির আরও সম্ভাবনা রয়েছে।

‘আমরা এ ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী যে-উভয় দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায় ও বাণিজ্য সংস্থার সাথে সংশ্লিষ্টদের জন্য পর্যাপ্ত সহযোগিতার সুযোগ বিদ্যমান রয়েছে। বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় প্রক্রিয়ার বাইরে আমরা ‘বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত একটি যৌথ কমিটি’ প্রতিষ্ঠা ও দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে দ্বৈত কর এড়ানোর চুক্তি নিয়ে আলোচনার ব্যাপারে আগ্রহী’—যোগ করেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-এফবিসিসিআই ও দক্ষিণ আফ্রিকার চেম্বারের মধ্যে একটি যৌথ ব্যবসায়িক ফোরামও গঠনেরও বাংলাদেশের পরিকল্পনায় রয়েছে। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যবসায়ীদের সাথে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ এবং বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ ও শিল্প বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমানসহ অন্যান্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে দক্ষিণ আফ্রিকার গণপূর্ত ও অবকাঠামো মন্ত্রী সিহলে জিকালালা বক্তৃতা করেন।

বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) লোকমান হোসেন মিয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বিএসইসির চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) অধ্যাপক শিবলী রুবায়াত-উল-ইসলাম বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ ত্বরান্বিত করার জন্য সরকারের প্রচেষ্টা ও বাংলাদেশের অর্থনীতি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেন।

বাংলাদেশে দক্ষিণ আফ্রিকার বৃহত্তর বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে দেশটির সবচেয়ে বড় নগরী জোহানেসবার্গে এটি হচ্ছে ৭ম রোড শো।

বিডা ও বিএসইসি বাংলাদেশে বৈশ্বিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার পদক্ষেপের অংশ হিসাবে দুবাই, যুক্তরাষ্ট্র, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, কাতার ও জাপানে এই ধরণের রোড শো আয়োজন করে। জার্মানি, কানাডা, রাশিয়া, হংকং, মালয়েশিয়াসহ অন্যান্য দেশেও একই ধরনের রোড শো করার পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ।

শেখ হাসিনা বলেন, এটা অত্যন্ত গর্বের বিষয় যে, চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে এসেও বাংলাদেশ এখন অর্থনৈতিক ও জাতীয় অগ্রগতি উল্লেখযোগ্য সম্প্রসারণের মাধ্যমে স্বতন্ত্র একটি দেশে রূপান্তরিত হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের পাঁচ দশকের অবিচল দৃঢ় সংকল্প, নিরলস প্রচেষ্টা এবং আমাদের নাগরিকদের আপসহীন প্রতিশ্রুতির কারণে সম্ভব হয়েছে। সম্প্রতি, অনেকগুলো বৈশ্বিক গবেষণা, সমীক্ষা ও ব্যাপক বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে, বাংলাদেশের সাফল্যের যাত্রা বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য একটি স্বতন্ত্র উন্নয়নমূলক নজির হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির মধ্যে স্থান করে নিয়েছে। দারিদ্র্য ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো প্রতিকূলতা কাটিয়ে ওঠার পাশাপাশি এর জনগণের দুর্ভোগ লাঘব করার সক্ষমতা প্রদর্শন করছে।

তিনি আরও বলেন, সে কারণেই বাংলাদেশকে প্রায়শই উন্নয়নমূলক বিবরণে প্রবৃদ্ধি, উন্নয়ন ও কল্যাণের উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয় এবং প্রায়শই অদম্য চেতনার মানুষের দেশ হিসাবেও দেখা হয়।

‘গত এক দশকে, বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে ৬ শতাংশ থেকে ৭ শতাংশ পর্যন্ত গড় প্রবৃদ্ধির হার বজায় রেখেছে। সাম্প্রতিক সময়ে মহামারী এবং অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখেও এই স্থিতিস্থাপকতা সুস্পষ্ট রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, ২০২১ সালে বাংলাদেশের একটি ‘স্বল্পোন্নত দেশ’ থেকে ‘উন্নয়নশীল’ দেশে উত্তরণের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি এই অসাধারণ পথচলাকে সুস্পষ্ট করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জনের জন্য আমাদের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি, একটি অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পথ তৈরিতে আমাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাণিজ্য ও শিল্পায়নের সুবিধার্থে বাংলাদেশ সারাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, ১০৯টি হাই-টেক অ্যান্ড সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক এবং আইটি প্রশিক্ষণ ও ইনকিউবেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করছে।

সম্প্রতি পদ্মা সেতু এবং মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের উদ্বোধন বহিঃসংযোগ ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য উভয় ক্ষেত্রকে আরও প্রসারিত করবে এবং তা প্রবৃদ্ধির অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দৃঢ় ও শক্তিশালী বেসরকারি খাত ভবিষ্যতে যারা আমাদের অর্থনীতিতে বিনিয়োগ করবে তাদের জন্য প্রচুর সুযোগ প্রদান করবে। আমরা আত্মবিশ্বাসী যে, আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের পথে সম্পূর্ণ গতিতে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের শক্তির কেন্দ্রবিন্দু বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে নিহিত রয়েছে। প্রয়োজনীয় দক্ষতা সম্পন্ন আমাদের প্রায় ৫৫ মিলিয়ন তরুণ-তরুণী ভবিষ্যতে আমাদের প্রয়োজনীয় কাজগুলো সম্পন্ন করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে সংযোগের মাধ্যমে আমাদেরকে সৌভাগ্যের অবস্থানে উন্নীত করেছে। উপরন্তু, একটি ক্রমবর্ধমান অভ্যন্তরীণ বাজার এবং একটি সম্প্রসারিত ভোক্তা শ্রেণী এই জনসংখ্যাগত সুবিধাকে আরও শক্তিশালী করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) প্রয়োজনীয় দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের জন্য তার পুঁজিবাজারকে উন্নত করছে।

তিনি বলেন, ২০২০ সালে, দেশের স্টক মার্কেট আঞ্চলিক মার্কেটগুলোকে ছাড়িয়ে গেছে। বর্তমানে বাজার মূলধন প্রায় ৬১ বিলিয়ন ডলার যা জিডিপির ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ।

তিনি বলেন, ‘আর্থিক অগ্রগতির জন্য, আমরা আমাদের বন্ড মার্কেটকে প্রসারিত করেছি। বিনিয়োগের সুযোগ বৈচিত্রময় করতে আমরা সুকুক, গ্রিন বন্ড, ইটিএফ, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল, প্রাইভেট ইক্যুইটি এবং ইমপ্যাক্ট ফান্ড প্রবর্তন করেছি। শিগগিরই, আমরা আমাদের পুঁজিবাজারে ডেরিভেটিভ পণ্য অন্তর্ভুক্ত করতে যাচ্ছি, যা বেড়াজালের মাধ্যমে বিনিয়োগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১:০৭ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৪ আগস্ট ২০২৩

desharthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

ক্যালেন্ডার

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭৩০
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
গোলাম ফারুক
Contact

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।

Phone: 01759881611

E-mail: editor@desharthonity.com