নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ১২ আগস্ট ২০২৩ | প্রিন্ট
পানির অভাবে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন মেহেরপুরের কৃষকরা। আষাঢ় পেরিয়ে শ্রাবণ মাসের শুরুতেও জেলায় কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টিপাতের দেখা নেই।
কিছু সময় হালকা বৃষ্টি হলেও তা পাট জাগ দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত নয়। আর সে কারণেই জেলার অধিকাংশ খাল-বিল, ডোবা এবং জলাশয়ে তেমন কোনো পানি নেই। আবার ভৈরব নদে পানি থাকলেও সেখানে পাট জাগ দেওয়ার অনুমতি নেই কৃষকদের।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার সদর, গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২১ হাজার ৫৭৪ হেক্টর জমিতে। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে চাষ হয়েছে ২২ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে। এ বছর পাটের ফলনও আশানুরূপ হওয়ার আশায় বুক বেঁধেছেন কৃষকরা। কিন্তু আশানুরূপ বৃষ্টিপাত না হওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন তারা।
চাষিদের অনেকেই বৃষ্টিপাতের আশায় পাট কেটে জমির পাশে, কেউবা রাস্তার পাশে অথবা খাল-বিল বা ডোবার পাশে স্তূপ করে রেখে দিয়েছেন। এদের মধ্যে অনেকে আবার খাল-বিল বা জলাশয়ের অল্প পানিতেই পাট পচানোর চেষ্টা করছেন। তবে অধিকাংশ চাষিকেই ডোবা কিংবা জলাশয়ে পাট জাগ দিয়ে পচানোর জন্য শ্যালোইঞ্জিনের দিয়ে পানি দিতে দেখা গেছে।
জেলার আলমপুর গ্রামের নজরুল ইসলাম জানান, ৩ বিঘা জমিতে পাট রয়েছে। অন্য কোথাও পানির কোনো ব্যবস্থা নেই। যেখানে জাগ দেওয়া হয় সে জায়গাতে পানি না থাকায় অন্য আবাদের জন্য চাষ করা হয়েছে। পাট নিয়ে মহা মুশকিলে রয়েছি আমরা।
গাংনী উপজেলার শিশিরপাড়া গ্রামের পাটচাষি মহিদুল ইসলাম, ও রমজান আলী বলেন, আড়াই বিঘা করে পাট চাষ করেছি। পানি না পেয়ে জমির পাট কেটে জমির পাশেই স্তুপ করে রেখে দিয়েছি। আশপাশের ডোবা-নালাতে পানি না থাকায় জাগ দিতে পারছি না। অন্যান্যবার পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি থাকায় ক্ষেতের পাশে রাস্তার ধারেই পাট জাগ দিতাম। কিন্তু এবছর বৃষ্টিপাত না থাকায় শিশিরপাড়া মাঠে আবাদকৃত প্রায় সব কৃষকই পাট নিয়ে বিপদে রয়েছেন।
আমঝুপির বানে মণ্ডল জানান, পাট জাগ দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা করতে না পেরে জমি থেকে এখনও পাট কাটতে পারিনি। আবার জমিতে অন্য ফসল আবাদের সময় পেরিয়ে যাচ্ছে।
গাংনী উপজেলার বাওট গ্রামের কৃষক মিনাল হোসেন বলেন, মাঠে পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় কর্তনও হয়েছে, কিন্তু পানির অভাবে পচাতে পারছি না। এখন দুশ্চিন্তা বাড়ছে।
মুজিবনগর উপজেলার আনন্দবাস গ্রামের কৃষক সাফাতুল্লাহ ও রহমত আলী বলেন, খাল-বিল-পুকুর এমনকি জলাশয় কোথাও পানি নেই। মাঠ এখন শুকনো, তাই পাট কাটতে পারছি না।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শঙ্কর কুমার মজুমদার বলেন, যেহেতু বৃষ্টিপাত নেই। অনেকেই শ্যালোইঞ্জিন কিংবা মটরের দ্বারা ডোবা,পুকুরে পানি জমিয়ে পাট জাগ দিচ্ছেন। সে হিসেবে রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট জাগ দেওয়া হলে অল্প জায়গায় বেশি পাট জাগ দেওয়া সম্ভব।
Posted ২:১২ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১২ আগস্ট ২০২৩
desharthonity.com | Rina Sristy