নিজস্ব প্রতিবেদক | বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩ | প্রিন্ট
পার্শ্ববর্তী দেশ ভুটানের সঙ্গে ট্রানজিট চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ। রাজধানী থিম্পুতে এ চুক্তি সই হয়েছে। বুধবার (২২ মার্চ) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, এই চুক্তির ফলে উভয় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য আরও সহজতর হবে। সর্বশেষ মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভুটানের সঙ্গে ট্রানজিট চুক্তির অনুমোদন দিয়েছিল বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, ভুটানের সঙ্গে ট্রানজিট চুক্তির বিষয়টি কেবিনেট বৈঠকে চূড়ান্ত হয়। এছাড়া, ভুটানের আমাদের কাছে নদীপথের বিষয়ে দুটি প্রস্তাব ছিল সেটিও আমরা ওকে করে দিয়েছি। ভুটানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুবই ভালো। ভুটান ছোট দেশ হলেও আমাদের নিয়ে তারা সবসময়ই পজিটিভ।
দু’দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম আরও জোরদারের তাগিদ দিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) এবং ভারত চেম্বার অব কমার্স (বিসিসি)।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) এফবিসিসিআই কার্যালয়ে বিসিসি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এ বিষয়ে আলোকপাত করেন দুই প্রতিষ্ঠানের নেতারা।
বৈঠকে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, উত্তর আমেরিকা এবং আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোসহ অন্যান্য জোটগুলো আঞ্চলিক বাণিজ্য শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটিয়েছে। সেখানে সার্কভুক্ত দেশগুলো এখনো বেশ পিছিয়ে রয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে জিটুজি (গভার্নমেন্ট টু গভার্নমেন্ট) সম্পর্ক অনেক দূর অগ্রসর হয়েছে। আমাদের এখন বিটুবি (বিজনেস টু বিজনেস) কার্যক্রম আরও এগিয়ে নিতে হবে।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, পদ্মা সেতু রেলসংযোগ এবং বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর মাধ্যমে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত হবে। এ সুযোগ কাজে লাগাতে ভারতের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, আধুনিকায়ন এবং যান্ত্রিকীকরণে জোর দিয়েছে। ভারত বিশ্বের অন্যতম একটি কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদনকারী দেশ। বাংলাদেশের বাজার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ভারতের কৃষি যন্ত্রাংশ উৎপাদনকারীরা এদেশে কারখানা স্থাপন করতে পারেন।
এসময় বাংলাদেশের প্রশংসা করে ভারত চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট এন জি খইতান বলেন, ভারত বাংলাদেশ সবসময়ে বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র, গত দশ বছরে বাংলাদেশের উন্নয়ন চোখে পড়ার মতো, ভারতীয় বিনিয়োগকারীরা সবসময়েই বাংলাদেশের এ উন্নয়নের সহযোগী হতে আগ্রহী।
তিনি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের অর্থনীতির মূলশক্তি হলো গ্রামীণ অর্থনীতি। প্রতিবেশী দেশ দুটির ভোক্তাবাজার, অর্থনীতি এবং সংস্কৃতিতে যখন এতো মিল রয়েছে, তখন আমাদের উচিত নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও জোরদার করা।
বৈঠকে এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি এম এ মোমেন, মো. আমিন হেলালী, পরিচালক প্রীতি চক্রবর্তী, এফবিসিসিআই পরিচালক এবং বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী, ভারত চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নরেশ পাচিশিয়া, ভাইস প্রেসিডেন্ট রাজকুমার আগারওয়ালসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সৌজন্য সাক্ষাতের পর ভারত চেম্বার অব কমার্সের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বিটুবি মিটিংয়ের আয়োজন করে এফবিসিসিআই। যেখানে অংশ নেন উভয় দেশের বস্ত্র, ওষুধ, চামড়া, পাট, প্লাস্টিক ও প্যাকেজিং, ফার্মাসিউটিক্যাল, লেদার, সিমেন্ট, ইস্পাত, সিরামিক, কয়লা, জ্বালানি, কাগজ, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং রেল যন্ত্রাংশ শিল্পের ব্যবসায়ীরা।
বৈঠকে দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক সহজ করতে ব্যবসায়ীদের নিজ নিজ দেশের সরকারের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী। বিটুবি মিটিংয়ের মাধ্যমে দু’দেশের বাণিজ্য নতুন মাত্রায় পৌঁছাবে বলে আশাবাদী এফবিসিসিআই এবং বিসিসি।
Posted ৪:২২ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩
desharthonity.com | Rina Sristy