সোমবার ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   সোমবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে একাধিকবার শুল্কমুক্ত বাণিজ্যের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে তা আর বাস্তবায়ন হতে দেখা যায়নি। দেশগুলোর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় পরিকল্পনার চেয়ে প্রয়োজন বহুপক্ষীয় পরিকল্পনা। সমন্বিত পদক্ষেপ ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর উন্নয়ন সম্ভব নয়। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত দুই দিনব্যাপী ১৪তম সাউথ এশিয়া ইকোনমিক সামিটের সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।

বক্তারা বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সমন্বিত উদ্যোগ থাকলে শ্রীলংকার এমন অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হতো না। আঞ্চলিক উন্নয়ন ও আন্তঃদেশীয় বাণিজ্যের উন্নয়ন না হওয়ার পেছনে অন্যতম প্রধার কারণ ভৌগোলিক রাজনীতি, আঞ্চলিক যোগাযোগের জন্য তহবিল না থাকা, দেশগুলোর পরিকল্পনার অভাব, অবকাঠামোগত উন্নয়ন না হওয়া। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য বিনিয়োগ ও পারস্পরিক সহযোগিতা প্রয়োজন।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান। এ সময় তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আস্থাহীনতা, সমন্বয়হীনতা ও পরিকল্পনার অভাবে অনেক সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এর জন্য আঞ্চলিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এসব সমস্যা দূর করার জন্য সার্কের কার্যকারিতা বাড়াতে হবে। এছাড়া অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো শক্তিশালী করতে হবে।’

রেহমান সোবহান বলেন, ‘বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান, আফগানিস্তান অর্থাৎ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি হলে বাণিজ্য সম্প্রসারণ হবে। এক্ষেত্রে এক দেশের সঙ্গে আরেক দেশের রেলওয়ের সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠার কথা থাকলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। দেশগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। প্রয়োজন হলে সুশীল সমাজকে এসব কাজে যুক্ত করতে হবে। দেশগুলোর অর্থনীতিবিদ ও নীতিনির্ধারকদের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।’

সমাপনী অনুষ্ঠানে দুদিনের সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। এ সময় তিনি বলেন, ‘সম্মেলনের সামগ্রিক ফোকাস হলো কীভাবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পরিবর্তন ও চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক অংশীদারত্ব ও সহযোগিতাকে এগিয়ে নেয়া যায়। সামিটে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে একটি সম্প্রদায় গড়ে তোলার জন্য কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। প্যানেল আলোচনায় মূলত দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়ন, সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি উচ্চপ্রবৃদ্ধি, উন্নয়নে সুশীল সমাজের ভূমিকা, আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য, দ্বিপক্ষীয় চুক্তির বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘দারিদ্র্য এ অঞ্চলের অনিরাপদ অভিবাসনের প্রধান কারণ। এ অঞ্চলে মানব পাচারও একটি প্রধান উদ্বেগের বিষয়। এর সমাধান করা প্রয়োজন। এসব দেশ থেকে প্রচুর পরিমাণে আঞ্চলিক অভিবাসন ঘটছে যার কোনো সরকারি হিসাব নেই। তবে নীতিনির্ধারকরা শ্রমবাজার অভিবাসনের বিষয়টিতে যথেষ্ট মনোযোগ দেন না।’

এ সময় সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দারুণ অর্থনৈতিক সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এর জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন, পারস্পরিক সহযোগিতা, উন্নত যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়ন প্রয়োজন। এসব কিছু যদি করা যায়, তাহলে দক্ষিণ এশিয়ার মোট দেশজ উৎপাদন ৮ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব।’ তবে এজন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

Facebook Comments Box
বিষয় :
advertisement

Posted ১:৫০ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৩

desharthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

ক্যালেন্ডার

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭৩০
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
গোলাম ফারুক
Contact

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।

Phone: 01759881611

E-mail: editor@desharthonity.com