নিজস্ব প্রতিবেদক | বুধবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৩ | প্রিন্ট
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর প্রতিশ্রুত সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণের বিপরীতে বাংলাদেশকে যেসব শর্ত দিয়েছিল সেগুলো থেকে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংশোধন করতে সম্মত হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এর মধ্যে রিজার্ভ অর্জন এবং রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অন্যতম।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) মিশন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক সভায় অংশ নেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। সভায় দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে কর্মকর্তারা বিষয়গুলো তুলে ধরলে আইএমএফ মিশন কিছু কিছু ক্ষেত্রে ছাড়া দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে সূত্র জানায়।
ঢাকায় সফররত আইএমএফ মিশনের সঙ্গে আলোচনায় সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঋণদাতা সংস্থাটি বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৬.৭ বিলিয়ন ডলার কমিয়ে ২০২৪ সালের জুন নাগাদ ২০.১৯ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ গঠনের নতুন লক্ষ্যমাত্রা দিতে পারে।
পোশাক রপ্তানিকারক বাংলাদেশ যখন পশ্চিমা দেশগুলোয় চাহিদা কমে যাওয়ার সম্মুখীন; মূল্যস্ফীতি ও সার, জ্বালানি ও শিল্প কাঁচামাল আমদানির উচ্চ ব্যয় যখন অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে তার মধ্যেই আইএমএফের সঙ্গে আলোচনায় এ অগ্রগতি হয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জের কারণে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেছে, এছাড়াও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে বাংলাদেশি টাকার ৩৫ শতাংশ অবমূল্যায়ন ঘটেছে।
সভায় আইএমএফ মিশন চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশ সরকারকে রাজস্ব আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিল, সেটিও কমাতে রাজি হয়েছে। তবে সরকারের প্রাইমারি ব্যালেন্স বাড়ানোর কথা বলেছে আইএমএফ।
চলতি বছরের শুরুতে আইএমএফ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ২৫.৩৪ বিলিয়ন ডলারের নিট বা প্রকৃত বৈদেশিক রিজার্ভ গঠনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিল। কিন্তু, আইএমএফের রিজার্ভ হিসাব করার পদ্ধতির ষষ্ঠ সংস্করণ বিপিএম৬ অনুযায়ী, বর্তমানে রিজার্ভের পরিমাণ ২১.১৫ বিলিয়ন ডলার। নিট হিসাব করলে এই পরিমাণ আরও কমে ১৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
সূত্র জানায়, আগামী বছরের জুন নাগাদ বৈদেশিক মুদ্রার মজুত ২৬.৮১ বিলিয়ন ডলার রাখার শর্ত দিয়েছিলো আইএমএফ। আগের লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করে তা থেকে কমিয়ে জুন নাগাদ তা ২০.১৯ বিলিয়ন ডলার করার বিষয়ে রাজি হয়েছে আইএমএফ। এই সংশোধন বাংলাদেশের জন্য বড় স্বস্তি হিসেবে বিবেচনা করছে সরকার।
মঙ্গলবার মিশনের সঙ্গে সভার আগে অর্থ সচিব ড. খায়রুজ্জামান মজুমদার যেসব মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাকে আইএমএফের শর্ত পরিপালন করতে হচ্ছে তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সভা করেন। সেখানে আগামী জুনের মধ্যে সংস্থাগুলো তাদের সংশ্লিষ্ট টার্গেট কতটা অর্জন করতে পারবে, তা জানতে চান তিনি। সংস্থাগুলোর মতামত নিয়ে দুপুরে আইএমএফ মিশনের সঙ্গে সভায় অংশ নেন অর্থ সচিব। সেখানে রিজার্ভ, রাজস্ব আয় ও সরকারের প্রাইমারি ব্যালেন্স নিয়ে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আইএমএফ মিশনের সঙ্গে সভায় অংশ নেওয়া বাংলাদেশি কর্মকর্তারা তাদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন যে, জরুরি আমদানির ব্যয়, বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ, বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি এবং রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বিবেচনায় আগামী বছরের জুন নাগাদ বৈদেশিক মুদ্রা মজুতের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে এটি কমাতে সম্মতি হয়েছে আইএমএফ।
Posted ১২:০৫ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৩
desharthonity.com | Rina Sristy