নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ১০ অক্টোবর ২০২৩ | প্রিন্ট
ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর স্বর্ণের দাম বাড়তে শুরু করেছে। সংঘর্ষ মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় নিরাপদ বিনিয়োগ মাধ্যম হিসেবে স্বর্ণকে বেছে নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এতে চাহিদা বাড়ায় ঊর্ধ্বমুখী ধাতুটির বাজারদর। গতকাল আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম ১ শতাংশেরও বেশি বেড়ে গেছে। খবর রয়টার্স।
৭ অক্টোবর আকস্মিক হামাস-ইসরায়েল সংঘাতের সূত্রপাত হয়। এ ঘটনায় জ্বালানি তেল উত্তোলনকারী মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী একটি যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অনিশ্চয়তার মধ্যে বিনিয়োগকারীরা স্বর্ণ কেনায় ঝুঁকছেন। স্পর্ট মার্কেটে গতকাল স্বর্ণের দাম ১ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি আউন্সের দাম দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮৪৯ ডলার ৯০ সেন্টে। এক সপ্তাহের মধ্যে এটিই ধাতুটির সর্বোচ্চ দাম। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রেও ফিউচার মার্কেটে স্বর্ণের দাম ১ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে গেছে। দাম উঠেছে ১ হাজার ৮৬৪ ডলার ৫০ সেন্টে।
সিটি ইনডেক্সের সিনিয়র বিশ্লেষক ম্যাট সিম্পসন বলেন, ‘ভূরাজনৈতিক জটিলতার মধ্যে স্বর্ণ তার “সেফ হ্যাভেন’’ স্ট্যাটাস ফিরে পেয়েছে। সংঘাত শুরু হওয়ার আগেও ধাতুটির বাজার নিম্নমুখী ছিল। আমাদের মনে হচ্ছে, দাম ১ হাজার ৮৮০ ডলারে ওঠার সম্ভাবনা আছে। আর যদি মার্কিন ট্রেজারি বন্ডে সুদহার কমে আসে, তাহলে যেকোনো সময় স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৯০০ ডলারে উঠে রেকর্ড ভাঙতে পারে।’
যুদ্ধ কিংবা অর্থনৈতিক অস্থিরতার সময় ব্যাংক সুদহার দ্রুত ওঠানামা করার ঝুঁকি থাকে। অন্যান্য ব্যবসায়ও অনিশ্চয়তা ভর করে। এমন পরিস্থিতিতে স্বর্ণে নিরাপদ বিনিয়োগ করতে আগ্রহী ওয়ে ওঠে মানুষ। স্বর্ণের দাম ব্যাপক হারে পরিবর্তনশীল না হওয়ায় সংকটকালে বিশ্বজুড়ে মূল্যবান এ ধাতুটিকে বিনিয়োগের নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে মনে করা হয়।
এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, ক্রমবর্ধমান সহিংসতা নতুন রূপ ধারণ করে মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এতে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাবে। একই সঙ্গে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণ, ট্রেজারি বন্ড, ডলার, জাপানিজ ইয়েনের চাহিদা বেড়ে যাবে।
তবে স্বর্ণের দাম বৃদ্ধির লাগাম কিছুটা টেনে ধরছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক তথ্য। মূল্যস্ফীতি হার এখনো প্রত্যাশিত ২-এর ঘরে নামেনি। এমন তথ্য ইঙ্গিত দিচ্ছে, শিগগিরই ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক উচ্চ সুদহার কমাবে না। বাজারে এমন দৃষ্টিভঙ্গি চাউর থাকায় ডলারের বিনিময় হার বেড়েই চলেছে। উচ্চ সুদহারের কারণে বন্ডে বিনিয়োগ বাড়ায় স্বর্ণের চাহিদা মন্থর।
গত সপ্তাহের তথ্য বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থান হার আট মাসের মধ্যে সর্বোচ্চে, যা শক্তিশালী শ্রমবাজারকে নির্দেশ করছে। এ সপ্তাহে মূল্যস্ফীতি বেড়ে গেলে তা চলতি বছর আরো এক দফা সুদহার বাড়ানোর পথ প্রস্তুত করতে পারে। সুদহার আরো বাড়লে ডলার বাদে ভিন্ন মুদ্রার গ্রাহকদের স্বর্ণ ক্রয় খরচ বেড়ে যাবে, যা ধাতুটির চাহিদা কমিয়ে দেবে।
এদিকে স্পট মার্কেটে অন্যান্য ধাতুর মধ্যে রুপার দাম দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। আউন্সপ্রতি দাম উঠেছে ২১ ডলার ৭৫ সেন্টে। প্লাটিনামের দাম দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৮২ ডলার ১২ সেন্টে। তবে প্যালাডিয়ামের দাম দশমিক ৩ শতাংশ কমে গেছে। দর নেমেছে ১ হাজার ১৫৪ ডলার ৪৯ সেন্টে।
Posted ১:৪৪ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১০ অক্টোবর ২০২৩
desharthonity.com | munny akter