নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৩ | প্রিন্ট
তৃতীয় দফায় আরও ৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় ডিমের সরবরাহ বৃদ্ধি ও বাজারদর স্থিতিশীল রাখতে পাঁচ প্রতিষ্ঠানকে ১ কোটি করে মোট ৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। গতকাল রোববার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা হায়দার আলী এ তথ্য জানান। এ নিয়ে মোট ১৫ প্রতিষ্ঠানকে ১৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হলো। যদিও প্রথম দু’দফা অনুমতি দেওয়া ১০ কোটি ডিম আমদানির একটিও এখন পর্যন্ত দেশে আসেনি।
আমদানিকারকরা বলেছেন, ইতোমধ্যে এলসি খোলা হয়েছে। চলতি সপ্তাহে ডিম আসতে পারে। আমদানির পরিমাণ কম হলেও বাজারে কিছুটা প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।
তৃতীয় দফায় গতকাল ১ কোটি করে ডিম আমদানির অনুমতি পেয়েছে ইউনিয়ন ভেনচার লিমিটেড, জে এফ জে প্যারাডাইস কানেকশন, লায়েক এন্টারপ্রাইজ, লাকি এন্টারপ্রাইজ ও পিংকি ট্রেডার্স।
গত আগস্টে ডিমের দাম বেড়ে রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছে যায়। প্রতি ডজন ফার্মের ডিমের দর ওঠে ১৭০ টাকায়। এরপর গত ১৪ সেপ্টেম্বর প্রতিটি ডিমের খুচরা দর ১২ টাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। তারপর গত ১৮ সেপ্টেম্বর সরকার প্রথমবারের মতো চারটি প্রতিষ্ঠানকে ৪ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেয়। দ্বিতীয় দফায় ২১ সেপ্টেম্বর ৬টি প্রতিষ্ঠানকে ৬ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। গতকাল তৃতীয় দফায় নতুন করে আরও ৫ প্রতিষ্ঠানকে ৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশে প্রতিদিন ৪ কোটি ডিমের প্রয়োজন হয়। সেই হিসাবে ১৫ কোটি ডিম দিয়ে ৪ দিনের মতো চলতে পারে।
এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেওয়া দর ২৪ দিনেও কার্যকর হয়নি। ঢাকার খুচরা বাজারে এখনও প্রতিটি ডিম ১২ টাকা ৫০ পয়সায় বিক্রি হচ্ছে।
প্রথম দফায় অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠান টাইগার ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী সাইফুর রহমান বলেন, এলসি খোলার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। এখন ভারতীয় ব্যবসায়ীদের ডিম পাঠানোর ওপর নির্ভর করছে কখন তা দেশে আসবে। তবে চলতি সপ্তাহে না হলেও আগামী সপ্তাহে ভারতীয় ডিম দেশে আসতে পারে।
পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলেন, আমদানি করা ডিম দেশের বাজারে ঢুকলে দাম কিছুটা কমতে পারে।
তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি আমানত উল্লাহ বলেন, ‘শুধু শুনি ৫ কোটি, ১০ কোটি ডিম আমদানি হচ্ছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বাজারে আমদানি করা ডিমের চেহারা দেখা যায়নি। প্রতিদিনই চাহিদা বাড়ছে ডিমের। কিন্তু এই ১০-১৫ কোটি ডিম দিয়ে তো চাহিদা মিটবে না। তারপরও সংখ্যা যাই হোক আমদানি হলে কিছুটা প্রভাব পড়বে বাজারে।
তিনি বলেন, গতকাল ঢাকার কাপ্তান বাজার, বাড্ডা, মিরপুর, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে প্রতি পিস ডিম পাইকারিতে ১২ টাকা ৫০ পয়সায় বিক্রি হয়েছে। শুধু তেজগাঁওয়ে বিক্রি হয়েছে ১১ টাকা ৫০ পয়সা করে। সরকারকে সম্মান করতে গিয়ে তেজগাঁওয়ের ব্যবসায়ীরা লোকসান দিচ্ছেন।
এদিকে ডিম আমদানি করার ক্ষেত্রে পাঁচটি শর্ত নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। সেগুলো হলো– এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ডফ্লুমুক্ত দেশ হতে ডিম আমদানি করতে হবে; আমদানি করা ডিমের প্রতিটি চালানের জন্য রপ্তানিকারক দেশের সরকারের মাধ্যমে নির্ধারিত কিংবা ক্ষমতাপ্রাপ্ত উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত এভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ডফ্লুর ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ামুক্ত সনদ দাখিল করতে হবে; সরকার নির্ধারিত শুল্ক বা কর পরিশোধ করতে হবে; নিষিদ্ধ পণ্য আমদানি করা যাবে না এবং সরকারের অন্যান্য বিধিবিধান মেনে চলতে হবে।
Posted ২:২০ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৩
desharthonity.com | munny akter