মঙ্গলবার ২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিদেশি বিনিয়োগ ছাড়া উন্নত রাষ্ট্র হওয়া সম্ভব নয়: বিএসইসি চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   মঙ্গলবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৩ | প্রিন্ট

বিদেশি বিনিয়োগ ছাড়া উন্নত রাষ্ট্র হওয়া সম্ভব নয়: বিএসইসি চেয়ারম্যান

বিদেশি বিনিয়োগ ছাড়া বাংলাদেশের ২০৪১ সালে উন্নত রাষ্ট্র হওয়া সম্ভব নয় জানিয়ে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য এখন বিনিয়োগ সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। সোমবার (২ অক্টোবর) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মাল্টিপারপাস হলে অনুষ্ঠিত বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বিনিয়োগ এখন বাংলাদেশের জন্য খুবই জরুরি। আমাদের দেশে এখন বিনিয়োগের অনেক ক্ষেত্র রয়েছে। বিনিয়োগের মাধ্যমে কৃষি, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি সব ক্ষেত্রেই উন্নয়নকে আরো বেগবান করার সুযোগ রয়েছে। এজন্য আমাদের কান্ট্রি ব্র্যান্ডিং দরকার ছিলো। আমরা বিভিন্ন দেশে রোড শো করে এটাই করতে চেষ্টা করেছি। এটা বিএসইসির দায়িত্ব না হওয়া সত্বেও আমরা দেশের স্বার্থে করেছি। ইতোমধ্যে বেশিকিছু সাড়াও পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারী কিভাবে আসবে? তারা তো ভাবে আমরা গরীব, মূর্খ, সাইক্লোন আক্রান্ত, বর্বর। তাহলে কেন বিদেশিরা এদেশে বিনিয়োগ করবে? তাদের এই ভুল ধারণা ভাঙানোর জন্যই আমরা কান্ট্রি ব্র্যান্ডিং করেছি।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, বিনিয়োগ সপ্তাহে তাই আমাদের বিশ্বাস করতে হবে যে আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদেরকে আরও স্মার্ট হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী সবসময় বলেন স্মার্ট হতে। প্রতিটা কাজে, বিনিয়োগে ঝুঁকি যেভাবে বেড়েছে, স্মার্ট না হলে সেগুলো এড়িয়ে চলা যাবেনা।

শিবলী রুবাইয়াত বলেন, আমাদের দেশে এখন বিনিয়োগের অনেক ক্ষেত্র রয়েছে। আমার সঙ্গে এরইমধ্যে অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী এখানে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের কাছেও বেশ কিছু বড় বিদেশি বিনিয়োগ আসার প্রস্তাব এসেছে। নির্বাচনের পরেই কান্ট্রি ব্যান্ডিংয়ের সুফল আসবে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান এমেরিটাস অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে পরিকল্পনা হয় ৫ বছর মেয়াদি। পাকিস্তান ও ভারত ৫ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা হয়ে থাকে। বঙ্গবন্ধুও ৫ বছরের এই পরিকল্পনাকেই গুরুত্ব দেন। এক বছরের মাঝে সংবিধান তৈরি করলেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনলেন ২০ বছরের স্ট্র্যাটেজি প্ল্যান৷ যা ২০২১ সাল থেকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত করা।

তিনি বলেন, ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিনত হওয়ার পরিকল্পনা বাংলাদেশের। ঝড়-ঝাপটা না হলে ২০৪১ সালে উন্নত রাষ্ট্রের স্বপ্ন পূরণ হবে বাংলাদেশের। এখন যে গতিতে এগোচ্ছে বাংলাদেশ এ গতি অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিনত হতে পারবে বাংলাদেশ।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, বিনিয়োগ সপ্তাহে এমন বেশ কিছু আয়োজন রয়েছে যার মাঝে মানুষ এবং বিনিয়োগকারীরা অনেককিছু জানতে পারবে এবং শিখতে পারবে। কিভাবে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে আগ্রহী এবং ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্যেও থাকবে বিশেষ কিছু প্রোগ্রাম। আমরা ইতিমধ্যেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে বিনিয়োগ শিক্ষা প্রোগ্রামের আয়োজন করে আসছি।

ড. শেখ শামসুদ্দিন আরও বলেন অনিবন্ধিত এবং আন অথরাইজড কেও যেন মার্কেটে রোল প্লে না করতে পারে সে বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করতেও বিনিয়োগ সপ্তাহে থাকবে বিশেষ আয়োজন৷ আমাদের কমিশন গভীরভাবে তথ্যপ্রযুক্তিকে কিভাবে ইতিবাচক দিকে কাজে লাগানো যায় তা পর্যবেক্ষণ করে থাকে।

এসময় প্যানেল আলোচনা পরিচালনা করেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান। প্যানেল আলোচনা পরিচালনাকালে সাইফুর রহমান বলেন, আইএসকোর এই ইনভেস্টর উইকের বিশেষ সব আয়োজনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা অনেক উপকৃত হবেন, পাশাপাশি পুঁজিবাজার নিয়ে আরও কি কি ইতিবাচক কাজ করা যেতে পারে তা সামনে আসবে।

প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, আইএসকোর এই ওয়ার্ল্ড ইনভেস্টর উইকের যে ক্যাম্পিং আমরা করবো তার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা অনেক উপকৃত হবে বলে আমরা আশা করি।

বিএমবিএর ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আদি যুগ থেকেই মানুষের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে টিকে থাকা। যুগে যুগে মানুষের জীবন যাত্রা পরিবর্তন হয়েছে মানুষের৷ যারা বাজারের বাজে অবস্থার সময় ছিলো বা দায়ী ছিলো তারা হারিয়ে গেছে, কিন্তু বাজার কিন্তু টিকে আছে এখনো।

ডিবিএর ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সাইফুদ্দিন বলেন, যার ইক্যুইটি মার্কেটে থাকতে হবে তার ডেপথ মার্কেটেও থাকা উচিৎ। বিএসইসি সবসময় চেষ্টা করছে ডেপথ মার্কেটকে দার করানোর জন্য৷ আর ক্রিপ্টো কারেন্সি অ্যাসেট হিসেবে সারা পৃথিবীতে এর প্রচলন শুরু হয়েছে। তাই আমাদেরকেও ভাবতে হবে এবং ক্রিপ্টো কারেন্সি সম্পর্কে শিখতে হবে, জানতে হবে। আর এখন থেকেই সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এটা নিয়ে অ্যাওয়ার্নেস শুরু করে তা বেশ ভালো একটি উদ্যোগ।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সিআরও খায়রুল বাশার আবু তাহের মোহাম্মদ, ডিএসইর মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে দেশ এবং দেশের বাহির থেকে মার্কেটে লেনদেন করা সম্ভব৷ সারাবিশ্ব এখন অ্যাপ নির্ভর লেনদেন নির্ভর পুঁজিবাজার দেখছে৷ পাশাপাশি সার্কিট ব্রেকার, ফ্লোর প্রাইজ, মেন্যুপুলেশন ইত্যাদি সব বিষয়ে ডিএসই এবং বিএসইসি একসাথে মনিটরিংয়ের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১২:৪৬ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৩

desharthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

ক্যালেন্ডার

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭৩০
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
গোলাম ফারুক
Contact

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।

Phone: 01759881611

E-mail: editor@desharthonity.com