সোমবার ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ ও মিউচুয়াল ফান্ডের উন্নয়ন

অতিশিগগিরই বাংলাদেশে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠা পেতে যাচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   রবিবার, ২৭ আগস্ট ২০২৩ | প্রিন্ট

অতিশিগগিরই বাংলাদেশে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠা পেতে যাচ্ছে

দেশে প্রথমবারের মতো কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। অন্যদিকে দেশের মিউচুয়াল ফান্ড বিনিয়োগকারীদের সেভাবে আকৃষ্ট করতে পারছে না। কমোডিটি এক্সচেঞ্জ ও মিউচুয়াল ফান্ড খাতের উন্নয়নে ভারতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চাইছে বিএসইসি। সম্প্রতি বিএসইসির একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল এ উদ্দেশ্যে ভারত সফর করেছে।

ভারতের মুম্বাইয়ে দেশটির সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়ার (সেবি) কার্যালয়ে সম্প্রতি সেখানকার পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দলের মতবিনিময় হয়েছে। এ সময় মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জ অব ইন্ডিয়ার (এমসিএক্স) প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। তাছাড়া ভারতের মিউচুয়াল ফান্ড খাতসংশ্লিষ্টরাও ছিলেন সেখানে। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। প্রতিনিধি দলে অন্যদের মধ্যে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপসচিব মো. গোলাম মোস্তফা, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলাম ফারুকসহ বিএসইসি ও সিএসইর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ভারতের পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার বিষয়টি বিএসইসির পক্ষ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে।

 

সভায় বাংলাদেশে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠাসহ সংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ে নিয়ে দুই পক্ষের মাঝে আলোচনা হয়। বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে কমোডিটি ডেরিভেটিভের বাজার সৃষ্টি এবং দেশের বাজারে কীভাবে সফলভাবে কমোডিটি ডেরিভেটিভ পণ্যগুলোর সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগানো যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রায় ১৭ কোটি জনসংখ্যার বাংলাদেশে রয়েছে বিরাট আকারের ভোক্তা সম্প্রদায়। জিডিপি ও ক্রয়ক্ষমতার সূচকে অব্যাহত উন্নতি করা বাংলাদেশে কমোডিটি ডেরিভেটিভ পণ্যের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠা ও কমোডিটি ডেরিভেটিভের বাজার সৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠা এবং এ মার্কেটের বিকাশের পথে নানা চ্যালেঞ্জ ও সেগুলো মোকাবেলায় করণীয় সম্পর্কের বিষয়টিও আলোচনায় উঠে এসেছে। এ সময় বাংলাদেশে এ ধরনের এক্সচেঞ্জ ও বাজার চালু হলে তার যথাযথ রেগুলেশন ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার নানা দিক নিয়ে ভারতের বাজারসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা হয়।

এছাড়া সভায় ভারতের মিউচুয়াল ফান্ড ও সংশ্লিষ্ট পণ্যগুলোর বাজার নিয়ে আলোচনা হয় এবং ভারতের পুঁজিবাজারের মতো বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে মিউচুয়াল ফান্ড খাতের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে কথা হয়। ভারতের পুঁজিবাজারে ২০১৩ সালে মিউচুয়াল ফান্ড ইন্ডাস্ট্রির আকার ছিল ৭ দশমিক ৬১ লাখ কোটি রুপি, যা মাত্র ১০ বছরের ব্যবধানে ছয় গুণেরও বেশি বেড়ে ২০২৩ সালে ৪৬ দশমিক ৩৮ লাখ কোটি রুপি হয়েছে। সভায় বাংলাদেশে মিউচুয়াল ফান্ড খাতের উন্নয়ন এবং এ খাতের পণ্যগুলোর উন্নতি সাধন ও জনপ্রিয় করার বিষয়ে করণীয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একই সঙ্গে ভারতের মিউচুয়াল ফান্ডসহ বিভিন্ন খাত থেকে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বিষয়েও সভায় আলোচনা হয়েছে।

একই দিন কটন অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে বিএসইসির প্রতিনিধি দলের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কমোডিটি ডেরিভেটিভ পণ্য হিসেবে যে পণ্যগুলো ভারত ও বিশ্বজুড়ে কমোডিটি এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয় তার মধ্যে অন্যতম প্রধান একটি পণ্য হচ্ছে কটন বা তুলা। বাংলাদেশের কমোডিটি এক্সচেঞ্জে প্রাথমিকভাবে যে কয়টি কমোডিটি ডেরিভেটিভ পণ্য লেনদেন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে তার একটি হচ্ছে তুলা। তৈরি পোশাক ও বস্ত্র শিল্পের সঙ্গে বাংলাদেশ গভীরভাবে জড়িত হওয়ায় এ দেশে কটন কমোডিটি ডেরিভেটিভ পণ্য হিসেবে ব্যাপক সম্ভাবনাময়। ভারতের কমোডিটি এক্সচেঞ্জে কটনের মতো কমোডিটি ডেরিভেটিভ পণ্যের লেনদেন তথা ট্রেডিং-ক্লিয়ারিং প্রক্রিয়া এবং এক্ষেত্রে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জসহ এর নানা দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

প্রসঙ্গত, অতিশিগগিরই বাংলাদেশে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠা পেতে যাচ্ছে। বাংলাদেশে দৃঢ় ভিত্তিসম্পন্ন ও সুস্পষ্ট আইনি কাঠামোয় কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠায় এবং দেশের বিনিয়োগকারীদের কমোডিটি ডেরিভেটিভ পণ্যের লেনদেনের নিরাপদ বিনিয়োগের প্লাটফর্ম উপহার দিতে বিএসইসি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। এ লক্ষ্যে বিএসইসি এরই মধ্যে কমোডিটি এক্সচেঞ্জের খসড়া বিধিমালা প্রস্তুত করেছে এবং বিধিমালা চূড়ান্তে দ্রুততার সঙ্গে কাজ চলছে।

দেশে কমোডিটি ডেরিভেটিভ মার্কেট প্রতিষ্ঠার জন্য সিএসই ভারতের বৃহত্তম পণ্য ডেরিভেটিভ এক্সচেঞ্জ এমসিএক্সের সঙ্গে কাজ করছে। দেশে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার জন্য অভিজ্ঞতা বিনিময় ও পরামর্শসেবা নেয়ার জন্য সিএসই এমসিএক্সের সঙ্গে চুক্তি করেছে। ফলে এমসিএক্স বাংলাদেশে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠায় কনসালট্যান্ট বা পরামর্শকের ভূমিকায় কাজ করছে। কমোডিটি এক্সচেঞ্জ সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা পেতে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল এমসিএক্স পরিদর্শন করে এবং এর পরিচালনা পদ্ধতিসহ নানা বিষয় প্রত্যক্ষ করে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১২:০৬ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৭ আগস্ট ২০২৩

desharthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

ক্যালেন্ডার

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭৩০
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
গোলাম ফারুক
Contact

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।

Phone: 01759881611

E-mail: editor@desharthonity.com