নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ০২ জুলাই ২০২৩ | প্রিন্ট
কোরবানির ঈদের দুই সপ্তাহ আগেও রাজধানীতে কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে। ঈদের কয়েকদিন আগে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়। এরপর থেকে দাম কমেনি। এখন ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, ঊর্ধ্বমুখী বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার ২৫ জুন থেকে মরিচ আমদানির অনুমতি দিয়েছে। তবু কমছে না মরিচের দাম। এর মধ্যে দুই দিন আমদানির পর ঈদের কারণে আপাতত বন্ধ রয়েছে কাঁচা মরিচ আমদানি। পুনরায় আমদানি শুরু হলে কাঁচা মরিচের দাম কমতে শুরু করবে বলে প্রত্যাশা করছেন ব্যবসায়ীরা।
রাজধানীর রামপুরা, খিলগাঁও, দক্ষিণ বনশ্রী, মালিবাগ ও কারওয়ান বাজারে রোববার (২ জুলাই) ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে কাঁচা মরিচ। তবে কোথাও ৫০০ টাকার নিচে কাঁচা মরিচ কেনা যাচ্ছে না। পাইকারি বাজারে কাঁচা মরিচের দাম বাড়লেও খুচরা বাজারের সঙ্গে দামে দ্বিগুণ ব্যবধান। লাগামহীন এমন দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ভোক্তারা।
বিক্রেতারা বলছেন, ঈদে পরিবহন সংকট ও বৃষ্টির কারণে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কম থাকায় দাম অতিরিক্ত বেড়েছে। তবে বৃষ্টির প্রকোপ কমলে কাঁচা মরিচের দাম ভোক্তার নাগালে আসবে বলে জানান বিক্রেতারা। এদিকে ভোক্তারা বলছেন, হঠাৎ কাঁচা মরিচের এমন অস্বাভাবিক দাম বাড়াতে নাজেহাল অবস্থায় পড়তে হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের এপ্রিল ও মে মাসে খরার পর হঠাৎ অতিবৃষ্টির কারণে বেশিরভাগ মরিচ গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সে কারণে অধিকাংশ গাছে ফলন কমে গেছে। এর পর সম্প্রতি টানা বৃষ্টির কারণে মরিচ সংগ্রহের কাজ স্বাভাবিকভাবে হচ্ছে না। ফলে মরিচ উৎপাদনের এলাকা হিসেবে পরিচিত জেলা ও উপজেলাগুলোতেও কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে।
বাজার করতে আসা আমেনা বেগম নামে একজন গৃহীণি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বেশ কিছুদিন ধরেই ঊর্ধ্বমুখী কাঁচা মরিচের দাম। অন্যান্য সবজি না হলেও চলে; তবে মরিচ ছাড়া তরকারি তো রান্না হয় না। তাই বাধ্য হয়েই বাড়তি দামে মরিচ কিনতে হচ্ছে। কাঁচা মরিচের দাম নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। বাজারে মরিচ কিনতে এসে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। বেশি কেনাও সম্ভব না, আবার পরিমাণে অল্পও বিক্রি করতে চাইছেন না দোকানদাররা। ১০ টাকার কাঁচা মরিচ চাইলে দোকানদাররা বিরক্তি প্রকাশ করছেন।
কারওয়ান বাজার কাঁচামাল আড়ৎ ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মো. মোক্তার হোসেন বলেন, দুই-এক দিনের মধ্যে পুনরায় কাঁচা মরিচ আমদানি শুরু হতে পারে। আশা করা যায়, এরপর থেকে কাঁচা মরিচের দাম কমতে শুরু করবে। ঈদে পরিবহন সংকট ও বৃষ্টির কারণে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কম থাকায় দাম অতিরিক্ত বেড়েছে।
সবজির দাম বাড়তি: ঈদের পর প্রায় সকল সবজিই দাম কেজি প্রতি বেড়েছে ৫ থেকে সর্বোচ্চ ২০ টাকা পর্যন্ত। প্রতি কেজি করলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, যা ঈদের ছুটির আগে ছিল ৬০ টাকা। এছাড়া প্রতিকেজি পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়, যা ঈদের ছুটির আগে ছিল ৪০ টাকা। প্রতি কেজি ঢ্যাঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়, যা ঈদের আগে ছিল ৪০ টাকা। প্রতি কেজি কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, যা ঈদের ছিল ৪০ টাকা। ৫০ টাকার বেগুন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। প্রতি কেজি পোটল বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, যা ঈদের আগে ছিল ৪০ টাকা। প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়, যা ঈদের ছুটির আগে ছিল ১২০ টাকা। প্রতি কেজি ঝিঙা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, যা ঈদের আগে ছিল ৬০ টাকা। প্রতি কেজি চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, যা ছিল ৫০ টাকা। প্রতি কেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়, যা ঈদের ছুটির আগে ছিল ১০০ টাকা।
মাছ ও মাংসের দাম বাড়তি: ঈদ পর মাছ বাজারেও রয়েছে অস্বস্তি। প্রতি কেজি রুই বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, তবে তাজা রুই কিনতে আরও ৫০ টাকা বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে। বাগদা চিংড়ি ৭০০ ও গলদা ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এর বাইরে আইড়, চিতল, বেলে মাছ আকারভেদে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়। এছাড়া, প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকায়। আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকা কেজি। লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৩৭০ টাকায়। আর ব্রয়লার মুরগি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
Posted ১:২৮ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০২ জুলাই ২০২৩
desharthonity.com | Rina Sristy