নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ০৬ জুন ২০২৩ | প্রিন্ট
বর্তমান কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থাকে আরও ন্যায়সংগত, টেকসই, জলবায়ু সহিষ্ণু করে তোলা ও সবার জন্য পর্যাপ্ত খাদ্যের অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের খাদ্য অধিকার ও কৃষি খাদ্য ব্যবস্থা সম্মেলন ২০২৩ আয়োজন করতে যাচ্ছে খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ। আগামী ২৬-২৭ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী সিনেট ভবনে দুদিনব্যাপী এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার (৬ জুন) বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মহসিন আলী।
তিনি বলেন, কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থা একটি সামগ্রিক ও বহুমাত্রিক ব্যবস্থা। যেখানে বিস্তৃত পরিসরে অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিভিন্ন অংশীজন অন্তর্ভুক্ত থাকে। এ ব্যবস্থা অর্থনৈতিক, পরিবেশগত, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দিককে নির্দেশ করে, যা খাদ্য, জমি, পানি, পুঁজি, জোগান, প্রযুক্তি, বাজারে ন্যায়সংগতভাবে এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকটের কারণে বেঁচে থাকা এবং ব্যবস্থাগত রূপান্তর প্রক্রিয়াকে সন্নিবেশিত করে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) দ্বারা প্রস্তাবিত নিওলিবারেল মতাদর্শ বাণিজ্য এবং কৃষি সংক্রান্ত চুক্তির দ্বারা পরিচালিত শিল্প ও কৃষি খাদ্য ব্যবস্থা, ভূমি দূষণ, বন উজাড় করা, জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি, পানির ঘাটতি– এসব বৈষম্য ও খাদ্য আমদানি বাড়ায়। বিশ্বব্যাপী মহামারির কারণে বহুজাতিক কর্পোরেশনগুলো টান্সজেনিক বীজের ব্যবহারকে একচেটিয়া করে এবং চাপিয়ে দেয়।
মহসিন আলী বলেন, প্রতি বছর বহুজাতিক কৃষি ব্যবসার দ্বারা লাখ লাখ জীবিকা নির্বাহকারী কৃষকদের তাদের জমি থেকে উচ্ছেদ করা হয়। এসব বহুমাত্রিক প্রেক্ষাপটে খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক, যার সহযোগী হিসেবে পিকেএসএফ, অক্সফ্যাম, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, ইন্টারন্যাশনাল ফুড সিকিউরিটি নেটওয়ার্ক-আইএফএসএন, কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড, কেয়ার, ব্র্যাক, ওয়ার্ল্ড ভিশন, অ্যাকশনএইড, ক্রিশ্চিয়ানএইড, নেটজ বাংলাদেশসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং নেটওয়ার্কের যৌথ আয়োজনে আগামী ২৬-২৭ জুলাই ‘এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের খাদ্য অধিকার ও কৃষি খাদ্য ব্যবস্থা সম্মেলন ২০২৩’ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ২৬ জুলাই সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী সিনেট ভবনে দুদিনব্যাপী এ সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। এটা এ অঞ্চলে খাদ্য অধিকার ও কৃষি খাদ্য ব্যবস্থার সঙ্গে অত্যন্ত সক্রিয় ও ওতপ্রোতভাবে যুক্ত নাগরিক সমাজের মধ্যে যোগাযোগ প্রক্রিয়াকে আরও বিস্তৃত করবে।
সম্মেলনের উদ্দেশ্যে নিয়ে তিনি বলেন, খাদ্য অধিকার ইস্যুকে শক্তিশালী করার জন্য নাগরিক সমাজের সংগঠন ও নেটওয়ার্ক, কৃষক সংগঠন, যুব, নারী, বিশেষজ্ঞ, গবেষক এবং নীতিনির্ধারকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বহুবিধ অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা। এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থা রূপান্তরে আদিবাসী, ক্ষুদ্র কৃষক এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের ভূমিকা, অবদান এবং অংশগ্রহণকে স্বীকৃতি, রক্ষা ও এগিয়ে নেওয়া। সমাজের সবচেয়ে প্রান্তিক অংশের খাদ্য নিরাপত্তা এবং পুষ্টি নিশ্চিত করার জন্য সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি পর্যালোচনা ও করণীয়। কৌশলগত টেকসই ও ন্যায়সংগত পদ্ধতি অপরিহার্য উপাদান হিসেবে একক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও প্রতিবেশগত কৌশল গ্রহণ করার জন্য কৃষি খাদ্য ব্যবস্থা এবং এর নীতি কাঠামো বিশ্লেষণ করা। টেকসই ও ন্যায়সংগত এবং জলবায়ু সহনশীল কৃষিতে ক্ষুদ্র পরিবারের কৃষকদের (পুরুষ ও নারী) কণ্ঠস্বর জোরদার করা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ ও পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। এছাড়া খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক শাহিন আক্তার চৌধুরী ডলি, অর্থ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে উপস্থিত ছিলেন।
Posted ১:৪৮ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৬ জুন ২০২৩
desharthonity.com | Rina Sristy