নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট
সেন্ট্রাল লজিস্টিক ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম (সিএলটিপি) নামে একটি প্লাটফর্ম গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ই-কমার্স ব্যবসায় গ্রাহক এবং ভোক্তাদের পণ্য সরবরাহ এবং পরিবহন সময় শনাক্ত করা ও আর্থিক লেনদেনের স্বচ্ছতা আনতে এই প্লাটফর্ম স্থাপন করতে যাচ্ছে সরকার।
সূত্র জানায়, প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে গ্রাহকরা ই-কমার্স কোম্পানির কাছ থেকে পণ্য সরবরাহকালে সেটি কোথায় আছে তা সহজে জানতে পারবেন। ফলে আর্থিক লেনদেনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের এটুআই প্রোগ্রামের আওতায় সিএলটি প্ল্যাটফর্ম স্থাপনের কাজ চলছে। আশা করা যায় ঈদের পরে সিএলটি প্ল্যাটফর্মের ওয়েবসাইট উদ্বোধন করা হবে।
সূত্র জানায়, দেশে ২ হাজার কোটি টাকার ই-কমার্স ব্যবসায় যেসব অস্বচ্ছতা ছিল, এ প্ল্যাটফর্ম স্থাপনে সেটি দূর হবে। স্বচ্ছতা আনার জন্য ব্যাংক ও গ্রাহক এবং ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের গেটওয়েগুলো এই প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, এই প্ল্যাটফর্মের আওতায় আসলে গ্রাহক এবং ভোক্তা কোনোভাবেই প্রতারণার শিকার হবেন না। ই-কমার্স ব্যবসায়ীরা এ প্লাটফর্মের বাইরে প্রতারণার আশ্রয় নিতে পারে। কিন্তু যখনই এই প্ল্যাটফর্মে নাম রেজিস্ট্রেশন করবে তখন তারা কোনো প্রতারণার কোনো সুযোগ পাবে না। আগে যেমন কিউকম বা আলিশা মার্ট গ্রাহকদের টাকা প্রতারণার মাধ্যমে মেরে দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। এই প্ল্যাটফর্ম করা হলে তা কখনো সম্ভব হবে না।
এ টু আই প্রোগ্রামের হেড অব ই-কমার্স রেজওয়ানুল হক জামি বলেন, সিএলটি প্ল্যাটফর্ম স্থাপনে কাজ চলছে। এই প্ল্যাটফর্ম স্থাপন করা হলে ই- কমার্স ব্যবসায়ীরা অনেক সুবিধা পাবেন, গ্রাহক এবং ভোক্তার পণ্য সহজে সরবরাহের স্বচ্ছতা বাড়বে। ই-কমার্স কোম্পানির কাছ থেকে পণ্য সরবরাহকালে সেটি কোথায় আছে তা এ প্ল্যাটফর্মে ঢুকে গ্রাহকরা সহজে জানতে পারবেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কেন্দ্রীয় কমার্স সেলের তথ্য মতে, ই-কমার্স কোম্পানির লোভনীয় অফারের ফাঁদে পড়ে প্রতারিত লাখো গ্রাহকের পাওনা প্রায় তিন হাজার ৫০০ কোটি টাকা ফেরত পাওয়া প্রায় অনিশ্চিত। ১৩টি কোম্পানির কাছ থেকে গ্রাহকরা আংশিক টাকা ফেরত পেলেও ১৪টি কোম্পানি গ্রাহককে কোনো টাকাই দেয়নি।
কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেল বলছে, গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। তবে প্রতারিত গ্রাহকের তথ্য পাওয়া কঠিন। কোম্পানিগুলো এ ব্যাপারে সহযোগিতা করছে না। এতে বিপুল অঙ্কের ওই টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। অভিযোগ ওঠা কোম্পানির কেউ কেউ আগেই দেশ ছেড়েছেন, কেউ বা গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাগারে। আবার কয়েকটি কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেছে। এসব কোম্পানির টাকার দায় নিচ্ছে না কেউ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্য মতে, ইভ্যালি নিয়েছে এক হাজার কোটি টাকা। এরমধ্যে কিছু টাকা গ্রাহকরা পেয়েছেন। অন্যদিকে ই-অরেঞ্জের গ্রাহক ও সরবরাহকারীদের পাওনা এক হাজার ১০০ কোটি টাকা, ধামাকা নিয়েছে ৮০৩ কোটি টাকা, এসপিসি ওয়ার্ল্ড ১৫০ কোটি টাকা, এহসান গ্রুপ ১১০ কোটি টাকা, নিরাপদ ডটকম আট কোটি টাকা, চলন্তিকা ৩১ কোটি টাকা, সুপম প্রডাক্ট ৫০ কোটি টাকা, নিউ নাভানা ৩০ কোটি টাকা, কিউ ওয়ার্ল্ড মার্কেটিং ১৫ কোটি টাকা, সিরাজগঞ্জ শপ ৪৭ কোটি ও আলাদিনের প্রদীপ নিয়েছে ১০০ কোটি টাকা।
এ ছাড়া বিভিন্ন কোম্পানি ও মার্চেন্টের কাছ থেকে বাকিতে নেওয়া পণ্যের অর্থও ফেরত দেয়নি অভিযোগ ওঠা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো। সেই টাকার কোনো হিসাব দিতে পারছেন না সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
Posted ১১:১১ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৩
desharthonity.com | Rina Sristy