নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ০৩ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, নিম্ন আয়ের মানুষকে সাশ্রয়ী মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের লক্ষ্যে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দেওয়া এককোটি ফ্যামিলি কার্ডকে স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সোমবার (৩ এপ্রিল) রাজধানীর উত্তরায় টিসিবি আয়োজিত দেশব্যাপী এককোটি ফ্যামিলি কার্ডধারী নিম্নআয়ের পরিবারের মধ্যে রমজান মাস উপলক্ষ্যে দ্বিতীয় পর্বের টিসিবি পণ্য বিক্রয় কার্যক্রম এবং উত্তরা এলাকায় টিসিবি পণ্যের অস্থায়ী সংরক্ষণাগারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, নারায়ণগঞ্জ এবং বরিশালে টিসিটির কার্ড স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরের পাইলটিং কাজ সম্পন্ন হয়েছে। হাতে লেখা সব কার্ড কিউআর কোড সম্বলিত স্মার্ট কার্ডে রূপান্তর করা হবে। যার কাজ চলমান রয়েছে। এসব কার্ড স্মার্ট কার্ডে পরিবর্তন করলে অসঙ্গতিগুলো দূর করা সহজ হবে।
টিপু মুনশি বলেন, আমরা সবাই জানি করোনা মহাসংকটের পরপরই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে সারাবিশ্বে দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। তা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গরিব মানুষদের মধ্যে কমমূল্যে পণ্য সরবরাহ অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। বিশ্বের উন্নতসহ অনেক দেশ খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও সরবরাহে হিমশিম খাচ্ছে। নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্যের বেশি ক্রেতাদের দেওয়া হচ্ছে না। বিশ্ববাজার বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রীর যুগান্তকারী নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় টিসিবির মাধ্যমে দেশের এককোটি পরিবারের মধ্যে স্বল্পমূল্যে পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রতি মাসে একবার দিলেও পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষ্যে দ্বিতীয়বার দেওয়া হচ্ছে এবং আগামী ১৫ তারিখের মধ্যে বিতরণ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী আরো বলেন, যারা দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করেন শেখ হাসিনা তাদের দুঃখ কষ্ট অনুভব করেন। সেজন্যই তিনি এককোটি ফ্যামিলি কার্ডধারী অর্থাৎ প্রতি পরিবারে গড়ে পাঁচজন সদস্য হলে প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ এই সুবিধার আওতায় নিয়ে এসেছেন।
তিনি বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে ৫০ লাখ মানুষকে সাশ্রয়ী দামে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তা এককোটি করার নির্দেশ দিয়েছেন। নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা তা বাস্তবায়ন করছি।
পণ্য মজুতের বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, আমাদের যথেষ্ট পরিমাণে পণ্য মজুত আছে। বিগত কয়েক বছরের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যাবে এ বছর আমরা সরবরাহ ও বিতরণে শক্ত অবস্থানে আছি। কোনো একটি পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেলে সবাই প্রশ্ন তোলেন। অথচ মূল্য যখন কমে তখন কেউ আর কিছু বলেন না। সমালোচনার পাশাপাশি ভালো কাজের প্রশংসা করাও উচিত। এতে দায়িত্ব পালনে উৎসাহ পাওয়া যায়।
পণ্যের মজুত পর্যাপ্ত এরপরেও বাজারে দাম কমছে না কেন জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বাজারে সব পণ্যের মূল্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণ করে না। এ বিষয়ে একটা মিস কনসেপশন আছে যে মূল্যবৃদ্ধি মানেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যুক্ত। ব্রয়লার মুরগি, মাংস এবং মাছসহ কিছু পণ্য অন্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন নয়। তারপরও আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছি যাতে দ্রব্যমূল্য মানুষের হাতের নাগালে রাখা সম্ভব হয়।
টিসিবির সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সারাদেশে পণ্য সংরক্ষণের জন্য সংরক্ষাণাগার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এ লক্ষ্য পূরণের অংশ হিসেবে উত্তরা এলাকায় আজকে এই সংরক্ষণাগারের উদ্বোধন করা হলো। এর মাধ্যমে এই অঞ্চলে পণ্য মজুত করে কার্ডধারীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া সহজ হবে।
Posted ৩:৫৬ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৩ এপ্রিল ২০২৩
desharthonity.com | Rina Sristy