নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ০১ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট
বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী ঐক্য পরিষদের নেতারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাদের বেতন বৈষম্য নিরসনসহ ৭ দফা দাবি বাস্তবায়নের আবেদন জানিয়েছেন। তাদের দাবি বাস্তবায়ন না হলে আগামী ৭ এপ্রিল জাতীয় প্রেসক্লাবের ঢাকার সামনে মানব বন্ধন, ১২ মে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশ করবে বলে জানান। এরপরেও দাবি বাস্তবায়িত না হলে পরবর্তীতে কঠোর থেকে কঠোরতম কর্মসূচির ঘোষণার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন নেতারা।
শনিবার (১ এপ্রিল) সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মুখ্য সমন্বয়ক মো.ওয়ারেছ আলী লিখিত বক্তব্যে এসব দাবী জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- ১১-২০ গ্রেডের সরকারি চাকরিজীবিদের সম্মিলিত অধিকার আদায় ফোরামের সভাপতি মো. লুৎফর রহমান, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আনোয়ারুল ইসলাম তোতা, তৃতীয় শ্রেণী সরকারী কর্মচারী সমিতির সভাপতি মো. ইব্রাহিম খলিল, বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারি শিক্ষক সমাজের সভাপতি মো. আনিসুর রহমান, বাংলাদেশ ১৭-২০ গ্রেড কর্মচারি সমিতির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন হাওলাদারসহ কেন্দ্রীয় কমিটি অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
মো.ওয়ারেছ আলী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় বৈষম্য মেনে নেওয়া যায় না। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে পরিবারের ভরণ-পোষণের ব্যয়ভার প্রাপ্ত বেতনের অর্থ দিয়ে মাসের ১৫ দিনও চলা সম্ভব হয় না। তিনি আরও বলেন, ৫ বছর পর পর পে-স্কেল প্রদানের প্রথা চালু থাকলেও ২০১৫ সালের ৮ম পে-স্কেল প্রদানের পর দীর্ঘ ৭ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে, এ পর্যায়ে কর্মচারিদের ৯ম পে-স্কেলসহ ভাতাদির অসংগতি দূর করা প্রত্যাশিত। অনতিবিলম্বে সকল দপ্তর অধিদপ্তরের কর্মচারীদের পদনাম পরিবর্তন এবং বেতন-পদবী বৈষম্য দূর করে পূর্বের ন্যায় টাইম স্কেল, সিলেকশন
গ্রেড পুনর্বহালসহ এক ও অভিন্ন নিয়োগ বিধি বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সংবাদ সম্মেলন সভাপতির বক্তব্যে শাহ মো. মামুন বলেন, ১১ থেকে ২০ গ্রেডের বঞ্চিত লক্ষ লক্ষ কর্মচারীদের দাবীর বিষয় বিবেচনা না করে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা সম্ভব নয়। এসকল দাবী বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষনে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সংগঠন কর্তৃক স্মারকলিপি, সাংবাদিক সম্মেলন, মানববন্ধনসহ বিভিন্নভাবে আবেদন নিবেদন করা হয়েছে। বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য মহান জাতীয় সংসদে এ নিয়ে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন, তদুপরি সরকারের পক্ষ থেকে কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। শনিবারের সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো ৭ দফা দাবি মেনে নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবারো তিনি জোর আহ্বান জানান।
দাবিগুলো হচ্ছে : পে-কমিশন গঠন পূর্বক ৯ম পে স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। পে-স্কেল বাস্তবায়নের পূর্বে অন্তবর্তীকালীন কর্মচারীদের জন্য ৫০% মহার্ঘ্য ভাতা প্রদান করতে হবে। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা অনুযায়ী ১০ ধাপে বেতন স্কেল নির্ধারণসহ পে-কমিশনে কর্মচারী প্রতিনিধি রাখতে হবে।
সচিবালয়ের ন্যায় সকল দপ্তর, অধিদপ্তরের পদনাম পরিবর্তনসহ ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ এবং এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রনয়ণ করতে হবে । টাইম স্কেল সিলেকশন গ্রেড পূনর্বহাল সহ বেতন জ্যেষ্ঠতা পূর্নঃবহাল, বিদ্যমান গ্রাচুইটি/আনুতোষিকের হার ৯০% এর স্থলে ১০০% নির্ধারণ ও পেনশন গ্রাচুইটি ১ টাকার সমান ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের আপীল বিভাগের রায় বাস্তবায়নসহ সহকারী শিক্ষকদের বেতন নিয়োগ বিধি-২০১৯ এর ভিত্তিতে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ ও অধঃস্তন আদালতের কর্মচারিদের বিচার বিভাগীয় সহায়ক কর্মচারি হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। আউট সোর্সিং পদ্ধতি বাতিলপূর্বক উক্ত পদ্ধতিতে নিয়োগকৃত ও উন্নয়ন খাতের কর্মচারীদের রাজস্বখাতে স্থানান্তর করতে হবে। ব্লক পোস্টে কর্মরত কর্মচারীসহ সকল পদে কর্মরতদের পদোন্নতি বা ৫ বছর পর পর বেতন স্কেলের উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে ।
বাজারমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সাথে সমন্বয় পূর্বক সকল ভাতাদি পুনঃনির্ধারণ করতে হবে। চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর ও অবসরের বয়স সীমা ৬২ বছর নির্ধারণ করতে হবে।
Posted ৮:১৮ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০১ এপ্রিল ২০২৩
desharthonity.com | Rina Sristy