নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ১৮ আগস্ট ২০২৪ | প্রিন্ট
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) কোনো দুর্নীতিবাজকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না, কোনো দুর্বৃত্ত যেন তৈরি না হয় সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির নতুন চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।
রোববার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান এনবিআরের নতুন চেয়ারম্যান।
দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে আবদুর রহমান খান বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমাদের সুযোগ, এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। যেখানে যা করা দরকার, সেখানে আমাদের সেটা করতে হবে। সবচেয়ে বেশি ফোকাস পাবে এনবিআরে এ ধরনের দুর্বৃত্ত যেন তৈরি না হয় তার দিকে। সে বিষয়ে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে, সেটাই বেশি জরুরি। এরকম যেন আর ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইন তৈরি না হয়।
তিনি বলেন, আয়কর, ভ্যাট ও কাস্টমস বিভাগ নিয়ে টাস্কফোর্স করা হবে। সেখানে যেকোনো পর্যায় থেকে অংশগ্রহণ ও কাজ করতে হবে। অন্যায়, অবিচার যেগুলো ধরা পড়বে বা যেগুলোর ইঙ্গিত আসবে, প্রত্যেকটাই অত্যন্ত শক্ত হাতে দেখব। খুব কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ জায়গায় কোনো ব্যত্যয় হবে না। তবে ধীরে ধীরে সব হবে। দুর্নীতিবাজদের খুব শক্ত বার্তা দেওয়া হয়েছে। যদি তারা নিজেদের পরিবর্তন করতে না পারে তাহলে তারা থাকবে না।
আইনের বাইরে যাব না– মন্তব্য করে নতুন চেয়ারম্যান বলেন, একজন ব্যক্তি বলল সব হয়ে গেল। আইনকানুন এক পাশে রেখে এভাবে হবে না। আমরা নিয়ম অনুযায়ী চলব। নিয়ম না থাকলে, নিয়ম বানাব। কিন্তু নিয়ম বা আইনের বাইরে যাব না।
অর্থপাচার রোধে এনবিআর কাজ শুরু করছে জানিয়ে আবদুর রহমান খান বলেন, আমরা স্ট্রংলি এটা দেখছি। তবে একটু সময় দিতে হবে। আমরা এখনই একেবারে হুড়মুড় করে পড়ব না। নীতিগত সমস্যার কারণে অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ পাওয়া যায়নি, এখানে পরিবর্তন আনতে হবে। এনবিআরের নেতিবাচক ইমেজ আছে, সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। গণঅভ্যুত্থানের যেই স্পিরিট, দুর্নীতি মুক্ত ও বৈষম্য মুক্ত সমাজ গড়া, এটা আমাদের ধারণ করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের ইমেজ সংকট আছে যে আমরা তথ্য ঠিকভাবে সংগ্রহ করতে পারি না। যা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বা অডিট অধিদপ্তরের সঙ্গে গরমিল দেখা যায়। এখন থেকে এ বৈষম্য দূর করা হবে। আইবাস থেকে তথ্য প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এখন থেকে সমন্বিত তথ্য পরিবেশন করা হবে। রাজস্ব আহরণের একটাই ফিগার হবে।
এনবিআরে সংস্কার প্রসঙ্গে নতুন চেয়ারম্যান বলেন, এনবিআর অটোমেশন করা হবে, এটাই আমার মূল কাজ। টোটাল ফাংশনকে অটোমেশন করতে পারলে হিউম্যান টাচ কমাতে পারলে সবাই এর সুবিধা পাবে। আমাদের আইনে কিছু দুর্বলতা আছে। আইন প্রয়োগেও কিছু দুর্বলতা আছে, ঘাটতি আছে। সে কারণে আমাদের রাজস্ব আদায় কম হচ্ছে, সেখানেও কাজ করতে হবে।
কালো টাকা সাদার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার ব্যক্তিগত অভিমত হলো এটা অত্যন্ত অশোভন কাজ। টোটালি আন এক্সেপ্টেবল। কালো টাকা সাদা করার মাধ্যমে দুর্নীতিকে স্বীকার করে নিচ্ছি। সৎ কর্মকর্তাকে ডিমোরালাইজড করছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে এটার বিরোধিতা করি।
রাষ্ট্রের স্বার্থ সবার আগে দেখতে হবে। কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আইনি জটিলতা তৈরি হলে আমি বলব রাষ্ট্রের স্বার্থ সবার আগে দেখতে হবে। এনবিআর কর আদায়ে কাজ করে কিন্তু রাষ্ট্র হিসেবে শুধু ট্যাক্সের কথা চিন্তা করলে হবে না, সেখানে জনকল্যাণের কথা চিন্তা করতে হবে বলেও জানান আবদুর রহমান খান।
Posted ৪:০১ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৮ আগস্ট ২০২৪
desharthonity.com | Rina Sristy