নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ২১ মে ২০২৩ | প্রিন্ট
‘স্মার্ট ভূমি সেবায় ভূমি মন্ত্রণালয়’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ভূমি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আজ সোমবার, ২২ মে থেকে ২৮ মে ২০২৩ পর্যন্ত সারা দেশে ‘ভূমি সেবা সপ্তাহ-২০২৩’ উদযাপন করা হবে।
ভূমি মন্ত্রণালয় জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক উদ্বোধনকৃত স্মার্ট ভূমিসেবার মূল অংশীজন হিসেবে দেশের জনগণকে সম্পৃক্ত করা, স্মার্ট ভূমিসেবা বিষয়ে সবাইকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অবগত করা এবং ভূমি সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে নিজ নাগরিক অধিকারের ব্যাপারের সবার মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করাই এবারের ভূমি সেবা সপ্তাহের মূল লক্ষ্য। এছাড়াও, ভূমিসেবা সপ্তাহকালীন বিশেষ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বেশকিছু ভূমিসেবা প্রদান করা হবে।
এই বছর ভূমিসেবা সপ্তাহটি প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উদ্বোধনকৃত স্মার্ট ভূমিসেবা উদ্যোগ এবং জাতীয় ভূমি সম্মেলন ২০২৩-এর ধারাবাহিকতায় উদযাপন করা হবে। এজন্য এবারের ভূমিসেবা সপ্তাহটি কেন্দ্রীয়ভাবে উদ্বোধন করা হচ্ছে না। স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনা স্থাপনে প্রথম ধাপে প্রধানমন্ত্রী ‘রেজিস্ট্রেশন-মিউটেশন আন্তঃসংযোগ’, ‘স্মার্ট ভূমি নকশা’, ‘স্মার্ট ভূমি রেকর্ড’ এবং ‘স্মার্ট ভূমি-পিডিয়া’ উদ্বোধন করেছিলেন গত ২৯ মার্চ, ২০২৩।
আগামী ২২ মে সারা দেশে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা প্রশাসকরা নিজ নিজ অধিক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে ভূমিসেবা সপ্তাহ-২০২৩ উদ্বোধন করবেন।
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর নির্দেশে এই মাসের শুরুতে ভূমি সচিব মো. খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে ভূমিসেবা সপ্তাহ ২০২৩ উদযাপন সংক্রান্ত এক প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে যথাযথ অনুমোদন প্রাপ্তির পর সভার সিদ্ধান্তের আলোকে সারা দেশে ভূমিসেবা সপ্তাহ ২০২৩ পালনের নির্দেশনা প্রেরণ করা হয়।
প্রসঙ্গত, প্রবাসী বাংলাদেশিরা এখন চার ধরনের ভূমিসেবা বিদেশে থেকেই গ্রহণ করছেন। পর্যায়ক্রমে প্রবাসীদের আরও কিছু ভূমিসেবার আওতায় নিয়ে আসা হবে। এজন্য, এই প্রথমবারের মতো স্বল্পপরিসরে প্রবাসী বাংলাদেশিদেরও স্মার্ট ভূমিসেবা বিষয়ে অবহিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশন ২০৪১ প্রতিষ্ঠা এবং স্মার্ট বাংলাদেশ রোডম্যাপে ৪টি পিলার যথাক্রমে: স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট ইকোনমি এবং স্মার্ট গভর্নেন্স অন্তর্ভুক্ত করে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার।
সরকারের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উদ্বোধনকৃত চারটি স্মার্ট ভূমিসেবা (‘রেজিস্ট্রেশন-মিউটেশন আন্তঃসংযোগ’, ‘স্মার্ট ভূমি নকশা’, ‘স্মার্ট ভূমি রেকর্ড’ এবং ‘স্মার্ট ভূমি-পিডিয়া’) ছাড়াও বেশকিছু ভূমিসেবা ব্যবস্থা ‘স্মার্ট ডিজিটালাইজ’ করা হচ্ছে।
এছাড়া, ইতোমধ্যে ডিজিটালাইজকৃত ভূমিসেবা সমূহও স্মার্ট করে তথা অধিকতর ব্যবহারকারী সহায়ক ও সহজ করে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখ করার যেতে পারে ই-নামজারির দ্বিতীয় ভার্সন স্থাপনের কাজ এবং বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভেতে ড্রোন প্রযুক্তির ব্যবহার।
সম্পদের দক্ষ ব্যবহার করে তথ্য চালিত উন্নত নাগরিকসেবা প্রদান এবং নাগরিক সেবা গ্রহণের অভিজ্ঞতা অধিকতর সহজ করার উদ্দেশ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ব্লকচেইন, ক্লাউড কম্পিউটিং, ড্রোন এবং ইউএভি, রিমোট সেন্সিং, মেশিন ভিশন, বায়োমেট্রিক্স ইত্যাদি সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনা সিস্টেম ডিজাইনে। এর ইউজার ইন্টারফেস হচ্ছে ‘স্মার্ট ভূমিসেবা প্ল্যাটফর্ম’ (https://land.gov.bd) ওয়েব পোর্টাল এবং সংশ্লিষ্ট মোবাইল অ্যাপ।
প্রসঙ্গত, ভূমি সেবাকে সাধারণ মানুষের নিকট আরও সহজলভ্য করার লক্ষ্যে ভূমি মন্ত্রণালয় উন্নয়নমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করে বেশকিছু সেবা ইতোমধ্যে ডিজিটালাইজেশন করেছে। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ই-নামজারি, অনলাইন/ডিজিটাল ভূমি উন্নয়ন কর, ১৬১২২ কলসেন্টার, সোশ্যাল মিডিয়া (www.facebook.com/land.gov.bd) ও কিয়স্কের মাধ্যমে ভূমিসেবা, ডিজিটাল জরিপ, অনলাইনে জলমহালের আবেদন, ল্যান্ড ডাটা ব্যাংক, মর্টগেজ ডাটা ব্যাংক। এসব নানাবিধ উদ্যোগের মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য বাস্তবায়নে অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়।
সারা দেশে স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থা চালু হলে হলে নাগরিকদের খুব প্রয়োজন ছাড়া ভূমি অফিসে যেতে হবে না, একবার কোথাও ডিজিটাল জরিপ সম্পন্ন হলে, সেখানে ভবিষ্যতে আর জরিপ করার প্রয়োজন পড়বে না। ভূমি নিয়ে মামলা-মোকাদ্দমা ও সীমানা বিরোধ কমে যাবে বহুলাংশে।
উল্লেখ্য, ই-নামজারি উদ্যোগের জন্য ইউনাইটেড ন্যাশনস পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড ২০২০-এ ভূষিত হয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়। ডিজিটাল ভূমি উন্নয়ন করের জন্য অর্জন করেছে উইসিস পুরস্কার ২০২২ এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ পুরস্কার ২০২২। ভূমি তথ্য ব্যাংকের জন্য অর্জন করেছেন বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক ২০২২।
Posted ১২:৫৫ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২১ মে ২০২৩
desharthonity.com | Rina Sristy