নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ০৫ মার্চ ২০২৩ | প্রিন্ট
লিস্টেড এবং নন-লিস্টেড কোম্পানির মধ্যকার কর হারের ব্যবধান কমানোর পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ে ব্যবসাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে নন-লিস্টেড কোম্পানির কর্পোরেট করের হার আরও ২.৫% কমানোর প্রস্তাব করেন ডিসিসিআই’র সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেটের জন্য এনবিআর’র নিকট ডিসিসিআই’র প্রস্তাবনা পেশে তিনি এই প্রস্তাব উপস্থাপন করেন।
ঢাকা চেম্বার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের জন্য এনবিআরের নিকট আয়কর, মূসক ও শুল্ক সংক্রান্ত মোট ৩০টি প্রস্তাব পেশ করেছে।
রোববার (৫ মার্চ) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর’র সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এক প্রাক-বাজেট আলোচনা অনুষ্ঠানে আগামী অর্থবছরের বাজেটে অন্তর্ভূক্তির জন্য ঢাকা চেম্বারের প্রস্তাবনা সমূহ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর’র চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম-এর নিকট পেশ করেন ডিসিসিআই’র সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার।
এ সময় আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন ডিসিসিআই সহ-সভাপতি এস এম গোলাম ফারুক আলমগীর (আরমান), সহ-সভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনে আলীসহ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে সহজ ও ব্যবসাবান্ধব আয়কর ব্যবস্থা, আয়কর ও মূল্যসংযোজন করের আওতা বৃদ্ধি, আয়কর সংগ্রহে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ, কর ব্যবস্থার সম্পূর্ণ অটোমেশন, স্থানীয় শিল্পায়ন উৎসাহিতকরণ এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতকরণের উপর জোরারোপ করেছে, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।
ডিসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার সাত্তার জানান, মূল্যস্ফীতির ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সাথে সঙ্গতি রেখে ব্যক্তিখাতে করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লক্ষ টাকা করার প্রস্তাব করেন । বর্তমানে ৩০ লক্ষ টিআইএনধারী আয়কর রিটার্ন দাখিল করে, যার কারণে আমাদের কর-জিডিপির হার প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এমন বাস্তবতায় আগামী ১০ বছরে করদাতার সংখ্যা কমপক্ষে ১-২ কোটিতে উন্নীত করতে এনবিআরকে একটি দীর্ঘময়োদী পরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানান। এছাড়াও কর ও মুসক প্রদান সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়গুলি সহজে সমাধানের লক্ষ্যে ‘ইন্টিগ্রেটেড ট্যাক্স এ্যাডমিনিস্ট্রেশন সিস্টেম (আইটিএএস)’ এবং ‘ইন্টিগ্রেটেড ভ্যাট এ্যাডমিনিস্ট্রেশন সিস্টেম (আইভিএএস)’ প্রবর্তনের আহ্বান জানান ।
তিনি আরো বলেন, ভ্যাটের আওতা বহির্ভূত ব্যবসায়ের বার্ষিক টার্নওভারে ঊর্ধ্বসীমা ৩ কোটি টাকা হতে বাড়িয়ে ৪ কোটি টাকা নির্ধারনের প্রস্তাব করেন, কারণ মূল্যস্ফীতির কারণে পণ্য সরবরাহ ও উৎপাদন খরচ অনেকাংশে হ্রাস বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশেষকরে অতিক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ব্যবসায় প্রকৃত মুনাফা অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। যেহেতু ব্যাংকে আমানতের উপর ১০-১৫% উৎসে করা কর্তন করা হয়, সেক্ষেত্রে আমানতের উপর পুনরায় এক্সাইজ ডিউটি আরোপ, আমানতের ব্যয় বাড়িয়ে দিবে এবং ব্যাংকে সঞ্চয় নিরুৎসাহিত করবে, এমতাবস্থায় তিনি এটিকে প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেন। কাস্টমস সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম সহজীকরণের লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ সিঙ্গেল ইউন্ডো’-এর অতি দ্রুত বাস্তবায়নের জোরারোপ করেন ডিসিসিআই সভাপতি।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, এইচএস কোড ব্যবহারে ভুল কমানোর লক্ষ্যে এনবিআরের পক্ষ হতে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের নিয়মিতভাবে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে, ব্যবসায়ীরা চাইলে এনবিআর থেকে এ্যাডভান্স রুলিং নিতে পারেন। এইচএস কোড ব্যবহারে ব্যবসায়ীদের আরো সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি আরো জানান, দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনার প্রক্রিয়া সহজীকরণের জন্য নাানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে, তবে কমপ্লায়েন্স ইস্যুতে এনবিআর সর্বদাই কঠোর অবস্থান থাকবে। ব্যবসায়িক কর্মকান্ড আরো সহজীকরণের জন্য তিনি উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা কামনা করেন। ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ ‘বাংলাদেশ সিঙ্গেল ইউন্ডো’-এর কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধিকল্পে দেশে করজাল বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই।
Posted ১১:৪২ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ০৫ মার্চ ২০২৩
desharthonity.com | Rina Sristy