নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের ২টি বস্ত্রকল পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) পদ্ধতিতে চালু হচ্ছে। অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় অনুমোদনের ছয় বছর পর পিপিপির আওতায় বন্ধ থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত বস্ত্রকল চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল্স করপোরেশন (বিটিএমসি)। প্রক্রিয়াধীন আরও ২টি।
পিপিপিতে যে দুইটি বস্ত্রকল চালু হচ্ছে সেগুলো হলো-চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডুতে অবস্থিত আর আর টেক্সটাইল মিল্স লিমিটেড এবং রাজশাহীতে অবস্থিত রাজশাহী টেক্সটাইল মিল্স। শিগগিরই বস্ত্রকল দুটির পিপিপি পার্টনারের সঙ্গে সংস্থাটির চুক্তি হবে।
আর আর টেক্সটাইল মিল্স লিমিটেডের পিপিপি পার্টনার হচ্ছে-প্রাণ কনসোর্টিয়াম এবং রাজশাহীতে অবস্থিত রাজশাহী টেক্সটাইল মিলসের পিপিপি পার্টনার হচ্ছে-চরকা টেক্সটাইল মিল্স লিমিটেড। এর মধ্যে আর আর টেক্সটাইল মিলসের বার্ষিক চুক্তি ফি হচ্ছে তিন কোটি ২২ লাখ টাকা এবং রাজশাহী টেক্সটাইল মিলসের বার্ষিক চুক্তি ফি এক কোটি ৭১ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
বিটিএমসি সূত্রে জানা যায়, আর আর টেক্সটাইল মিলটি ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ও ১৯৬৫ সাল থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করে। মিলটির ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত বিটিএমসির ব্যবস্থাপনায় উৎপাদন চালু ছিল। বর্তমানে মিলটির যন্ত্রপাতি অত্যন্ত পুরাতন ও জরাজীর্ণ হওয়ায় বন্ধ আছে। পিপিপির মাধ্যমে মিলটি চালু হলে আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন গ্রীণ ফ্যাক্টরি স্থাপিত হবে। এতে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছে বিটিএমসি।
সূত্র জানায়, উভয়মিলের ক্ষেত্রেই কারখানা সংস্কার ও আধুনিকায়নের মাধ্যমে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়ার জন্য তিন বছরের গ্রেস পিরিয়ড দেওয়া হয়েছে। গ্রেস পিরিয়ড অতিক্রমের পর বাৎসরিক চুক্তি ফি কার্যকর হবে।
সূত্র জানায়, আর আর টেক্সটাইল মিলটি পিপিপির আওতায় চালুর জন্য ২০১৭ সালের ২০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলে তাতে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। পরবর্তীতে পিপিপি প্রতিষ্ঠান নিয়োগের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হলে তিনটি প্রস্তাব জমা পড়ে। দাখিলকৃত তিনটি প্রস্তাবই কারিগরিভাবে যোগ্য বলে অভিমত দেয় দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি)। তিনটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পিইসি সর্বোচ্চ স্কোর অর্জনকারী দরদাতা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে-প্রাণ কনসোর্টিয়াম।
অন্যদিকে রাজশাহী টেক্সটাইল মিলটিও বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। মিলটি ১৯৭৫ সালে স্থাপন করা হয় এবং ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত এটি চালু ছিল। অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ২০১৭ সালের ২০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সভায় এ মিলটিও পিপিপির ভিত্তিতে চালুর প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। পিপিপি প্রতিষ্ঠান নিয়োগের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হলে মাত্র একটি প্রস্তাব জমা পড়ে। একমাত্র দরদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে চরকা টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের প্রস্তাবটি কারিগরিভাবে রেসপনসিভ বলে অনুমোদন দেয় দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি)।
সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী বন্ধকৃত রাষ্ট্রায়ত্ত ১৬টি মিল পুনরায় চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বিটিএমসি। ইতঃপূর্বে দুটি মিল পিপিপির ভিত্তিতে বেসরকারি অংশীদারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মিল দুটি হচ্ছে-ডেমরায় অবস্থিত আহমেদ বাওয়ানি টেক্সটাইল মিল্স লিমিটেড এবং টঙ্গীতে অবস্থিত কাদেরিয়া টেক্সটাইল মিল্স লিমিটেড। এছাড়া বর্তমানে আরও দুটি মিল পিপিপির ভিত্তিতে চালুর প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মিল দুটি হচ্ছে-ফেনীর রানীর হাটে অবস্থিত দোস্ত টেক্সটাইল মিল্স লিমিটেড এবং মাগুরায় অবস্থিত মাগুরা টেক্সটাইল মিল্স লিমিটেড।
সূত্র জানায়, তিন বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ মিল দুটি ২০১৯ সালে পিপিপি পার্টনারদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু করোনাজনিত কারণে গ্রেস পিরিয়ডের সময়সীমা বাড়ানো হয়। মিল দুটির মধ্যে ডেমরায় অবস্থিত আহমেদ বাওয়ানি টেক্সটাইল মিল্স লিমিটেডের মাসিক চুক্তি ফি হচ্ছে ৩০ লাখ টাকা এবং টঙ্গীতে অবস্থিত কাদেরিয়া টেক্সটাইল মিল্স লিমিটেডের মাসিক ফি হচ্ছে ২০ লাখ টাকা।
Posted ১:৩০ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩
desharthonity.com | Rina Sristy