নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট
নারী শিক্ষা, নারী অধিকার, নারীর আর্থ সামাজিক উন্নয়ন, পল্লী উন্নয়ন এবং নারী জাগরণে উদ্বুদ্ধকরণ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান ও ভূমিকা পালনে স্বীকৃতিস্বরূপ বেগম রোকেয়া পদক-২০২৩ পাচ্ছেন পাঁচ নারী।
বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপন ও বেগম রোকেয়া পদক ২০২৩ প্রদান উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৯ ডিসেম্বর সকাল ১০ টায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানটি ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে। বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৩ অনুষ্ঠানে ৫ জন বিশিষ্ট নারীকে বেগম রোকেয়া পদক প্রদান হবে। পদকপ্রাপ্তরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে পদক গ্রহণ করবেন।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) বেগম রোকেয়া দিবস ও বেগম রোকেয়া পদক ২০২৩ প্রদান উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা এ কথা জানান।
এ সময় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভীন, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. শাহেনুর মিয়া, মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পদকপ্রাপ্ত প্রত্যককে আঠারো ক্যারেট মানের পঁচিশ গ্রাম স্বর্ণ নির্মিত একটি পদক, পদকের রেপ্লিকা, চার লাখ টাকার চেক ও সম্মাননাপত্র প্রদান করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, পদক প্রাপ্ত ৫ জন বিশিষ্ট নারী ও তাদের অবদানের ক্ষেত্র হলো, নারী শিক্ষায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী উপচার্য খালেদা একরাম, মরণোত্তর (ঢাকা জেলা)। নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় ডা. হালিদা হানুম আখতার (রংপুর জেলা)। নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কামরুন্নেছা আশরাফ দিনা, মরণোত্তর (নেত্রকোনা জেলা)। নারী জাগরণে উদ্বুদ্ধকরণে নিশাত মজুমদার (লক্ষ্মীপুর জেলা)। পল্লী উন্নয়নে রনিতা বালা (ঠাকুরগাঁও জেলা)।
তিনি বলেন, জাতির পিতা ১৯৭২ সানে সংবিধানে নারীর সমঅধিকার নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশে নারী উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের প্রতিষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেন। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত নারীদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ১৯৭২ সালে নারী পুনর্বাসন বোর্ড গঠন করেন। মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত নারীদের গোপনীয়তা রক্ষার জন্য ভারত, জাপান, জার্মান, ব্রিটেন ও রাশিয়া থেকে ডাক্তার এনে চিকিৎসা করেন। নির্যাতিত মহিলাদের বীরাঙ্গনা উপাধি দিয়ে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেন ও তাদের যুদ্ধ শিশুদের পুনর্বাসন করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার তাদের বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে গেজেট জারি করেছে। নির্যাতিত কন্যাদেরকে বিয়ের ব্যবস্থা করে পারিবার ও সমাজে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেন। বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় নারী শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সমবায়, কৃষি, কুটিরশিল্পসহ বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করেন। নারীদের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষমতায়নের জন্য চাকরিতে ১০ শতাংশ কোটার ব্যবস্থা রাখেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৩০ সালে কর্মস্থলে নারীর অংশগ্রহণ ৫০:৫০ উন্নীত করার ঘোষণা করেছেন। সে অঙ্গীকার বাস্তবায়নে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় ৩৫টি বিভিন্ন ট্রেডে ৭ লাখ নারীকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। শিক্ষা, চাকরি, ব্যবসা ও আত্মকর্মসংস্থান সকল ক্ষেতে নারীর আজ সফল অগ্রযাত্রা। নারীরা দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশে আজ নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বে রোল মডেল। সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় সর্ব শীর্ষে এবং নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বিশ্বে ৭ম।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাণীসহ বিশেষ ক্রোড়পত্র ও স্মরণিকা প্রকাশ করা হবে। বেগম রোকেয়া দিবস ও পদক প্রদান উদযাপন অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। দেশের সব জেলা ও উপজেলায় নারী উন্নয়ন, ক্ষমতায়ন ও অধিকার বিষয়ে প্রচার ও সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আলোচনাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। টেলিভিশন ও রেডিওতে নারীর অধিকার ও সমতা প্রতিষ্ঠায় বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। নারী শিক্ষা, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সচেতনতা বৃদ্ধি করতে ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার বিতরণ ও স্থাপন করা হবে।
Posted ৩:৫০ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩
desharthonity.com | Rina Sristy