নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট
দেশের অর্থনীতির প্রধান বাহন কৃষি। সেই কৃষিকে বেগবান করতে প্রান্তিক পর্যায়ে ঋণ বাড়াতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এক্ষেত্রে বড় ঋণের পরিবর্তে ছোট ঋণে বাড়তি গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। এমনকি কোটি টাকার ঋণের পরিবর্তে ক্ষুদ্র হিসাবধারী কৃষক, মৎস্য চাষি, খামারি এবং ছোট ছোট উদ্যোক্তাদের ঋণের আওতায় আনতে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে যারা এখন পর্যন্ত কৃষি ও পল্লী ঋণের সুবিধা পাননি, তাদের অগ্রাধিকারভিত্তিতে ঋণ বিতরণ করতে তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৫ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক নুরুল আমীন এ নির্দেশ দেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষিঋণ বিভাগের পরিচালক কানিজ ফাতিমা এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকের কৃষিঋণ বিভাগের প্রধানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
একটি সূত্র জানায়, বেসরকারি খাতের ডাচ বাংলা ব্যাংকসহ ডজন-খানেক ব্যাংক কৃষিঋণ বিতরণে বড় গ্রাহকদের ঋণ দিচ্ছে। শুধু ডাচ বাংলা ব্যাংকের বিতরণ করা কৃষিঋণের মধ্যে ৫ জন গ্রাহকের কাছে ৯০ শতাংশের বেশি ঋণ বিতরণ করেছে। কিছু ব্যাংক ক্ষুদ্র কৃষক ও প্রান্তিক গ্রাহককে কৃষিঋণ দিতে অনীহা দেখাচ্ছে। এতে কৃষি ও পল্লী ঋণের লক্ষ্য ব্যাহত হচ্ছে।
বিষয়টি কৃষিঋণ বিভাগের মনিটরিংয়ে উঠে এসেছে। এখান থেকে বের হতে এ বৈঠকে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক পর্যায়ে ঋণ বাড়াতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকগুলোকে বড় ঋণের বদলে ঋণের সীমা কমিয়ে ছোট ঋণ বিতরণে কড়া নির্দেশ দিয়েছে। এরপরও যদি কোনো ব্যাংক নতুন করে বড় ঋণ বিতরণ করে সেসব ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বেসরকারি ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষক পর্যায়ে ঋণ বিতরণে অনেক ব্যাংকের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য ব্যাংকগুলোকে নিজস্ব নেটওয়ার্ক (শাখা, উপশাখা, এজেন্ট ব্যাংকিং, কন্ট্রাক্ট ফার্মিং, দলবদ্ধ ঋণ বিতরণ এবং ব্যাংক-এমএফআই লিংকেজ) ব্যবহার করতে পরামর্শ দিয়েছে। এতে সুদের হার ও চার্জ বেশি পড়ায় বাধ্য হয়ে কিছু ব্যাংক বড় ঋণ দিয়ে থাকে। এতে পরিচালনা খরচ কমে আসে।
চলিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো ১২ হাজার ৩০ কোটি টাকা এবং বেসরকারি ও বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ২২ হাজার ৯৭০ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করবে। গত অর্থবছরে ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা কৃষিঋণের পরিমাণ ছিল ৩২ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা।
Posted ১:৫০ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৩
desharthonity.com | Rina Sristy