নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ২৫ আগস্ট ২০২৩ | প্রিন্ট
অর্ধযুগ পেরিয়েছে; রোহিঙ্গাদের এখনও ফেরানো যায়নি নিজ দেশে। সময়ের সাথে সাথে সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে। একদিকে হুমকি বাড়ছে নিরাপত্তার, অন্যদিকে কমছে অর্থ সাহায্য। এমন কী কমছে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপও। এ অবস্থায় সরকারও বলছে, সহজ হবে না প্রত্যাবাসন। আর বিশ্লেষকরা বলছেন, সংকট নিরসনে বাংলাদেশকে আগ্রাসী হতে হবে কূটনীতিকভাবে।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট। মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সেনাবাহিনীর নির্যাতনের জেরে লাখ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে আসতে শুরু করে বাংলাদেশে। সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গাকে বিনা প্রস্তুতিতে ঠাঁই দেয় বাংলাদেশ। সেই ঘটনার ছয় বছর অতিবাহিত হলো।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা বর্তমানে ১১ লাখের মতো। তবে বেসরকারি সূত্রের মতে এ সংখ্যা ১৫ লাখের কাছাকাছি।
গত ছয় বছরে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরাতে দ্বিপক্ষীয়, ত্রিপক্ষীয় এবং বহুপক্ষীয় — সব ধরনের চেষ্টাতেই বিফল বাংলাদেশ। সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক মহল থেকে প্রস্তাব আসছে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশেই স্থায়ী করতে। এদিকে, অর্ধযুগ পেরোনোর পর সরকারও অনুভব করছে সহজ হবে না রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দেশের কূটনৈতিক পদক্ষেপে ঘাটতি ছিল বেশকিছু। বিশেষ করে ভারত ও জাপানের সহযোগিতা আকর্ষণে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ। সাথে নতুন সংকট হিসেবে ধরা দিয়েছে রোহিঙ্গাদের ভরণ-পোষণে অর্থ জোগাড় করা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কমছে তহবিল। সবশেষ ২০২২ সালে প্রত্যাশার মাত্র ৬২ শতাংশ পূরণ করেছে দাতা দেশগুলো।
মানবিক জায়গা থেকে রোহিঙ্গাদের দেয়া আশ্রয় এখন নিরাপত্তার হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশের জন্য। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, গত কয়েক বছরে বেড়ে গেছে মাদক চোরাচালান; হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদেরও।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলছেন, কোন একটা জনগোষ্ঠী দীর্ঘদিন একটি নির্দিষ্ট এলাকায় বাস করলে সেখানে প্রভাব বিস্তারের সুযোগ থাকে। সেদিক থেকে রোহিঙ্গাদের মতো জনগোষ্ঠী সন্ত্রাসী কার্যক্রম কিংবা মাদক বেচাকেনার সাথে জড়িয়ে যাবে, এটা মোটেও অস্বাভাবিক না।
যদিও কিছু রোহিঙ্গা জনগণকে পাইলট প্রকল্প হিসেবে বাংলাদেশ ফেরাতে চাইলেও পশ্চিমা দেশগুলোর মনোভাবে রয়েছে অসন্তোষ। ফলে আশাব্যঞ্জক কোন ফলাফলের দেখা মিলছে না এখনও।
তবে সাম্প্রতিক মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দুর্বল পরিস্থিতি এবং রোহিঙ্গাদের পক্ষে আন্তর্জাতিক আদালতের অবস্থানকে সংকট সমাধানে আশাব্যঞ্জক হিসেবে দেখা হচ্ছে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদের।
উল্লেখ্য, এ রোহিঙ্গাদের দ্রুত দেশে ফেরানো না গেলে দেশের অর্থনীতি ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
Posted ১:২২ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২৫ আগস্ট ২০২৩
desharthonity.com | munny akter