নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ০৯ জুলাই ২০২৩ | প্রিন্ট
লিফট ও এসকেলেটরকে ‘অত্যাবশ্যক ক্যাপিটাল মেশিনারি’ ক্যাটাগরিতে রেখে আমদানির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত শুল্ক প্রত্যাহার করে আগের শুল্ক করহার বহাল রাখার দাবি জানিয়েছেন এ খাত সংশ্লিষ্টরা।
রোববার (৯ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘বাংলাদেশ এলিভেটর এসকেলেটর অ্যান্ড লিফট ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বেলিয়া)’ ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।
বাংলাদেশ এলিভেটর এসকেলেটর অ্যান্ড লিফট ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এমদাদ উর রহামান এবং সাধারণ সম্পাদক মো. শফিউল আলম উজ্জ্বল মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে বলা হয়, করোনা-পরবর্তী ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিশ্বব্যাপী যুদ্ধবিগ্রহ, মূল্যস্ফীতি, মন্দা, বিভিন্ন দেশে মুদ্রার অবমূল্যায়ন ইত্যাদি কারণে লিফট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো চরম আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। তারপরও গত অর্থবছরে লিফটের ওপরে ৫ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির করা হয়। এতে আমাদানিকাররা আরও বেগতিক অবস্থায় পড়েছেন। গত অর্থবছরে লিফটকে ক্যাপিটাল মেশিনারিজ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়।
বক্তারা বলেন, যার রেশ কাটতে না কাটতেই ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে আবারও ক্যাপিটাল মেশিনারিজ ক্যাটাগরি থেকে অবমুক্ত রেখেই বাণিজ্যিক পণ্য হিসেবে আমদানি পর্যায়ে বিদ্যমান মোট শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সর্বমোট ২৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে এসকেলেটরকে ক্যাপিটাল মেশিনারিজ ক্যাটাগরি থেকে অবমুক্ত করে আমদানিপর্যায়ে বিদ্যমান মোট শুল্ক ১১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সর্বমোট ৪৩ শতাংশ করা হয়।
তারা আরও বলেন, আমরা যারা বাণিজ্যিক আমদানিকারক, তারা বিক্রয়-পর্যায়ে সরবরাহের বিপরীতে ভ্যাট পরিশোধ করে থাকি। সরকার লিফট উৎপাদনকারীদের ২০২৫ সাল পর্যন্ত ভ্যাট মওকুফ ঘোষণা করেছেন। ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে আমদানি শুল্ক ও কর অনুযায়ী- দেশীয় উৎপাদনকারীরা লিফটের যন্ত্রাংশে ১ শতাংশ আমদানি শুল্ক প্রদান করছেন।
‘উৎপাদনকারীরা যন্ত্রাংশ আমদানিতে জাহাজ ভাড়ার সুবিধা, আমদানি করের সুবিধা এবং সরবরাহের বিপরীতে ভ্যাট সুবিধায় সম্পূর্ণ তৈরি লিফট আমদানিকারকদের থেকে ২৫ শতাংশ কম দামে বিক্রি করতে পারেন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে সম্পূর্ণ তৈরি লিফট আমদানি শুল্ক আবারও ১০ শতাংশ বাড়ানোর কারণে সম্পূর্ণ প্রস্তুত আমদানি লিফট ও দেশীয় শিল্পে উৎপাদিত লিফটের দামের পার্থক্য হচ্ছে ৩৭-৪০ শতাংশ, যা যারপরনাই অসম হচ্ছে’ যোগ করেন বক্তারা।
মানববন্ধনে আরও বলা হয়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকারের বিভিন্ন অগ্রাধিকারমূলক প্রকল্পের লিফট ও এসকেলেটরের বর্তমানে চলমান হাতে নেওয়া কার্যাদেশের মূল্য প্রায় ৪০০-৫০০ কোটি টাকা। একইভাবে বেসরকারি খাতে যা ১২০০-১৫০০ কোটি টাকা, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।
তারা বলেন, বিভিন্ন ব্যাংকে ডলার বা ইউরোর মুদ্রার বিনিময়মূল্যের জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা কার্যকরী না থাকায় ডলার বা ইউরোর অনিয়ন্ত্রিত মূল্য এবং ১০০ শতাংশ মার্জিনে এলসি খুলতে এমনিতেই সরবরাহকারী/আমদানিকারকদের নাভিশ্বাস। তার ওপর বাজেটে অতিরিক্ত শুল্ক যেন মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা। এ শিল্পের সুরক্ষার্থে গত বছরের কার্যাদেশের ওপর পূর্বের বাজেটের নিয়মানুযায়ী শুল্ক/কর বহাল রাখতে সরকারের সুবিবেচনার জন্য অনুরোধ করছি।
‘যৌক্তিক ও মানবিক দিক বিবেচনা সাপেক্ষে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা মোতাবেক পদক্ষেপ নিলে বিগত ৫০ বছরের অধিক সময় ধরে অর্জিত সক্ষমতার আলোকে বাংলাদেশকে একটি টেকসই লিফট শিল্প উপহার দেওয়া সম্ভব হবে। যা বাংলাদেশের মাঝারি শিল্প তথা উন্নয়নকে আরও বেগবান করবে। প্রধানমন্ত্রীর স্লোগান ‘গ্রাম হবে শহর’ বাস্তবায়ন এবং সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে অগ্রিম ভূমিকা পালন করবে।’
মানববন্ধন থেকে দাবি করা হয়, মানববাহনের লিফটের আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বাংলাদেশে লিফট স্ট্যান্ডার্ড প্রনয়ন ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠন করা এখন সময়ের দাবি। বেলিয়া সরকারের সঙ্গে একযোগে এ আমদানি নির্ভর সেক্টরের বিকল্পপন্থা উদ্ভাবন, সেফটি এবং স্ট্যান্ডার্ড নীতিমাল্য প্রনয়ণ, নিয়ন্ত্রক সংস্থা প্রণয়ন ইত্যাদি কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণে একযোগে কাজ করতে বদ্ধপরিকর।
Posted ১:০৪ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৯ জুলাই ২০২৩
desharthonity.com | Rina Sristy