নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ১৮ জুন ২০২৩ | প্রিন্ট
নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ঋণ সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
রোববার (১৮ জুন) বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ ব্যাংকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বর) ‘মনিটারি পলিসি স্টেটমেন্ট (এমপিএস)’ প্রকাশ করবেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
অনুষ্ঠানে ডেপুটি গভর্নরসহ বিএফআইইউয়ের প্রধান কর্মকর্তা, চিফ ইকোনমিস্ট, গবেষণা বিভাগের নির্বাহী পরিচালক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা উপস্থিত থাকবেন।বাংলাদেশ ব্যাংক এ তথ্য জানিয়েছে।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় মুদ্রানীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ ঋণ, মুদ্রা সরবরাহ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ, বৈদেশিক সম্পদ কতটুকু বাড়বে বা কমবে এর একটি পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।
নতুন মুদ্রানীতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র আবুল বশর ঢাকা পোস্টকে বলেন, ১৮ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে গভর্নর মুদ্রানীতি ঘোষণা করবেন। এবারের মুদ্রানীতিতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বেশি জোর দেওয়া হবে। মুদ্রানীতিতে মুদ্রার একক বিনিময় হার চালুর বিষয়ে তুলে ধরা হবে। এছাড়া ইন্টারেস্ট রেট নিয়ে নতুন ঘোষণা আসবে; এখন যে ৯ শতাংশের ক্যাব দেওয়া আছে তা তুলে দিয়ে যৌক্তিক পর্যায়ে নেওয়া হবে। তবে এটা কত হবে তা মুদ্রানীতিতে গভর্নর তুলে ধরবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংক ঋণে বিদ্যমান ৯ শতাংশ সুদ হারের সীমা তুলে দিয়ে নতুন ব্যবস্থা চালু করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যা চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে। যার ফলে ব্যাংকের সুদ হার বাড়বে। মুদ্রানীতিতে নতুন সুদহার ব্যবস্থার কথা জানানো হবে। পরিস্থিতি বিবেচনায় নতুন মুদ্রানীতিতে আগামী ছয় মাস ঋণ প্রবাহে সতর্কতার সঙ্গে থাকবে সুদহার বাড়ানোর কৌশল।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণের অন্যতম শর্ত সুদহার বাজারভিত্তিক করা। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক গবেষণা প্রতিবেদনেও সুদহারের সীমা প্রত্যাহার অথবা বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়। তবে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি বাস্তবতায় সুদহার পুরো বাজারভিত্তিক করলে তার সম্ভাব্য চাপ সামাল দেওয়া কঠিন, বিষয়টি আইএমএফকে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঋণের সুদহার পুরোপুরি বাজারভিত্তিক হচ্ছে না। একটা নতুন পদ্ধতি চালু হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নতুন সুদহার ব্যবস্থা হলো ‘স্মার্ট’ তথা শর্ট টার্ম মুভিং এভারেজ রেট। ১৮২ দিন মেয়াদি সরকারি ট্রেজারি বিলের ৬ মাসের গড় সুদের সঙ্গে আপাতত সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ করিডোর বা সীমা দেওয়া থাকবে। বর্তমানে ট্রেজারি বিলের গড় সুদহার ৭ শতাংশের নিচে রয়েছে। এর মানে গ্রাহক পর্যায়ে ঋণের সুদহার হবে ১০ শতাংশের আশপাশে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ব্যাংক ঋণের সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সীমা নির্ধারণ করা হয়।
আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ নির্ধারণ করেছে সরকার। গত বছরেও জিডিপির প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা একই ছিল। গত ১ জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে এ তথ্য জানান।
সংসদে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী অর্থবছরে (২০২৩-২৪) আমরা উচ্চ প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরে আসব এবং ৭ দশমিক ৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারব বলে আশা করছি।’
চলতি অর্থবছরেও জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। তবে সাময়িক হিসেবে ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার কমে ৬ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ হিসাব করা হয়।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, জিডিপির প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকার ক্রমান্বয়ে কৃচ্ছ্রসাধন নীতি থেকে বের হয়ে আসবে। একই সঙ্গে মেগা প্রকল্পসহ প্রবৃদ্ধি বাড়াবে, এমন চলমান ও নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগ করবে।
এ অবস্থায় অর্থমন্ত্রী আশা করছেন, আগামী অর্থবছরে সরকারি বিনিয়োগের পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়ে জিডিপির ৬ দশমিক ৩ শতাংশ হবে। পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে, চলতি বছরে বেসরকারি বিনিয়োগ কমে ২৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ হয়েছে। তবে অর্থমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বলেছেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়ে জিডিপির ২৭ দশমিক ৪ শতাংশ হবে।
এদিকে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে দ্বিতীয়ার্ধে ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ। এর আগের অর্থবছর ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রাক্কলন করেছিল ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। যদিও প্রাক্কলিত হারের চেয়ে লক্ষ্যমাত্রার অর্জন ছিল অনেক কম। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষে তথ্যানুযায়ী, গত এপ্রিলে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির হার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশে নেমেছে।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি, খাদ্যপণ্য ও সারের মূল্য কমে এসেছে। এ ছাড়া দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় ও খাদ্য সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। এসব কারণে আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত থাকবে বলে। তিনি বলেন, আগামী অর্থবছরে বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের কাছাকাছি দাঁড়াবে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সবশেষ তথ্য বলছে, চলতি বছরের মে মাসে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ হয়েছে। যা গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। এছাড়া মে মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৪০ বেসিস পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ২৪ শতাংশে। এপ্রিলে তা ছিল ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
অন্যদিকে, পয়েন্ট টু পয়েন্ট খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতিও এপ্রিলে ৯.৭২ শতাংশ পয়েন্ট থেকে বেড়ে মে মাসে ৯.৯৬ শতাংশ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
আসন্ন বাজেটে মোট ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে (অনুদান ছাড়া) দুই লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। অনুদানসহ এ ঘাটতি দাঁড়ায় দুই লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। বিশাল এ ঘাটতি পূরণে সরকার কোন খাত থেকে কত টাকা ঋণ নেবে তারও একটি ছক তৈরি করেছে।
ছক অনুযায়ী, এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণ নেবে এক লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা এছাড়া বৈদেশিক ঋণ হিসাবে নেবে এক লাখ দুই হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের বাজেটে যা আছে ৯৫ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা।
অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ধার নিতে চায় ব্যাংক খাত থেকে। যার পরিমাণ ১ লাখ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। এরপর সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ ১৮ হাজার কোটি টাকা আর অন্যান্য খাত থেকে আসবে পাঁচ হাজার এক কোটি টাকা নেয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার।
ন
নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ঋণ সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
রোববার (১৮ জুন) বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ ব্যাংকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বর) ‘মনিটারি পলিসি স্টেটমেন্ট (এমপিএস)’ প্রকাশ করবেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
অনুষ্ঠানে ডেপুটি গভর্নরসহ বিএফআইইউয়ের প্রধান কর্মকর্তা, চিফ ইকোনমিস্ট, গবেষণা বিভাগের নির্বাহী পরিচালক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা উপস্থিত থাকবেন।বাংলাদেশ ব্যাংক এ তথ্য জানিয়েছে।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় মুদ্রানীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ ঋণ, মুদ্রা সরবরাহ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ, বৈদেশিক সম্পদ কতটুকু বাড়বে বা কমবে এর একটি পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।
নতুন মুদ্রানীতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র আবুল বশর ঢাকা পোস্টকে বলেন, ১৮ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে গভর্নর মুদ্রানীতি ঘোষণা করবেন। এবারের মুদ্রানীতিতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বেশি জোর দেওয়া হবে। মুদ্রানীতিতে মুদ্রার একক বিনিময় হার চালুর বিষয়ে তুলে ধরা হবে। এছাড়া ইন্টারেস্ট রেট নিয়ে নতুন ঘোষণা আসবে; এখন যে ৯ শতাংশের ক্যাব দেওয়া আছে তা তুলে দিয়ে যৌক্তিক পর্যায়ে নেওয়া হবে। তবে এটা কত হবে তা মুদ্রানীতিতে গভর্নর তুলে ধরবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংক ঋণে বিদ্যমান ৯ শতাংশ সুদ হারের সীমা তুলে দিয়ে নতুন ব্যবস্থা চালু করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যা চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে। যার ফলে ব্যাংকের সুদ হার বাড়বে। মুদ্রানীতিতে নতুন সুদহার ব্যবস্থার কথা জানানো হবে। পরিস্থিতি বিবেচনায় নতুন মুদ্রানীতিতে আগামী ছয় মাস ঋণ প্রবাহে সতর্কতার সঙ্গে থাকবে সুদহার বাড়ানোর কৌশল।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণের অন্যতম শর্ত সুদহার বাজারভিত্তিক করা। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক গবেষণা প্রতিবেদনেও সুদহারের সীমা প্রত্যাহার অথবা বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়। তবে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি বাস্তবতায় সুদহার পুরো বাজারভিত্তিক করলে তার সম্ভাব্য চাপ সামাল দেওয়া কঠিন, বিষয়টি আইএমএফকে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঋণের সুদহার পুরোপুরি বাজারভিত্তিক হচ্ছে না। একটা নতুন পদ্ধতি চালু হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নতুন সুদহার ব্যবস্থা হলো ‘স্মার্ট’ তথা শর্ট টার্ম মুভিং এভারেজ রেট। ১৮২ দিন মেয়াদি সরকারি ট্রেজারি বিলের ৬ মাসের গড় সুদের সঙ্গে আপাতত সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ করিডোর বা সীমা দেওয়া থাকবে। বর্তমানে ট্রেজারি বিলের গড় সুদহার ৭ শতাংশের নিচে রয়েছে। এর মানে গ্রাহক পর্যায়ে ঋণের সুদহার হবে ১০ শতাংশের আশপাশে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ব্যাংক ঋণের সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সীমা নির্ধারণ করা হয়।
আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ নির্ধারণ করেছে সরকার। গত বছরেও জিডিপির প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা একই ছিল। গত ১ জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে এ তথ্য জানান।
সংসদে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী অর্থবছরে (২০২৩-২৪) আমরা উচ্চ প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরে আসব এবং ৭ দশমিক ৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারব বলে আশা করছি।’
চলতি অর্থবছরেও জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। তবে সাময়িক হিসেবে ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার কমে ৬ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ হিসাব করা হয়।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, জিডিপির প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকার ক্রমান্বয়ে কৃচ্ছ্রসাধন নীতি থেকে বের হয়ে আসবে। একই সঙ্গে মেগা প্রকল্পসহ প্রবৃদ্ধি বাড়াবে, এমন চলমান ও নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগ করবে।
এ অবস্থায় অর্থমন্ত্রী আশা করছেন, আগামী অর্থবছরে সরকারি বিনিয়োগের পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়ে জিডিপির ৬ দশমিক ৩ শতাংশ হবে। পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে, চলতি বছরে বেসরকারি বিনিয়োগ কমে ২৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ হয়েছে। তবে অর্থমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বলেছেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়ে জিডিপির ২৭ দশমিক ৪ শতাংশ হবে।
এদিকে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে দ্বিতীয়ার্ধে ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ। এর আগের অর্থবছর ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রাক্কলন করেছিল ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। যদিও প্রাক্কলিত হারের চেয়ে লক্ষ্যমাত্রার অর্জন ছিল অনেক কম। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষে তথ্যানুযায়ী, গত এপ্রিলে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির হার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশে নেমেছে।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি, খাদ্যপণ্য ও সারের মূল্য কমে এসেছে। এ ছাড়া দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় ও খাদ্য সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। এসব কারণে আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত থাকবে বলে। তিনি বলেন, আগামী অর্থবছরে বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের কাছাকাছি দাঁড়াবে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সবশেষ তথ্য বলছে, চলতি বছরের মে মাসে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ হয়েছে। যা গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। এছাড়া মে মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৪০ বেসিস পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ২৪ শতাংশে। এপ্রিলে তা ছিল ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
অন্যদিকে, পয়েন্ট টু পয়েন্ট খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতিও এপ্রিলে ৯.৭২ শতাংশ পয়েন্ট থেকে বেড়ে মে মাসে ৯.৯৬ শতাংশ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
আসন্ন বাজেটে মোট ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে (অনুদান ছাড়া) দুই লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। অনুদানসহ এ ঘাটতি দাঁড়ায় দুই লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। বিশাল এ ঘাটতি পূরণে সরকার কোন খাত থেকে কত টাকা ঋণ নেবে তারও একটি ছক তৈরি করেছে।
ছক অনুযায়ী, এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণ নেবে এক লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা এছাড়া বৈদেশিক ঋণ হিসাবে নেবে এক লাখ দুই হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের বাজেটে যা আছে ৯৫ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা।
অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ধার নিতে চায় ব্যাংক খাত থেকে। যার পরিমাণ ১ লাখ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। এরপর সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ ১৮ হাজার কোটি টাকা আর অন্যান্য খাত থেকে আসবে পাঁচ হাজার এক কোটি টাকা নেয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার।
Posted ১:২৭ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৮ জুন ২০২৩
desharthonity.com | Rina Sristy