নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪ | প্রিন্ট
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি আয়কারী চামড়া শিল্পে কী পরিমাণ ঋণ ও খেলাপি ঋণ রয়েছে তা জানতে চেয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। পাশাপাশি তিনি চামড়া খাত বুড়িগঙ্গা এবং ধলেশ্বরী নদীর কী পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি করেছে সে বিষয়েও জানতে চেয়েছেন।
রোববার (২০ অক্টোবর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ (সিআই) আয়োজিত ‘জলবায়ু অর্থায়নে ন্যায়বিচার ও সমতা: বাংলাদেশ এবং অন্যান্য এলডিসির জন্য জলবায়ু ঋণের ফাঁদের ঝুঁকি’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানতে চান রিজওয়ানা হাসান।
উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, দেশের মানুষের বিস্তর ধৈর্য। তা না হলে ট্যানারি শিল্প কেরানীগঞ্জ থেকে পুরান ঢাকা এবং সেখান থেকে সাভারে স্থানান্তরিত করার পর পরিবেশের ক্ষতি হওয়া সত্ত্বেও তারা ধৈর্য ধরে আছেন। শুধু ব্যবসায়িক চিন্তা নয়, নিজের দেশের সম্পদ নিজেদের রক্ষা করার পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি বলেন, জলবায়ুর সংকট নিরসনে বিদেশি ফান্ড কীভাবে আসছে সেটা নির্ণয় করা দরকার। সেটা অনুদান নাকি ঋণ সেটার আলোচনা অবশ্যই করতে হবে। এটা ঠিক যে শুধু ঋণ নিতে থাকলে জলবায়ু সংকট নিরসনের পাশাপাশি ইকনোমিক ক্রাইসিস তৈরি হতে পারে। উন্নত দেশগুলো বা আল্ট্রা ক্যাপিটালিস্ট এই পৃথিবীতে কতটা সম্ভব সেটাও বিবেচনায় আনতে হবে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, জলবায়ু অর্থায়নে ন্যায়বিচার এবং সমতাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। শুধু তহবিল প্রদান যথেষ্ট নয়। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে সম্পদ (তহবিল) যেন সবচেয়ে দুর্বল সম্প্রদায়ের কাছে পৌঁছায় এবং তাদের জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা গড়ে তোলার ক্ষমতা দেয়। অতি পুঁজিবাদী মডেল প্রকৃত জলবায়ু ন্যায়বিচার এবং সমতাকে বাধাগ্রস্ত করে। আমাদের এ ব্যবস্থার অন্তর্নিহিত স্বার্থের দ্বন্দ্ব গভীরভাবে পরীক্ষা করতে হবে। লাভের চেয়ে দুর্বলদের প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দেওয়া বিকল্প পন্থা অন্বেষণ করতে হবে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৯ সালে বাংলাদেশের জনপ্রতি কোনো জলবায়ু ঋণ ছিল না, সেখানে ২০২২ সালে জনপ্রতি মোট জলবায়ু ঋণ ৭৯.৬১ ডলার বা ৯ হাজার ৪৮৫ টাকায় দাঁড়িয়েছে।
চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের প্রধান নির্বাহী এম জাকির হোসেন খান মূল প্রবন্ধে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন একটি বৈশ্বিক সমস্যা, যাকে ভৌগোলিক সীমারেখায় আবদ্ধ করা সম্ভব নয়। এই পরিবর্তনের প্রভাব দেশের ময়মনসিংহ, গাইবান্ধার কৃষকের ওপর যেমন, ভারতের আসাম-ত্রিপুরা-রাজস্থানের কৃষকের জন্যও একই। এই পরিবর্তন মোকাবিলায় ক্ষুদ্র স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে বৃহত্তর স্বার্থে প্রাকৃতিক অধিকার সুরক্ষায় টেকসই পদক্ষেপ জরুরি।
তিনি বলেন, জলবায়ু অর্থায়নে আমাদের একটা মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে এলডিসিগুলোর জন্য বার্ষিক ৪৮০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন, যার মধ্যে ২০২৫ সাল থেকে অভিযোজন অর্থায়ন ১০০ শতাংশ অনুদান-ভিত্তিক হতে হবে। জলবায়ু কর্মকাণ্ডের জন্য ঋণ মওকুফের বিভিন্ন উদ্ভাবনী ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
Posted ২:১০ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪
desharthonity.com | Rina Sristy