নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ০৪ মে ২০২৪ | প্রিন্ট
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) আয়োজনে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি),) সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল), সেন্ট্রাল কাউন্টার পার্টি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিসিবিএল), মার্চেন্ট ব্যাংক এবং অ্যাসেট ম্যানেজম্যান্ট কোম্পানির শীর্ষ নির্বাহীদের অংশগ্রহণে গাজীপুরের ব্র্যাক সিডিএম এ দুদিন ব্যাপী (মে ২-৩) ফিনান্সিয়াল ডেরিভেটিভস অন এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড প্লাটফর্ম শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে৷
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির কমিশনার মো. আব্দুল হালিম এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিবিএর প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম৷
ডিএসইর মার্কেট ডেভেলপমেন্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. ছামিউল ইসলামের সঞ্চালনায় দুদিন ব্যাপী কর্মশালার শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ডিএসই’ ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান সিপিএ। স্বাগত বক্তব্যে তিনি বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের পণ্য বৈচিত্র্যের জন্য আর্থিক ডেরিভেটিভের উপর অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক এবং সময়োপযোগী কর্মশালার আয়োজন করার সুযোগ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, বিএসইসি ২০ জুন, ২০১৬-এ আর্থিক ডেরিভেটিভস সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করে এবং পরবর্তীতে ২২ মে, ২০১৯-এ রুলস জারি করেছে।
তিনি বলেন, ডিএসইও তার পণ্যের বৈচিত্র্যকরণ আনতে আগ্রহী। আমরা নিয়ম/বিধি প্রণয়নের জন্য বিএসইসির সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছি এবং খুব শীঘ্রই ডেরিভেটিভ মার্কেট শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছি। আর্থিক খাতের ডেরিভেটিস পণ্য বাংলাদেশের জন্য খুবই সময়োপযোগী। ডেরিভেটিভ পণ্যগুলো অত্যন্ত পরিশীলিত পণ্য এবং ঝুঁকি হ্রাসের জন্য একটি কার্যকর হাতিয়ার যা পুঁজিবাজারের তারল্য প্রবাহ এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় অধিকতর দক্ষতা প্রদান করে অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে।
ড. তারেক আরও বলেন, বিশ্বের বেশিরভাগ উন্নত স্টক এক্সচেঞ্জের বিভিন্ন ধরনের ডেরিভেটিভস পণ্য রয়েছে। ডেরিভেটিভ মার্কেটের আকার ইক্যুইটি বাজারের তুলনায় বহুগুণ বেশি। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে দেশী এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য পণ্যের বৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে তার পার্শ্ববতী এক্সচেঞ্জের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য কাজ করছে৷ এছাড়া আরো কিছু আইন, টেকনিক্যাল এবং অবকাঠামো বিষয় সহ বেশ কিছু কাজ করতে হবে। তবে এর বাইরেও আরো গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয় ট্রেনিং এবং আলোচনা যে বিষয়টি আজকে আমরা করছি। যার মাধ্যমে এই পণ্য সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জানতে পারবো। এই ধরনের ট্রেনিং প্রোগ্রাম অব্যাহত থাকবে যাতে করে আমরা ডেরিভেটিবস পণ্য খুব দ্রুত বাজারে চালু করতে পারি। পরে তিনি অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে আজকের কর্মশালায় মূল প্রবন্ধে ডেরিভেটিভস পণ্য এবং বাজারের প্রাথমিক আলোচনা, ফিউচারস ও অপশন্স, ডেরিভেটিভ পণ্যের ট্রেডিং, ক্লিয়ারিং এবং স্যাটেলমেন্ট, ম্যাচিং ইঞ্জিন ভেন্ডর নাসডাক ওএমএক্স-এর কাছ থেকে ডেরিভেটিভস বাজারের প্রযুক্তিগত প্রয়োজনীয়তা, রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্ক, ডেরিভেটিভস ট্রেডিং এর সুযোগ এবং চ্যালেঞ্জ ইত্যাদি বিষয়ে আজকের এই কর্মশালায় আলোচনার ফলশ্রুতিতে যেসকল দিকনির্দেশনা ও ফাইন্ডিংসগুলো আসবে সেগুলো সমাধানের মাধ্যমে ডেরিবেটিভস অন্তভূর্ক্ত করতে পারবো। আপনাদের উপস্থিতি আমাদের এই উদ্যোগকে অনুপ্রাণীত ও উৎসাহিত করেছে৷ আমি আপনাদের সকলকে স্বাগত জানাচ্ছি৷
কর্মশালার উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করেন বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম৷ তিনি বলেন, আমরা যখন কাজ শুরু করি তখন আমাদের এই মার্কেট খুবই ছোট ছিল। সে সময় আন্তর্জাতিক অনেক বড় মার্কেট দেখার সুযোগ হয় তার তুলনায় এই মার্কেট কিছুই ছিল না। তখন ভাবতাম এবং আশা করতাম যে আমাদের পুঁজিবাজার বড় হবে। কিন্তু এখনও বড় হয়নি। বাজার এখনো শিশু অবস্থায় রয়ে গেছে। মার্কেট এই অবস্থা হওয়ার কারণ হচ্ছে, আমাদের মার্কেটে পণ্য কম, ইকুইটি কেন্দ্রিক বাজার। এখানে বিনিয়োগের নতুন কোন ক্ষেত্র নেই এবং নতুন কোন পণ্য নেই। ফলে দেশে দেশী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সমস্যায় পরে। এখন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন মিলে ডেরিভেটিভস পণ্য চালুর উদ্যোগ নিয়েছে তারই অংশ হিসেবে এই ট্রেনিং প্রোগ্রাম। আমরা এই কর্মশালার মাধ্যমে অনেক কিছু শিখতে ও জানতে পারব। যা এই পণ্য চালুকরণে টেকনিক্যাল ও অবকাঠামো তৈরিতে কাজ করবে।
পরে ফিনান্সিয়াল ডেরিভেটিভস অন এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড প্লাটফর্ম এর উপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিএসই’র উপ-মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ভুঁইয়া৷ মূল প্রবন্ধে তিনি ডেরিভেটিবস এর প্রকারভেদ, ডেরিভেটিভ মার্কেটের তাৎপর্য ও প্রভাব, বিশ্বব্যাপী ডেরিভেটিভস মার্কেট বৃদ্ধির কারণ, এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ডেরিভেটিভস-এর বৈশিষ্ট্য, ডেরিভেটিভস মার্কেটে সেটেলমেন্টের ধরণ, ফরোয়ার্ড এবং ফিউচারের মধ্যে পার্থক্য, ফরোয়ার্ড কনট্রাক্টের সীমাবদ্ধতা, ফিউচার কনট্রাক্টের সীমাবদ্ধতা, ফিউচার ট্রেডিংএর বিভিন্ন টার্মিনলজি, ফিউচার কন্ট্রাক্টের স্পেসিফিকেশন, ফিউচার ও অপশনের মধ্যে পার্থক্য, অপশনস ট্রেডিং এর বিভিন্ন টার্মিনোলজি, অপশন ট্রেডিং এর সুবিধা, অপশনের মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি, অপশন কন্ট্রান্টের স্পেসিফিকেশন, অপশন ট্রেডিং এর কৌশল, ডেরিভেটিভস ব্যবহার, হেজিং ও এর প্রকারভেদ, মৌলিক ঝুঁকি, ক্রস হেজ ও এর সাথে যুক্ত ঝুঁকি, হেজিং এর সীমাবদ্ধতা, এক্সচেঞ্জ প্লাটফর্মে ফিউচারস অ্যান্ড অপশনস ট্রেডিংয়ে জড়িত পক্ষসমূহ, ডেরিভেটিভস ট্রেডিং প্রক্রিয়া, ফিউচার ও অপশন-এর জন্য স্টক ও সূচক নির্বাচনের মানদন্ড, বিভিন্ন ধরনের কর্পোরেট অ্যাকশন ব্যবস্থাপনা, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট, মার্জিন ম্যানেজমেন্ট, ইনিশিয়াল মার্জিন, মেইনটেনেন্স মার্জিন ও মার্জিন কল, মার্জিন-এর পেমেন্ট, বিভিন্ন ধরনের ক্লিয়ারিং অ্যান্ড সেটেলমেন্ট, সেটেলমেন্টের প্রক্রিয়া এবং সর্বোপরি এক্সচেঞ্জ ডেরিভেটিভস চালৃকরনে পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে আলোকপাত করেন।
নাসডাক মার্কেটপ্লেস টেকনোলজির হেড অব ট্রেডিং মি. কার্ল স্লেজার প্রযুক্তি কীভাবে ডেরিভেটিভস ট্রেডিং এবং ব্যবসায়িক সুবিধা নিয়ে আসে এবং ডেরিভেটিভস ট্রেডিং এর বাজার ব্যবস্থা এবং অনুশীলন সম্পর্কে আলোকপাত করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স ডিপার্টমেন্টের অধ্যাপক ড. মাহমুদ ওসমান ইমাম ফিউচারস ও অপশনস বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনায় অপশনস এর ট্রেডিং স্ট্রাটেজিং, রিটার্ণ বৃদ্ধির কৌশল, কভার্ড কল, ভ্যালু প্রটেকশন স্ট্রাটেজি, বুল, বিয়ার ও বাটারফ্লাই ট্রেড, লং ও সর্ট স্ট্রাংগেল, অপশন প্রাইসিং মেথডস, ব্লাক-সোলস মডেল, বায়নোমিয়াল ট্রি মডেল, কন্ট্রোল ভ্যারিয়েট টেকনিক, ফিউচার প্রাইসিং, ফিউচার কন্ট্রাকটস, প্রাইসিং ফরোয়ার্ড, স্টক ইনডেক্স, ইনডেক্স আরবিট্রেজ, প্রাইসিং ফরোয়ার্ড বনাম ফিউচারস, লং অ্যান্ড সর্ট পজিশনস, হেজিং প্রিন্সিপাল, শর্ট অ্যান্ড লং হেজ, পারফেক্ট হেজ, বেসিস অ্যান্ড বেসিস রিক্স, হেজ ফরোয়ার্ড বনাম ফিউচারস ও অপটিমাল হেজ রেশিও এর উপর আলোকপাত করেন৷
ফিনান্সিয়াল ডেরিভেটিভস অন এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড প্লাটফর্ম শীর্ষক কর্মশালার বিশেষ অতিথি ডিএসই ব্রোকারস এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম টেকসই পণ্য বৈচিত্র্যে করণে ফিনান্সিয়াল ডেরিভেটিভস এর ভূমিকা বিষয়ে বলেন, দেশের পুঁজিবাজারে পণ্যের ভিন্নতা আনতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো পিছিয়ে রয়েছে। তবে আজকের এ আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে ধন্যবাদ জানাই। এ বিষয়ে ডিএসইকেই এগিয়ে আসতে হবে। কারণ যদি ডিএসই কাজ না করে তাহলে বিএসইসি কিছুই করতে পারবে না। ডিএসইর বর্তমানে যে এমডি রয়েছে তার নেতৃত্বে কর্মকর্তাদের কাজ করার সুযোগ তৈরী করতে হবে। তিনি এর আগে বিএসইসিতে ছিলেন। এ বাজার সম্পর্কে তার অভিজ্ঞতা ও কাজের দক্ষতা আছে। তিনি এখানে কি সমস্যা আছে সেগুলো জানেন। সেক্ষেত্রে তার এই বিষয়গুলো কাজে লাগাতে পারলে আমরা একটি নতুন স্টক এক্সচেঞ্জ দেখব।
তিনি বলেন, পণ্যে ভিন্নতা আনতে অনেক আগে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। সেই জন্য এ বাজারে কোনো মেধাবী থাকে না। কারণ যারা আসে, তারা এখানে কাজ করার মত কোনো নতুন পণ্য পায় না। আমাদের বাজার মূলত ইকুইটি কেন্দ্রিক। আর বর্তমানে বাজারে মাত্র ৪০০ কোম্পানি আছে যেখানে বাংলাদেশে কোম্পানির সংখ্যা ৪০ হাজারের বেশি। আর ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা মাত্র ১৭ লাখ। তাই এ জিনিসগুলো বিএসইসি ও ডিএসইর লক্ষ্য করা উচিত আসলে সমস্যা কোথায় আছে। তাই বাজার ভালো করতে হলে পণ্যে ভিন্নতা আনতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের মার্কেটে বন্ড নিয়ে অনেক আগ থেকে কাজ করা হচ্ছে। কিন্তু বিষয়টা এখনো ভালো করে কার্যকর হয়নি। আর এর অন্যতম কারণ হচ্ছে ট্যাক্স ইস্যু। এ বিষয় নিয়ে আমরা বিএসইসি ও এনবিআর একসাথে বসে সমাধান করার কথা বলে আসছি। এছাড়া সিসিবিএলের পাঁচ বছর হয়ে গেলেও এখনো কাজ শুরু হয়নি। আর সিসিবিএল ছাড়া পণ্যে ভিন্নতা খুবই চ্যালেঞ্জিং বিষয়। বর্তমানে সিসিবিলের সিংহভাগ শেয়ার ডিএসইর কাছে। এছাড়া আরো শেয়ারহোল্ডাররা আছেন। তারা এই বিষয়টিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। এছাড়াও আরো বেশ কিছু বিষয় আছে পণ্যে ভিন্নতা আনতে সেগুলো নিয়ে কাজ করা দরকার।
সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদের মার্কেটে পন্য কম থাকায় কেউ বিনিয়োগ করার সুযোগ পায় না। কেউ যখন শেয়ারে লাভ করে তখন বিক্রি করে টাকা নিয়ে যায়। কারণ তার কাছে বিনিয়োগের নতুন কোনো সুযোগ থাকে না। আজকে যদি নানা ধরনের পণ্য থাকত তাহলে শেয়ারে বিক্রি করে অন্য পণ্য বিনিয়োগ করত। তাই বাজার ভালো রাখতে পণ্য ভিন্নতাল কোনো বিকল্প নেই। তাই এ নিয়ে কাজ শুরু করা উচিত বলে তিনি জানান।
এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড প্লাটফর্ম এ ফিনান্সিয়াল ডেরিভেটিভস এর ক্ষেত্রে বিএসইসি’র ভূমিকা বিষয়ে কর্মশালার প্রধান অতিথি বিএসইসি’র কমিশনার মো. আব্দুল হালিম বলেন, ডেরিভেটিবস নিয়ে আজকের ওয়ার্কশপই শেষ নয়। এটা নিয়ে আরো অনেক প্রোগ্রাম করতে হবে৷ বিশ্বের অনেকে দেশে এ বিষয়ে অনেক আগে থেকে চালু আছে। তাই যারা এ বিষয় নিয়ে কাজ করবেন তারা প্রয়োজনে সে সব দেশ থেকে শিক্ষা নিয়ে আসতে হবে। শুধুই ইকুইটি দিয়ে মার্কেট বড় হবে না। মার্কেট বড় করতে আরও বিভিন্ন ধরনের পণ্য দরকার। সিসিবিএল-এর কিছুটা চ্যালেজ্ঞ রয়েছে৷ ইতোমধ্যে ডেরিভেটিবস নিয়ে কাজ শুরু করেছে এবং সিএসই কমোডেটিজ নিয়ে কাজ করছে৷ সিএসই কমোডেটিজ ২০২৪ সালের অক্টোবর এর মধ্যে চালু করার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন৷
তিনি বলেন, আজকে যারা এখানে এসেছেন শুধু ওয়ার্কশপে আসলাম আর বিভিন্ন বিষয় আলোচনা শুনলাম তা নিয়ে বসে থাকলে হবে না। এটা কিভাবে অতি দ্রুত চালু করা যায় সেই বিষয়ে সব পর্যায়ে কাজ করতে তাই কোনো বিষয় নিয়ে সঠিক পরিকল্পনা করলৈ তা বাস্তবায়ন সম্ভব বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে যেসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তাতে বাজার এ অবস্থায় থাকবে না। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে অনেক ভালো হবে। বাহির থেকে কেউ এসে বাজার ভালো করে দেবে না। এখানে যারা আছে তাঁদেরকেই খুঁজে বের করতে হবে এখানে কি সমস্যা আছে, আর কি কাজ করা যায়। তাহলেই বাজার ভালো হবে। অর্থনীতিতে যে পরিবর্তন হয়েছে সে অনুযায়ী আমাদের রোল পরিবর্তন হওয়া উচিত। ২৫ সালের মধ্যে এই ডেরিভেটিস পণ্য চালু হবে বলে আমি আশাবাদী এরমধ্যে সিসিবিএলও তার কার্যক্রম শুরু করে দিবে৷
তিনি আরো বলেন, গতানুগতিক চিন্তা করলে হবে না। একটু ভিন্নভাবে ভাবতে হবে। বাজারে অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়েছে। শুধু করার জন্য ওয়ার্কশপ করলে হবে না। আপনাদের ভাবতে হবে আমরা এটা করব। সেক্ষেত্রে সিসিবিএলের সমস্যা দেখব না সিসিবিএলের বড় শেয়ারহোল্ডার ডিএসই। প্রয়োজনে তাদের সাথে সমস্যার কথা জানান। দরকার হলে সেগুলো নিয়ে আলাদা ওয়ার্কশপ করেন।
ঢাকা ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ নাফিজ আল তারিক, সিএফএ ট্রেডিং, ক্লিয়ারিং, সেটেলমেন্ট এন্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বিষয়ে বলেন, এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফিন্যান্সিয়াল ডেরিভেটিভস-ট্রেডিং, সেটেলমেন্ট এন্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট শীর্ষক প্রবন্ধে তিনি এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফিন্যান্সিয়াল ডেরিভেটিভস এর বেসিক ফিচার, প্রকারভেদ অধীন প্রোডাক্টসমূহ,ট্রেডিং প্রক্রিয়া, জড়িত পক্ষ সমূহ; এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফিউচার এর বিনিয়োগকারী, ট্রেডিং-এ অংশগ্রহনকারী, ক্লিয়ারিং-এ অংশগ্রহনকারী, স্টক এক্সচেঞ্জ এর রেগুলেটর, সেন্ট্রাল কাউন্টার পার্টির ভূমিকা; এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফিউচার এর ক্লিয়ারিং এন্ড সেটেলমেন্ট ফ্লো; ঝুঁকি সমূহ; ঝুঁকি ব্যাবস্থাপনা; এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফিউচার এর মালয়েশিয়া ও ভারতের উদাহরণ এবং বাংলাদেশ এর জন্য যা প্রয়োজন তা নিয়ে আলোকপাত করেন।
পরে অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান, সিপিএ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স ডিপার্টমেন্টের অধ্যাপক ড. মাহমুদ ওসমান ইমাম৷ ঢাকা ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ নাফিজ আল তারিক, সিএফএ৷ ডিএসই’র উপ-মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ভুঁইয়া৷
পরিশেষে, ডিএসই’র প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা সাত্বিক আহমেদ শাহ সমাপনী বক্তব্যে বলেন, সময়ের পরিবর্তনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সকল ক্ষেএেই পরিবর্ধিত ও পরিবর্তিত হচ্ছে৷ এই পরিবর্তনের অংশ হিসাবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে পণ্য বৈচিএকরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ৷ বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে পণ্য বৈচিএময় করার জন্য এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি ভারসাম্যপূর্ণ পোর্টফোলিও গঠনের জন্য এই মুহূর্তে ডেরিভেটিভস মার্কেটের বিকল্প নেই৷ আজকের এই কর্মশালা আয়োজন করার প্রধান উদ্দেশ্য আর্থিক ডেরিভেটিভস সম্পর্কে জ্ঞান বিতরণ করা এবং এই কর্মশালা থেকে আর্থিক ডেরিভেটিভস সম্পর্কে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে পারা।
Posted ৭:২৭ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৪ মে ২০২৪
desharthonity.com | Rina Sristy