
নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ০৩ মার্চ ২০২৫ | প্রিন্ট
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধানে আজ রোববার (২ মার্চ) আগারগাঁওয়ে বিএসইসি কার্যালয়ে এ অভিযান চালানো হয়। ।
অভিযানকালে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম বিএসইসি থেকে আইপিও অনুমোদন সংক্রান্ত বিষয়ে কোম্পানির আবেদনের তালিকা, তাদের দাখিল করা প্রসপেক্টাস, নিরীক্ষা প্রতিবেদন ও প্রয়োজনীয় অন্যান্য নথিপত্র এবং চূড়ান্ত অনুমোদন তালিকা যাচাই করে।
একইসঙ্গে দুদকের আরেকটি দল বিএসইসিতে বেক্সিমকোর সুকুক ও আইএফআইসি আমার বন্ড এর ব্যাপারে তথ্য ও নথিপত্র সংগ্রহ করতে যায়। এগুলো কারাগারে থাকা শেখ হাসিনার সাবেক বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সাথে সংশ্লিষ্ট।দুদকের জনসংযোগ দপ্তর জানায়, প্রাথমিক পর্যালোচনায় দেখা যায় যে কোম্পানি কর্তৃক দাখিল করা বানোয়াট উপার্জন এবং সম্পদ বিবরণী ও উইন্ডো ড্রেসিংয়ের মাধ্যমে তৈরি করা ব্যালেন্স শিটের বিপরীতে আইপিও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে অনেকক্ষেত্রে ডিএসইর সুপারিশ ও পর্যবেক্ষণ বিবেচনা করা হয়নি, যা ব্যাপক অনিয়মের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে।
এছাড়া প্রাইভেট প্লেসমেন্ট জালিয়াতি ও বাণিজ্য, অধিকমূল্যে শেয়ার প্রাইস নিয়ে মার্কেটে প্রবেশ ও অল্প সময়ে শেয়ার বিক্রি, প্রাইসের দ্রুত অবনমনের পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসি যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানায় দুদক। দুর্বল কোম্পানিগুলোকে অবৈধভাবে অনুমোদন দেওয়ায় শেয়ারবাজারে প্রবেশের অল্পদিনেই তাদেরকে নিম্ন কর্মক্ষমতা কোম্পানি হিসেবে ‘জেড’ ক্যাটাগরিভুক্ত করা হয়েছে।
সংস্থাটি আরও জানায়, জালিয়াতির মাধ্যমে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ড কর্তৃক প্রস্তুত করা উইন্ডো ব্যালেন্স শিট ও বানোয়াট উপার্জন রিপোর্টের ভিত্তিতে আইপিও অনুমোদন করা হয়। এছাড়া ইস্যু ম্যানেজারের তৈরি করা অধিমূল্যায়িত কোম্পানি প্রোফাইলের পরিপ্রেক্ষিতে অনিয়মের আশ্রয়ে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন কর্তৃক আইপিওর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়।
দুদক জানায়, অভিযানকালে পাওয়া অনিয়মগুলোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে তাদের এনফোর্সমেন্ট টিম।
উল্লেখ, পতিত আওয়ামীলীগ সরকারের ১৫ বছরের শাসনামলে দেশের পুঁজিবাজারে পরিকল্পিতভাবে লুটপাট করা হয় বলে আভিযোগ আছে। এ সময়ে অনেক দুর্বল মৌলের কোম্পানি, এমনকি উৎপাদন বন্ধ থাকা কোম্পানিকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে বাজার থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়। অন্যদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান একাই বেক্সিমকো গ্রীন সুকুক ও আমার বন্ড নামের বন্ড ইস্যু করে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা বাজার থেকে উঠিয়ে নেন। এছাড়া নানা ধরনের কারসাজির মাধ্যমে একটি চক্র সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলেও অভিযোগ আছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির প্রশ্রয় ও যোগসাজসেই এমন লাগামহীন অনিয়ম-দুর্ণীতি হয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এসব এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতেই আজ দুদক বিএসইসিতে এই অভিযান চালিয়েছে।
Posted ১:৪৮ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৩ মার্চ ২০২৫
desharthonity.com | Rina Sristy