বুধবার ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নারী শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শনিবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট

নারী শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি

জীবনযাত্রার মান নিশ্চিত করতে নারী শ্রমিকদের সঙ্গতিপূর্ণ মজুরি নির্ধারণে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) প্রেস ক্লাবের সামনে সমমনা সংগঠনের পক্ষে নারীপক্ষ কর্তৃক আয়োজিত এক অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ, কাজের পরিবেশ, মজুরি, পদোন্নতি ও পেনশন সুবিধাসহ ইত্যাদি ক্ষেত্রেও বৈষম্য রয়েছে।

তারা বলেন, খুব কমসংখ্যক নারী পুরুষের সমান সুযোগ-সুবিধাসহ কর্মসংস্থানের সুযোগ পান এবং একটি বড় সংখ্যক নারী শ্রেণি গৃহ শ্রমিক হিসেবে যুক্ত থাকেন। তাদের মজুরি কম, কর্মপরিবেশ নিম্নমানের, অনিরাপদ এবং অনিশ্চিত। এছাড়া অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নারীর প্রতি বৈষম্য ও নারীর ওপর সহিংসতা তার সামগ্রিক অবস্থা ও অবস্থানকে প্রভাবিত করে। সম্পদ, মঞ্জুরি ও অন্যান্য অর্থনৈতিক উপাদানের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা না হলে নারীরা স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না।

তারা আরও বলেন, বর্তমান বাজারে খাদ্য ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় শ্রমিকেরা দিশেহারা। ২০১৮-১৯ সালে মজুরি বৃদ্ধির ঘোষনার পর গত কয়েক বছরে বাড়ি ভাড়া, সন্তানের লেখাপড়ার খরচ, গ্যাস-বিদ্যুৎ বিলসহ জীবনযাত্রার খরচ এতই বেড়েছে যে, বর্তমান মজুরি দিয়ে পোশাক শ্রমিকের বেঁচে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই নারী শ্রমিক পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হিসেবে ভূমিকা পালন করে থাকে। উপরন্তু, নারী শ্রমিকেরা তাদের নিজ পরিবার এবং গ্রামের বাড়িসহ উভয় ক্ষেত্রেই অর্থ যোগানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

গত বছর সিপিডি-এর এক গবেষণায় দেখা যায়, চার সদস্যের পরিবারের মাসিক খাবার খরচ হয় ২১ হাজার টাকার বেশি এবং সার্বিক খরচ ৪৭ হাজার ৭৮১ টাকা। সুতরাং দেশিয় ও আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতি, মালিকদের সামর্থ্য এবং কোনো রকম সঞ্চয় না রেখে কেবলমাত্র খেয়ে পরে বেঁচে থাকার বিবেচনায় শ্রমিকের মজুরি ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণের বিকল্প নেই।

তাদের দাবিগুলো হলো-

১. অবিলম্বে পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম সঙ্গতিপূর্ণ শ্রমের মজুরি ঘোষণা করতে হবে। ৬৫% বেসিক নিশ্চিত করতে হবে। মজুরি নির্ধারণ না হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ৬০% মহার্ঘভাতা দিতে হবে।

২. সব গ্রেডে জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে সংগতি রেখে মজুরি বৃদ্ধির সুযোগ রাখতে হবে।

৩. গ্রেড বৈষম্য দূর করতে মজুরি কাঠামো পরিবর্তন করতে হবে, বর্তমানে প্রচলিত ৭টি গ্রেডের বদলে ৫টি গ্রেড করতে হবে।

৪. সোয়েটার ও পিস রেটে কর্মরত শ্রমিকদের কাজের আগে মজুরি নির্ধারণ ও ডাল সিজনে পূর্ণ বেসিক দিতে হবে। সোয়েটারে ৩টি শিফট ও ওভারটাইম নিশ্চিত করতে হবে।

৫. ইপিজেড-ইপিজেডের বাইরে সব কারখানায় সমান হারে মজুরি বৃদ্ধি ও মূল মজুরির ১০% ইনক্রিমেন্ট দিতে হবে। বাধ্যতামূলক অংশীদারিত্বমূলক প্রভিডেন্ট ফান্ড চালু করতে হবে।

৬. তৈরি পোশাকশিল্পে যেহেতু বেশীর ভাগ নারী কর্মরত রয়েছে, তাই মজুরি বোর্ডে নারীর অংশগ্রহণ ও সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়ায় নারী সদস্য অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক খাদিজা আক্তার, ফেডারেশন অব গার্মেন্টস ওয়ার্কার্সের সাধারণ সম্পাদক চায়না রহমান, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভা প্রধান তসলিমা আক্তার, নারীপক্ষ সমন্বয়কারীর সদস্য মাহীন সুলতান প্রমুখ।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১:৩০ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

desharthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

ক্যালেন্ডার

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭৩০
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
গোলাম ফারুক
Contact

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।

Phone: 01759881611

E-mail: editor@desharthonity.com