নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধির হার কমে দাঁড়াল ১ দশমিক ৩০ শতাংশে। মূলত পোশাক রপ্তানি কমে যাওয়ায় প্রবৃদ্ধি হারের এই নিম্নমুখী অবস্থান উঠে এসেছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদন বলছে, জুলাই-নভেম্বর এ পাঁচ মাসে ২২ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। বিপরীতে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৪ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলারের। মূলত নভেম্বর মাসে দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেছে ৭ শতাংশ। এতে পুরো রপ্তানিতে ঝাঁকুনি লেগেছে।
সোমবার (৪ ডিসেম্বর) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থ-বছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ১৮ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলারের। যেখানে এই সময়ে লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ২০ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলারের। বিপরীতে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রবৃদ্ধির হার নেমেছে ২ দশমিক ৭৫ শতাংশে। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ কম অর্জিত হয়েছে।
নভেম্বরে প্রবৃদ্ধির হার আগের দুই মাসের চেয়ে কমেছে কয়েকগুণ। আগের মাস অক্টোবরে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ এবং সেপ্টেম্বরে ছিল ১৩ শতাংশ।
শুধু নভেম্বর মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার। অর্জিত হয়েছে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ নভেম্বর মাসে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৮ দশমিক ৫১ শতাংশ কম অর্জিত হয়েছে। একক মাসের হিসাবে এটা আগের বছরের চেয়ে ৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ কম। আগের বছরের নভেম্বর মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছিল ৪ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলারের।
দেশে তৈরি পোশাক- রপ্তানি আয়ের অন্যতম প্রধান খাত হওয়ায় পোশাক রপ্তানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মোট রপ্তানি আয়ও নিম্নমুখী।
বিবিএস বলছে, নভেম্বর পর্যন্ত ৫ মাসে নিট পোশাকের রপ্তানি হয়েছে ১০ দশমিক ৯৯ বিলিয়ন ডলারের, যা আগের বছরের চেয়ে ৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি। এরমধ্যে ওভেন পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৭ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলারের। যা আগের বছরের চেয়ে সাড়ে ৪ শতাংশ কম। ওভেন পোশাক রপ্তানি আগের তুলনায় কমে যাওয়ায় এর প্রভাব দেশের তৈরি পোশাক খাত তথা পুরো রপ্তানি খাতকে বড় ধরনের ঝাঁকুনি দিয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি জুলাই থেকে সেপ্টম্বর পর্যন্ত অব্যহত ছিল। কিন্তু অক্টোবর থেকে সেটা কমতে থাকে।
পোশাক শিল্পের শ্রমিক অসন্তোষ ও বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির কারণে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেছে বলে মনে করছেন তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল।
গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। বিশেষ করে তৈরি পোশাকের প্রধান বাজারগুলোতে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। এতে মানুষ কেনাকাটা কমিয়ে দিয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে তৈরি পোশাকের ওপর। এ ছাড়া গত মাসে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে অনেকে সময়মতো রপ্তানি করতে পারেনি। রপ্তানি আয় কমে যাওয়ার ক্ষেত্রে এটিও অন্যতম বড় কারণ।
এছাড়া অন্যান্য রপ্তানি পণ্যের মধ্যে হিমায়িত মৎস্য রপ্তানি হয়েছে ১৭৫ দশমিক ১৯ মিলিয়ন ডলারের; ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬ শতাংশ। ৪২০ দশমিক ৫৯ মিলিয়ন ডলারের কৃষি ও কৃষিজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে; প্রবৃদ্ধি কমেছে প্রায় ৮৯ শতাংশ।
চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি কমেছে ২০ দশমিক ৫৫ শতাংশ; নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসে রপ্তানির পরিমাণ ৪২৭ মিলিয়ন ডলার।
এক সময়ের প্রধান রপ্তানি পণ্য সোনালী আঁশ পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি কমেছে ১১ শতাংশ; চলতি অর্থ বছরের নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসে রপ্তানি হয়েছে ৩৬১ দশমিক ৯১ মিলিয়ন ডলারের।
হোম টেক্সটাইল রপ্তানি হয়েছে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের; ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪২ দশমিক ২৭ শতাংশ। প্রকৌশল পণ্য রপ্তানি হয়েছে ২০০ দশমিক ৮২ মিলিয়ন ডলারের; ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশ। জাহাজ রপ্তানি কমেছে প্রায় শতভাগ।
Posted ১:৩৪ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩
desharthonity.com | Rina Sristy