নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ১৫ আগস্ট ২০২৩ | প্রিন্ট
বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে সাইড লাইনে রেখে দেওয়া হয়েছে মন্তব্য করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু বলেছেন, বাইরের শক্তি পুঁজিবাজার দাঁড় করিয়ে দেবে না। আমাদের পুঁজিবাজার আমাদেরকেই দাঁড় করাতে হবে। ডিএসইতে দক্ষ নেতৃত্ব লাগবে।
সোমবার (১৪ আগস্ট) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা ও ১৫ আগস্টের সব শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে রাজধানীর নিকুঞ্জে ডিএসই আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, উন্নত দেশে পুঁজিবাজার অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। কিন্তু আমাদের দেশে পুঁজিবাজারকে সাইড লাইনে রেখে দেওয়া হয়েছে। বাইরের শক্তি আমাদের পুঁজিবাজার দাঁড় করিয়ে দেবে না। আমাদের পুঁজিবাজার আমাদেরকেই দাঁড় করাতে হবে।
তিনি বলেন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ পুঁজিবাজারের মূল কর্ণধার। এজন্য আমরা সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চাই। তাহলে দেশের পুঁজিবাজার এগিয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে পুঁজিবাজারকে এগিয়ে নিতে হবে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে এটুকু আশ্বাস দিতে পারি, আমরা আপনাদের সেবা দিতেই এখানে বসে আছি। আমরা সবসময় আপনাদের কথা ভাবি। একদিন-দুদিনে তো আমরা আর কিছু করতে পারবো না, কিন্তু আমরা সবসময় আপনাদের জন্য আপনাদের পাশে নিয়ে কাজ করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, আমরা এখানে এসেছি দায়িত্ব পালন করতে। এখান থেকে কী পেলাম সেটা বড় বিষয় না। আজ আমাদের পুঁজিবাজার পিছিয়ে থাকার অনেকগুলো কারণ আছে। উন্নত দেশগুলোতে পুঁজিবাজারের ওপর অর্থনীতি নির্ভর করে। তাই আমি বিশ্বাস করি, উন্নত দেশের মতো যে অর্থনীতির স্বপ্ন প্রধানমন্ত্রী দেখছেন, সেখানে পুঁজিবাজারকে নিয়েই তিনি অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় কথা ভাবছেন।
ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের মাটিতে বঙ্গবন্ধুর মতো নেতৃত্ব বিরল। তার মতো শক্তিশালী কণ্ঠ, তার মতো শক্তিশালী নেতৃত্ব, এমন আর বাংলাদেশের মাটিতে আমি দ্বিতীয়টি দেখিনি। এদেশে সবচেয়ে বড় অভাব দেশপ্রেম ও সততার। একটা দেশের মানুষের মাঝে যদি দেশপ্রেম থাকে তাহলে নিজে থেকেই তার মাঝে সততা চলে আসবে। আজ এই স্বদেশ প্রেমের ঘাটতির কারণেই আমরা বঙ্গবন্ধুকে হারিয়েছি।
হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু বলেন, তবুও আমরা সৌভাগ্যক্রমে আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে পেয়েছি। বঙ্গবন্ধু আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাঝে আমি যে মিল খুঁজে পাই তা হলো দেশপ্রেম, প্রচণ্ড দেশপ্রেম। বঙ্গবন্ধু আর প্রধানমন্ত্রী দুজনেরই জীবনযাপন খুবই স্বাভাবিক। তাদের দুজনেরই মনে বিন্দুমাত্র লোভ নেই।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সব সিদ্ধান্ত দেশের মানুষ আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করছেন। দেশের মানুষ চায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আরও সামনে এগিয়ে যাক। কারণ দেশের মানুষ বিশ্বাস করেন বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার যে স্বপ্ন তা কেবল শেখ হাসিনার মাধ্যমেই বাস্তবায়ন সম্ভব।
ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের (সিএমএসএফ) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেন, আমাদের প্রত্যেকের হৃদয়েই বঙ্গবন্ধুর জন্য একটি স্থান রয়েছে। বিদেশে আমি যখনই গিয়েছি, তখনই দেখেছি বাংলাদেশ শুনলেই সবাই বলতো শেখ মুজিবুর রহমানের কথা। বাংলাদেশ মানেই যেন শেখ মুজিবুর রহমান।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের পর দেশের অবকাঠামো যখন ধ্বংসপ্রাপ্ত ছিল, তখন যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশের সর্বহারা ২০ লাখ মানুষের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা ছিল বিশাল চ্যালেঞ্জ, এর মাঝেও বঙ্গবন্ধু পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা করলেন। ওনার নেতৃত্বে আমরা সংবিধান পেলাম, পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা পেলাম। আর দেশের আজকের যত পরিকল্পনা সব পরিকল্পনার বীজ তখনই বুনেছিলেন বঙ্গবন্ধু।
তিনি বলেন, ববঙ্গবন্ধুর শাসনামলে নমিনাল জিডিপি ২৮ শতাংশ হারে বেড়েছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যা ৬ শতাংশে নেমে আসে। আমরা অনেক ভাগ্যবান ওনার দুই কন্যা ভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন। দেশে ফিরে শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করলেন, সেই থেকে আমরা আবারও অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়ন করেছি, বিদ্যুৎ খাতের চরম সংকট থেকে তিনি জাতিকে মুক্ত করলেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা আগামী ১০০ বছরের ডেল্টা প্ল্যান পর্যন্ত করার চিন্তা করছি। এটা তখনই সম্ভব, যখন দেশের স্বাধীনতার পক্ষের রাজনৈতিক শক্তি দেশ শাসন করে। আমরা আমাদের জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মৃতিকে তখনই সম্মান দেখাতে পারবো, যখন আমরা দুর্নীতিকে পরাস্ত করে, স্বাধীনতার চেতনাকে জাগ্রত করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।
ডিএসইর সাবেক চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান বলেন, আমাদের দেশে অনেক নেতা ছিলেন, ভবিষ্যতেও হবেন। এ নেতাদের মাঝে বঙ্গবন্ধুকে আলাদাভাবে বঙ্গবন্ধু করার কারণ ওনার আগে আর কোনো নেতা একা পুরো বাঙালিকে কোনো একটি বিষয় নিয়ে ঐক্যবদ্ধ করতে পারেননি। বঙ্গবন্ধুর এ বৈশিষ্ট্যের কারণেই আজ আমরা স্বাধীন হতে পেরেছি।
প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, আজকের বাংলাদেশে যেসব উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে, তার রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হলেও এর ভিত্তি প্রস্তর করে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। তার (বঙ্গবন্ধু) হত্যার ২১ বছর পর (১৯৯৬ সাল) শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসেন। এরপর বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু করেন। প্রকাশ্যে হত্যাকারীদের বিচার কার্য নিশ্চিত করেন। কিন্তু এ হত্যাকাণ্ডের পেছনের চক্রান্তকারীরা ছিল ধরাছোয়ার বাইরে। তাদের খুঁজে বের করতে সরকার কাজ করছে। শুনেছি এরই মধ্যে এ বিষয়ে একটি কমিটি গঠন হয়েছে। শিগগির এসব চক্রান্তকারীদের নাম বেরিয়ে আসবে। দৃষ্টান্তমূলক বিচারও হবে।
ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বলেন, ১৯৭৫ এ যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে তারা ভেবেছিলেন ব্যক্তি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার মধ্যদিয়েই তার স্বপ্নের অবসান ঘটবে, তার আশার অবসান ঘটবে। কিন্তু আসলে সেটি ঘটেনি। আজ বঙ্গবন্ধু নেই, কিন্তু তার যে স্বপ্ন, তার যে আদর্শ, তার যে চেতনা তা সঞ্চারিত হয়েছে বাঙালি জাতির মধ্যেই। যার ফলেই ১৯৭১ এর যুদ্ধ বিধ্বস্ত এ দেশ আজ সমৃদ্ধির দ্বারপ্রান্তে।
তিনি বলেন, যদি ১৯৭৫ এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে দেশের অগ্রযাত্রাকে লাইনচ্যুত করা না হতো তবে দেশ আজ বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে আরও এগিয়ে যেত।
ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মৃধা বলেন, দেশের অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে ভিশনারি নেতৃত্ব এবং ১৯৭১ এ অর্জিত স্বাধীনতার জন্য। জাপানিজরা গবেষণা করে দেখেছে বাংলাদেশ ভবিষ্যতের বিজনেসের হাব। তারা গবেষণা করে দেখেছেন বাংলাদেশ সামনে অনেক এগিয়ে যাবে। জাপানিজরা এরই মধ্যে কক্সবাজার জোনে অনেক ধরণের বিনিয়োগ করেছেন।
Posted ১:৪৬ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৫ আগস্ট ২০২৩
desharthonity.com | Rina Sristy