নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট
করোনা মহামারির ঘরবন্দি সময়ে দেশে ই-কমার্স, এফ-কমার্সসহ অনলাইন ব্যবসার ব্যাপক বিস্তার হয়। সময় ও শ্রম বাঁচাতে মানুষও এতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। কমবেশি সব শ্রেণির মানুষ অনলাইন কেনাকাটায় অভ্যস্ত হলেও ব্যাংকের কার্ডধারীদের মধ্যে অনলইনে কেনাকাটার প্রবণতা অনেক বেড়েছে। কার্ড থেকে পেমেন্ট নানা ছাড়, উপহার আর নিরাপদ পেমেন্টের নিশ্চিতের কারণে এই প্রবণতা বেড়েছে।
২০২২ সালের মার্চ মাস থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ই-কমার্সে কার্ডে লেনদেন হয়েছে ১২ হাজার ৫৮১ কোটি টাকা। যা এর আগের একই সময়ের তুলনায় ২ হাজার ৯৬ কোটি টাকা বেশি।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের মার্চ থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি সময়ে অনলাইন কেনাকাটায় ১০ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকার লেনদেন হয়। এরপরের বছরের একইসময়ে লেনদেন হয় ১২ হাজার ৫৮১ কোটি টাকা। অর্থাৎ এসময় কার্ডে অনলাইন কেনকাটায় লেনদেন বেড়েছে ২ হাজার ৯৬ কোটি টাকা।
করোনার সময়ে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হয় ই-কমার্স। তবে ২০২১ সাল থেকে ইভ্যালি, ধামাকা শপিং, ই-অরেঞ্জ ও কিউকমের মতো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতারণার বিষয়টি সামনে আসতে থাকে। এতে এই খাত থেকে আস্থা হারান গ্রাহকরা। কিন্তু সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগে আস্থা ফিরতে শুরু করে খাতটিতে। এর ফলে ই-কমার্সে কেনাবেচা বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ই-কমার্সে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৭২ কোটি টাকা। ২০২২ সালের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৭৭২ কোটি টাকা। সে হিসাবে বছরের ব্যবধানে ই-কমার্সে লেনদেন বেড়েছে ৩০০ কোটি টাকা। আর ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই লেনদেনের পরিমাণ ছিল মাত্র ২৪৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ তিন বছরের ব্যবধানে ই-কমার্সে লেনদেন বেড়েছে ৮২৫ কোটি টাকা।
এদিকে ই-কমার্স খাতে ব্যাপক অনিয়মের তথ্য বেরিয়ে এলে এই খাতে গ্রাহকদের আস্থাহীনতা তৈরি হয়। অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অগ্রিম টাকা নিয়ে দীর্ঘদিনেও পণ্য বা সেবা সরবরাহ করছে না। এ নিয়ে ২০২১ সালের জুনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটি নির্দেশিকা জারি করে। বাংলাদেশ ব্যাংক ওই নির্দেশনার আলোকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পরিশোধ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকের কাছ থেকে সংগ্রহ করা অর্থ নিজস্ব সেটেলমেন্ট হিসেবে ধারণ করবে। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান পণ্য সরবরাহের পর দাম পাবে। লেনদেন নিষ্পত্তিতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ব্যাংক, এমএফএস বা ই-ওয়ালেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান কাজ করতে পারবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২১ সালের জুনে ই-কমার্সে লেনদেন বেড়ে রেকর্ড ১ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা হয়েছিল। কিন্তু ই-কমার্স প্রতারণার প্রভাবে এক মাসের ব্যবধানে তা কমে দাঁড়ায় ৭৪২ কোটি টাকায়। তবে সরকারের ডিজিটাল কমার্স আইন ২০২১ প্রণয়নের পর গত বছরের এপ্রিলে আবার হাজার কোটির মাইলফলক স্পর্শ করে এই খাতের বেচা-কেনা। চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি) ২ হাজার ২৫১ কোটি টাকার লেনদেন হয়।
Posted ৮:১৯ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৩
desharthonity.com | Rina Sristy