সোমবার ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ৩ পরামর্শ আইএমএফের, বাড়বে রিজার্ভ

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট

অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ৩ পরামর্শ আইএমএফের, বাড়বে রিজার্ভ

 

অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করতে এবং সামনের দিকে এগিয়ে নিতে তিন দফা সুপারিশ করেছে আইএমএফ। আর চলমান সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে পারলে আগামী দিনে রিজার্ভ বাড়তে শুরু করবে। ফলে চলতি অর্থবছরের শেষ নাগাদ রিজার্ভ চার মাসের আমদানি ব্যয়ের সমান হতে পারে।

আইএমএফের সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে-মুদ্রানীতিকে আরও কঠোর ও সংস্কার করা, ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হারকে আরও নমনীয় করা এবং নিরপেক্ষ রাজস্ব নীতি অনুসরণ করতে হবে।

আইএমএফ-এর ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ বাবদ ৬৮ কোটি ২০ লাখ ডলার ছাড় করার প্রস্তাব অনুমোদনের পর সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদ এসব সুপারিশ করেছে।

বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) প্রতিবেদনটি আইএমএফর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়।

জানুয়ারিতে আইএমএফ’র নির্বাহী পর্ষদ বাংলাদেশের অনুকূলে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। ১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ প্রথম কিস্তি বাবদ ৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার পায়। দ্বিতীয় কিস্তি বাবদ ৬৮ কোটি ২০ লাখ ডলার ছাড় করার প্রস্তাব মঙ্গলবার আইএমএফ-এর নির্বাহী বোর্ড অনুমোদন করেছে।

আইএমএফ’র প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একাধিক ধাক্কা লেগেছে। এর প্রভাবে অর্থনীতি বহুপাক্ষিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সামনে এগোতে হচ্ছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার করতে তিন দফা পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রমে সহায়ক হবে।

এক.
মুদ্রানীতিকে আরও সংকোচনমুখী ও সংস্কার করতে হবে। একইভাবে এ প্রক্রিয়ায় সতর্ক থাকতে হবে।

দুই.
সহায়ক ও নিরপেক্ষ রাজস্ব নীতি অনুসরণ করতে হবে।

তিন.
ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হারকে আরও উন্মুক্ত করতে হবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আমদানিতে কঠোরতা আরোপ করার ফলে আমদানি ব্যয় কমেছে। গৃহীত পদক্ষেপের ফলে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় কিছুটা বাড়তে শুরু করেছে। এতে চলতি হিসাবের ঘাটতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ফলে আগামী দিনে রিজার্ভ বাড়তে শুরু করবে।

চলতি অর্থবছরের শেষ নাগাদ রিজার্ভ চার মাসের আমদানি ব্যয়ের সমান হতে পারে। একই সঙ্গে মূল্যস্ফীতির হার কমে আসবে। জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ৬ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের বৃত্ত অতিক্রম করে ৭ শতাংশের বৃত্তে প্রবেশ করবে।

এতে বলা হয়, মুদ্রানীতিতে আরও সংকোচনমুখী করলে মূল্যস্ফীতির হার কমবে। একই সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতির প্রভাব জোরদার হবে। ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার ধাপে ধাপে নমনীয় করলে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়াতে সহায়ক হবে। এতে ডলারের প্রবাহ বাড়বে। অর্থনীতিতে বহুপাক্ষিক ধাক্কা মোকাবিলায় এটি জরুরি বলে মনে করে আইএমএফ।

চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের ৬ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা কমতির দিকে থাকলেও রপ্তানি ঘুরে দাঁড়াবে বলে মনে করছে সংস্থাটি।

সংস্থাটির মতে, অর্থনৈতিক মন্দায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া দুর্বল শ্রেণির জন্য এখন সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ব্যয় বৃদ্ধি ও প্রবৃদ্ধিসহায়ক বিনিয়োগ বাড়ানো জরুরি। একই সঙ্গে করনীতি সংশোধন ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার মাধ্যমে কর-রাজস্ব বৃদ্ধিতে জোর দিতে হবে। ভর্তুকির যৌক্তিকীকরণ, ব্যয় করার সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং আরও দক্ষতার সঙ্গে আর্থিক ঝুঁকি মোকাবিলায় গুরুত্ব দিয়েছে সংস্থাটি।

দেশের অর্থনীতিতে চাহিদা বাড়ছে। এতে অর্থায়নের চাহিদাও বেশি। এ কারণে আর্থিক খাতের সংস্কার জরুরি। ব্যাংকিং খাতের ঝুঁকি কমাতে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ কমানোর পাশাপাশি মূলধন পুনরুদ্ধারে বিশেষ কৌশল প্রণয়ন করতে বলেছে সংস্থাটি।

আইএমএফ পর্ষদ এ বিষয়ে একমত হয়েছে যে, ব্যাংক খাতের তদারকি ও নিয়ন্ত্রণ কাঠামো জোরদার করা, শাসনব্যবস্থার উন্নতি ও শেয়ারবাজারের উন্নয়ন করা গেলে আর্থিক খাতের দক্ষতা বাড়বে এবং উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থায়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এ খাতে তারা জোর দিতে বলেছে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১:০৪ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩

desharthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

ক্যালেন্ডার

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭৩০
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
গোলাম ফারুক
Contact

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।

Phone: 01759881611

E-mail: editor@desharthonity.com